বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করো
বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর |
বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর
- অথবা, বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : ভূমিকা : মীর জাফরের পদচ্যুতির পর ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর মীর কাসিম বাংলার মসনদে বসেন। মীর কাসিম ছিলেন মীর জাফরের জামাতা কিন্তু তিনি শ্বশুরের ন্যায় অযোগ্য ও অপদার্থ ছিলেন না।
মীর কাসিম ছিলেন একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, দূরদর্শী রাজনীতিবিদ এবং একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক। সিংহাসনে আরোহণ করেই তিনি চুক্তি মোতাবেক ইংরেজদের পাওনা পরিশোধ করে তাদের নাগপাশ থেকে শাসন ব্যবস্থাকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
ফলে কোম্পানির সঙ্গে মীর কাসিমের বিরোধের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া মীর কাসিমের স্বাধীনচেতা মনোভাব ইংরেজরা মেনে নিতে পারছিল না।
তাই অচিরেই এই দুই পক্ষের মধ্যে বহু চরম আকার ধারণ করে। যার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধের মাধ্যমে। এ যুদ্ধের ফলে বাংলায় কোম্পানির শাসনের স্থায়ী ভিত্তি রচিত হয়।
বক্সারের যুদ্ধের কারণ : মীর কাসিম ছিলেন সুদক্ষ শাসক ও স্বাধীনচেতা। তিনি চেয়েছিলেন ইংরেজদের সঙ্গে সম্মানজক উপায়ে বাংলার স্বার্থ রক্ষা করে আর্থিক ও সামরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে। এ উদ্দেশ্যে তার গৃহীত পদক্ষেপগুলোই শেষ পর্যন্ত বক্সারের যুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
নিম্নে বক্সারের যুদ্ধের কারণ আলোচনা করা হলো-
১. আর্থিক সমৃদ্ধি আনয়ন : মীর কাসিম যখন বাংলার সিংহাসনে বসেন তখন বাংলার রাজকোষ ছিল প্রায় শূন্য। তদুপরি সিংহাসন লাভের পর ইংরেজ কোম্পানিকে তার পাওনা মেটাতে এবং যেসব ইংরেজ তাকে নবাব হতে সাহায্য করেছিলেন তাদের উপঢৌকন, দিতে গিয়ে তার আর্থিক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করে।
এমতাবস্থায় মীর কাসিম তার রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কতিপয় ব্যবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি পূর্ববর্তী আমলের সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বহু উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও অভিজাত সম্প্রদায়ের বিষয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন।
তিনি মীর জাফর ও আলীবর্দী খানের পরিবারের কাছ হতে সঞ্চিত অর্থ বলপূর্বক আদায় করেন। তিনি জমিদারদের উপর আবওয়াব বা অতিরিক্ত কর ধার্য করেন।
সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতেও তিনি নতুন কর ধার্য করেন। শাসনকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি যথাসম্ভব বায় সংকোচ করার চেষ্টা করেন।
এভাবে বিভিন্ন উপায়ে তিনি অর্থাভাব দূর করতে সমর্থ হন। কিন্তু এসব পদক্ষেপ ইংরেজ কোম্পানির চক্ষুশূলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
২. সামরিক ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ : মীর কাসিম প্রথমে ইংরেজদের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং প্রশাসনকে প্রভাবমুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে স্থানান্তরিত করেন।
নিরাপত্তার জন্য দুর্গ নির্মাণ ও রাজধানীর চারদিকে পরিখা খনন করা হয়। ইংরেজদের সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করা এবং সৈনিকদের ইউরোপীয় সামরিক পদ্ধতি শিক্ষাদানের জন্য দুইজন ইউরোপীয় সৈনিককে প্রশিক্ষক হিসেবে রাখেন।
অস্ত্র-গোলাবারুদের জন্য যাতে কারো মুখাপেক্ষী হতে না হয়, সেজন্য রাজধানীতে কামান, বন্দুক ইত্যাদি তৈরির ব্যবস্থা নেন।
এতে করে মীর কাসিমের সামরিক ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ইংরেজ কোম্পানি মীর কাসিমের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিকে ভালোভাবে নেয়নি। ফলে অচিরেই এই দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব উপস্থিত হয়।
৩. মীর কাসিমের স্বাধীনচেতা মনোভাব : মীর কাসিম ইংরেজদের হাতে নবাব মীর জাফরের মত ক্রীড়নক থাকতে প্রস্তুত ছিলেন না। তিনি ছিলেন মীর জাফরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাতুতে গড়া।
