বন্যা পরিস্থিতি - আজকের বন্যার খবর বাংলাদেশ ২০২৩
সুপ্রিয় দশকগন আশা করছি সবাই ভালো আছেন। হঠাৎ করে ২০২৩ সালে অক্টোবরের দিকে যে এরকম অস্বাভাবিক বা অসময়ে বৃষ্টিপাত হবে কেউই তা কল্পনা করতে পারেনি।
যেহেতু এটি সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ সম্পর্কে কোন পরিপূর্ণ ধারণা না থাকাটাই স্বাভাবিক। রিসেন্টলি বর্তমানে আমাদের জীবনে বন্যা নামক দু্র্যোগ আবারো যুক্ত হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি - আজকের বন্যার খবর বাংলাদেশ ২০২৩ |
বন্যা এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার ফলে অতিরিক্ত পানির স্রোত আমাদের চারপাশ তলিয়ে দেয় যার ফলে আমাদের জীবনের বিভিন্ন কাজ বিশেষ করে ঘরের বাহিরের কাজগুলো করা খুবই জটিল হয়ে পড়ে।
বন্যা পরিস্থিতি - আজকের বন্যার খবর বাংলাদেশ ২০২৩
আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ৫ই অক্টোবরের বন্যা পরিস্থিতি - বন্যার খবর ২০২৩ - আজকের বন্যার খবর বাংলাদেশ।
ভারতের উত্তর সিকিমে হঠাৎ এমন এক ধরনের বন্যা শুরু হয়েছে যা আমাদের বাংলাদেশেও গুরুতর প্রভাব সৃষ্টি করছে।
৫ই অক্টোবরের বন্যা পরিস্থিতি - বন্যার খবর ২০২৩- আজকের বন্যার খবর বাংলাদেশ আমাদের যে বার্তাটি দিচ্ছে সেটি হচ্ছে অন্যান্য দিনের তুলনায় ৫ই অক্টোবর বন্যার পরিমাণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
আবহাওয়া কেন্দ্র আমাদেরকে জানিয়েছে- নিম্নচাপের কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত সংঘটিত হওয়ার ফলে উজানের পানি বৃদ্ধি পেয়ে এই পরিস্থিতি আরো দুই দিন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা বেশি।
● গত কয়েকদিন যাবত ভারতের সিকিম অঞ্চলে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং মঙ্গলবার ও বুধবার মাঝরাতের পর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে বৃষ্টি শুরু হয় যার ফলে তিস্তা নদীর পানির পরিমাণ অত্যাধিক হারে বেড়ে যায়। সিকিমের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানি বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে প্রবেশ করছে অঞ্চলগুলো হল- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, রংপুর এবং নীলফামারী এই অঞ্চলগুলো বন্যার পানি দ্বারা অতিরিক্ত পরিমাণে প্লাবিত হয়ে গিয়েছে যার ফলে সেই এলাকার মানুষগুলোর জীবনযাত্রার আগের তুলনায় খুবই কঠিন হয়ে গিয়েছে।
● সিকিমের এই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বাংলাদেশের তিস্তা নদীতে পানির পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায় এবং উওর অঞ্চলগুলোর নিম্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কঠিন আকারে দেখা দেয়।
● বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কর্মরত সরদার উদয় রায়হান খবরের মাধ্যমে জানান-স্রোতের বিপরীত দিক থেকে ঢেউ এসে পানির মাএা ২৫ সেন্টিমিটার উপরে উঠে গেছে। যার ফলে বন্যা কবলিত স্থান প্লাবিত হয়ে পানি ভাটির দিকে নেমে যায়, বৃহস্পতিবার ডালিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমা ১৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে বলে আশঙ্কা করা হয়।
● নীলফামারির একজন সাংবাদিক বিজয় চক্রবর্তী কাজল জানিয়েছেন- বুধবার রাত আটটা সময় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নীলফামারী জেলা প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে পানি হঠাৎ কমে গিয়ে বন্যার পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু আবহাওয়া পূর্বাভাস অফিস থেকে বলা হচ্ছে- আগামী দুই দিন পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত হয়ে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
