বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল আলোচনা কর
বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল আলোচনা কর |
বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল আলোচনা কর
- অথবা, বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল কি ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাটদের উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা এবং সুষ্ঠু বাণিজ্য নীতি না থাকায় ইংরেজরা এদেশে বাণিজ্য করার অনুমতিসহ রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে।
তারা বাংলার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার সাথে ষড়যন্ত্র করে পলাশির যুদ্ধে তাকে পরাজিত করে । এরপর মীর কাসিমের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব বাধে এবং সে দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত রূপ হলো ১৭৬৪ সালের ঐতিহাসিক বক্সারের যুদ্ধ । নিম্নে বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল তুলে ধরা হলো :
→ বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল : নিম্নে বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল তুলে ধরা হলো :
১. ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা : পলাশির যুদ্ধে সিরাজ-উদ- দৌলার পরাজয়ের ফলে ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হয়েছিল। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ করে তারা এদেশের শাসনদণ্ড হাতে নিয়ে নেয়।
২. উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা : বক্সারের যুদ্ধের ফলে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। রবার্ট ক্লাইভ তখন লর্ড হিসেবে গভর্নর হয়ে আসেন।
অল্প কিছুদিনের মধ্যে তারা গোটা ভারতবর্ষে ইংরেজ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছর তারা রাজত্ব করে। ঐতিহাসিক ব্রনে বলেন, “বক্সারের যুদ্ধের ফলাফলের উপর ভারতবর্ষের ভাগ্য নির্ভরশীল ছিল।
৩. মুসলিম শক্তির অধঃপতন : বক্সারের যুদ্ধে পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম শক্তির ধ্বংস এবং ইংরেজদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে । শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে মুসলমানরা এক চরম অধঃপতনের শিকার হয়।
৪. হিন্দুদের উত্থান পর্ব : এ যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের ফলে হিন্দুগণ ইংরেজদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ইংরেজদের সহযোগিতায় শিক্ষাদীক্ষায় তারা এগিয়ে যায়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ১৭৬৪ সালের সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধ মূলত মীর কাসিমের বাংলার স্বাধীনতার শেষ আশা আর ইংরেজ কোম্পানির রাজদণ্ড দখলের চূড়ান্ত যুদ্ধ।
মীর কাসিম যুদ্ধ করে বাংলার স্বাধীনতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হন, আর ইংরেজগণ ক্ষমতা দখল করে তাদের সাম্রাজ্যবাদ নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।