মীর কাসিম ছিলেন সুদক্ষ শাসক, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিক ও একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক। ইংরেজদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হবার ইচ্ছা হয়তো তার ছিল না, কিন্তু তাই বলে তিনি নিজেকে শক্তিশালী করে তুলবার চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি।
মীর কাসিম প্রকৃত নবাব হিসেবেই শাসনকার্য চালাতে কৃতসংকল্প হন। মোটকথা, মীর কাসিম ছিলেন সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনচেতা প্রকৃতির শাসক। যা ইংরেজ কোম্পানির জন্য ছিল হুমকিস্বরূপ।
৪. আন্তঃবাণিজ্য শুল্ক রদকরণ : অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য শুল্ক নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারেও ইংরেজ কোম্পানির সঙ্গে মীর কাসিমের বিরোধ উপস্থিত হয়।
উল্লেখ্য, ইংরেজ কোম্পানি বহুপূর্বেই নবাবের রাজ্যে বিনাশুল্কে বাণিজ্য করবার এবং বাণিজ্যিক সুবিধার দত্তক বা ছাড়পত্র ব্যবহার করার অনুমতি পেয়েছিল।
কিন্তু কোম্পানির কর্মচারীগণকে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের জন্য ও সুবিধা দেয়া হয়নি। পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজ কোম্পানির প্রতিপত্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানির কর্মচারীদের ব্যক্তিগত বাণিজ্যও প্রসার লাভ করতে থাকে এবং দত্তকের অপব্যবহারও বাড়তে থাকে।
ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারী, এমনকি তাদের আত্মীয়স্বজনরা দত্তকের সাহায্যে বিনাশুল্কে ব্যবসা করতে থাকে। এতে নবাবের আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও দেশীয় বণিকদের ব্যবসা- বাণিজ্য প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
মীর কাসিম এ বিষয়ে ইংরেজ গভর্নরের সৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং প্রতিবাদ জানান। কিন্তু তাতেও এ অন্যায় আচরণের কোন প্রতিকার করা সম্ভব হল না।
দেখে তিনি দেশীয় প্রজাদের উপর থেকে আন্তঃবাণিজ্য শুল্ক উঠিয়ে দিলেন। এতে রাজকোষের যথেষ্ট ক্ষতি হল বটে, কিন্তু দেশীয় প্রজার স্বার্থ রক্ষা সম্ভব হল। ইংরেজ কোম্পানি এ ব্যবস্থার প্রতিবাদ করলে নবাবের সঙ্গে তাদের প্রকাশ্য সংঘর্ষ উপস্থিত হয়।
৫. অন্যায়মূলক বাণিজ্যের প্রতিবাদ : ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের পর কোম্পানির কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ব্যবসায় বাণিজ্যের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। এসময় থেকে তারা এমন সব পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে থাকে যা তারা পূর্বে করেনি।
এসব পণ্যগুলো ছিল লবণ, পান ও তামাক। এসব পণ্যের উপর বাংলার | সরকারের একচেটিয়া অধিকার স্বীকৃত ছিল। এসময়কালে আবার কোম্পানির কর্মচারীরা দত্তকের অপব্যবহার করে বাণিজ্য করতে থাকে।
এর ফলে বাংলার অর্থনীতি দুদিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাণিজ্য শুল্ক বাবদ রাষ্ট্রের আয় কমে যায়। এক হিসেবে দেখা যায়, ইংরেজ কর্মচারীদের অবৈধ বাণিজ্যের ফলে রাষ্ট্রীয় আয় বছরে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা কমে গেছে।
আবার দেশীয় বণিকদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। ১৭৬২ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে নবাব মীর কাসিম এ অন্যায়মূলক বাণিজ্য বিষয়ে কোম্পানির নিকট অভিযোগ পেশ করেন। কিন্তু কোম্পানি এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেনি। ফলে মীর কাসিম ভীষণভাবে ক্ষুদ্ধ হন।
৬. ইংরেজ বিরোধী কার্যকলাপ : মীর কাসিম সিংহাসনে আরোহণের পর থেকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা [ গ্রহণ করতে থাকেন। যা ইংরেজ কোম্পানির জন্য সুখকর ছিল না।
মীর কাসিম বাৎসরিক ২৬ লক্ষ টাকা রাজস্ব প্রদানের অঙ্গীকার করে সম্রাট শাহ আলমের সমর্থন লাভ করেন। ইংরেজদের মিত্রভাবাপন্ন এরূপ সকল শ্রেণির কর্মচারী ও জমিদারগণকে তিনি কঠোর হাতে দমন করেন।
এদের মধ্যে বিহারের শাসনকর্তা রামনারায়ণের নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি শেঠ পরিবারের কাছ থেকেও বলপূর্বক প্রচুর অর্থ ঋণ হিসেবে আনার করেন। নবাবের এরূপ কার্যকলাপ স্বাভাবিকভাবেই কোম্পানির মাথাব্যথার কারণ হয়ে
৭. মীর কাসিমের রাজস্বনীতি : মীর কাসিমের রাজস্বনীতিও ইংরেজ কোম্পানির সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণ হিসেবে বিবেচিত। তিনি জমিদারগণকে উৎপীড়ন করে এবং তাদের উপর কয়েকটি নতুন 'আবওয়াব' বা অতিরিক্ত কর ধার্য করে রাজস্ব বৃদ্ধি করতে সমর্থ হন।