● রায়হান সাহেবের মতবাদ অনুযায়ী , আগামী ২৪ ঘণ্টার ভিতর তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচে থাকারই সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পানি আবারও বেড়ে যেতে পারে, বেড়ে গিয়ে পানি বিপদসীমার কাছে চলে আসতে পারে।
● ৫ই অক্টোবরের বন্যা পরিস্থিতি - বন্যার খবর ২০২৩ অনুযায়ী, খুলনায় আবহাওয়া অফিসের একজন জানান- তাদের এলাকায় কখনো ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে, কখনো হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে অথবা কখনো বৃষ্টি হয়ে তলিয়ে যাচ্ছে যার কারণে তাদের এলাকার কর্মজীবী মানুষেরা বাহিরে গিয়ে কাজ করতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যার ফলে তারা খাদ্য সংকোটে ভুগছে।
● খুলনার আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ আরেকটি খবর দেন সেটি হচ্ছে- গত সোমবার সকাল ছয়টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত ১৩৩ মিলিমিটার বেগে বৃষ্টিপাত হয়েছিল।
● বরিশালের আবহাওয়া অফিস থেকে একজন জানিয়েছেন- বরিশালে এত বৃষ্টিপাত হয়েছে যে রাস্তায় হাটু পর্যন্ত পানি গড়িয়েছে ফলে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কম ছিল। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউই রাস্তাঘাটে বের হতে পারছে না। এমনকি পাকা ঘর অর্ধ পাকা ঘর টিনের ঘর সবকিছু তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায়। যেগুলো নিচতলা ঘর সেগুলো ভেসেউ গেছে যার ফলে জনগন খুবই চরম ভোগান্তিতে আছে।
● পটুয়াখালী জেলার সাংবাদিক জানান- মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টিপাত হয়েছে যার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ প্রচন্ড অশান্তির জীবন যাপন করছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর চারপাশের বেশ কিছু এলাকা ভেসে গিয়েছে এলাকাগুলো হল- খগা খড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, টেপা খড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন ইত্যাদি। বন্যার মুখোমুখি হয়ে শুধুমাত্র মানুষের জীবনযাত্রার ক্ষতি হচ্ছে না কৃষি ক্ষেত্রেও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গ্রাম অঞ্চলের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে কৃষি কাজ করা। কৃষি ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমে জমিজমা তলিয়ে যাচ্ছে যার ফলে কৃষকরা ঠিকমতো চাষ করতে পারছে না।
● এই কঠিন পরিস্থিতিতে প্রশাসন, আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক থাকতে বলার আদেশ জারি করা হয়েছে এবং যারা গ্রাম অঞ্চলে থাকে তারা যতটা সম্ভব যে সকল স্থানে পানি কম বৃদ্ধি পায় সে সকল স্থানে আশ্রয় নেয়ার কথা বলা হচ্ছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস অফিস থেকে জানানো হচ্ছে যে- এভাবে বৃষ্টিপাত হতে থাকলে বন্যা থামানোর কোন উপায় থাকবে না যা মানুষের জীবনের জন্য অনেকটা কঠিন হয়ে পড়বে।
বিশেষ করে যারা গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করছেন তাদের জন্য থাকা, খাওয়া হতে শুরু করে সব কিছুতেই সমস্যা সৃষ্টি হবে। শহরের যেসব এলাকায় ঘরবাড়ি খুবই পাকাপোক্ত এবং উন্নত মানের রাস্তাঘাট রয়েছে তাদের এই বৃষ্টি ও বন্যার সময়ে যতটা না সমস্যা সৃষ্টি হয় তার চেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয় গ্রামাঞ্চলের মানুষদের উপর।
কারণ গ্রাম অঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়ি শহর অঞ্চলের মত এতটা মজবুত হয়না। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন বন্যার এই পরিস্থিতি দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ঠিক হয়েও যেতে পারে।