তার অর্থলোলুপতা থেকে বাংলার জমিদার বা প্রজা কেউই রক্ষা পায়নি। মীর কাসিমের রাজস্বনীতি সম্পর্কে শোর বলেন, একথা স্মরণ রাখা দরকার যে, নবাব মীর কাসিম নিজের অর্থাভাব দূর করে তিনি ইংরেজ কোম্পানির কর্তৃত্ব থেকেও মুক্ত হতে প্রয়াসী হন। ফলে অচিরেই কোম্পানির সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব দেখা যায়
৮. প্রত্যক্ষ কারণ : মীর কাসিমের বাণিজ্য, সামরিক ও রাজস্বনীতিতে বিরক্ত হয়ে পার্টনার ইংরেজ বাণিজ্য কুঠির এজেন্ট এলিস নবাব মীর কাসিমের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণই একমাত্র পন্থা বলে স্থির করেন।
ঐতিহাসিক রামসে মার বলেন, এলিস নিজের এবং বন্ধু-বান্ধবদের অর্থ-উপার্জনের পথে বাধা দূর করার উদ্দেশ্যে মীর কাসিমের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
এমিয়ট, এ. স্মিথ ও ভেরলস্ট প্রভৃতি ইংরেজ কর্মকর্তাগণও এলিসের প্রস্তাব যুক্তিযুক্ত বলে মনে করলেন। এলিস পাটনা শহর আক্রমণ করলে মীর কাসিম ইংরেজদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন।
একথা ঠিক যে, পলাশির যুদ্ধের পর থেকে ইংরেজগণ যে নীতি ও কর্মপন্থা গ্রহণ করে আসছিল, তাতে কোম্পানির সঙ্গে বাংলার নবাবের মৈত্রী স্থাপন সম্ভব ছিল না।
একদিকে ইংরেজদের নবাবের স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপ এবং অপরদিকে নবাবের আর্থিক স্বচ্ছলতা ও সামরিক প্রস্তুতি উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য করে তুলেছিল। ফলে বক্সারের যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল।
৯. কাটোয়া ও গিরিয়া যুদ্ধে পরাজয় : একটি যুদ্ধের পরাজয়আরেকটি যুদ্ধ সংঘটনে রসদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নবাব মীর কাসিম পাটনা থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করে তা পুনর্দখল করেন।
এদিকে মেজর এ্যাডামস ১০,০০০ ইউরোপীয় ও ৪০০ দেশীয় সৈন্য নিয়ে মীর কাসিমের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। মীর কাসিমের অধীনে প্রায় ২০,০০০ সৈন্য ছিল বটে, কিন্তু তাদের সামরিক দক্ষতা ছিল না।
তিনি ক্রমান্বয়ে কাটোয়া, গিরিয়া এবং উদয়নালার যুদ্ধে ইংরেজদের নিকট পরাজিত হন। এভাবে ক্রমাগত পরাজয়ে মীর কাসিম পলায়ন করে অযোধ্যায় আশ্রয় নেন এবং নতুনভাবে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। যার ফলশ্রুতি ১৭৬৪ সালের বন্ধুারের যুদ্ধ।
→ বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল : নিয়ে বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল আলোচনা করা হলো :
১. ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা : পলাশির যুদ্ধে সিরাজ-উদ- দৌলার পরাজয়ের ফলে ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হয়েছিল। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ করে তারা এদেশের শাসনদণ্ড হাতে নিয়ে নেয়।
২. উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা : বক্সারের যুদ্ধের ফলে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। রবার্ট ক্লাইভ তখন লর্ড হিসেবে গভর্নর হয়ে আসেন।
অল্প কিছুদিনের মধ্যে তারা গোটা ভারতবর্ষে ইংরেজ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছর তারা রাজত্ব করে। ঐতিহাসিক ব্রনে বলেন, "বক্সারের যুদ্ধের ফলাফলের উপর ভারতবর্ষের ভাগ্য নির্ভরশীল ছিল।
৩. মুসলিম শক্তির অধঃপতন : বক্সারের যুদ্ধে পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম শক্তির ধ্বংস এবং ইংরেজদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে মুসলমানরা এক চরম অধঃপতনের শিকার হয়।
৪. হিন্দুদের উত্থান পর্ব : এ যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের ফলে হিন্দুগণ ইংরেজদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ইংরেজদের সহযোগিতায় শিক্ষা-দীক্ষায় তারা এগিয়ে যায়।
উপসংহার : আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, বক্সারের যুদ্ধ সংঘটনের অন্যতম কারণ ছিল ইংরেজ কোম্পানির সাম্রাজ্যবাদী নীতির প্রত্যক্ষ প্রভাব এবং একই সাথে মীর কাসিমের স্বাধীনচেতা মনোভাব।
মীর কাসিমের দূরদর্শী ও স্বাধীনচেতা মনোভাবকে ইংরেজ কোম্পানি সবসময় নিজেদের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখেছে।
অন্যদিকে কোম্পানি কর্তৃক ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক ক্ষেত্রে অযাচিত হস্তক্ষেপ, নবাবের শাসনকার্যের প্রতি চরম আঘাত ও অবমাননা এই দুই পক্ষের মধ্যকার স্বার্থের দ্বন্দ্বই ১৭৬৪ সালের বক্সারের যুদ্ধের জন্য অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত।