আইন জালুতের যুদ্ধকে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী যুদ্ধ বলা হয় কেন
আইন জালুতের যুদ্ধকে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী যুদ্ধ বলা হয় কেন |
আইন জালুতের যুদ্ধকে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী যুদ্ধ বলা হয় কেন
- অথবা, আইন জালুতের যুদ্ধকে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী যুদ্ধ বলার কারণ কি?
উত্তর : ভূমিকা : আইন জালুতের যুদ্ধ মিশরের ইতিহাস তথা ইসলামের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। ১২৬০ খ্রিস্টাব্দে আইন জালুতের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে মামলুকদের নিকট মোঙ্গলরা পরাজয় বরণ করে।
আইন জালুতের যুদ্ধে মোঙ্গলদের পরাজয়ের ফলে ইসলামি জগৎ ও প্রাচীন মিশরের রাজধানী কায়রো নগরী মোঙ্গলদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে রক্ষা পেয়েছিল।
→ আইন জালুতের যুদ্ধকে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী যুদ্ধ বলার কারণ : আইন-ই-জালুতের যুদ্ধকে যথাযথই মিশরের ইতিহাসে এক চূড়ান্ত ও ভাগ্য নির্ধারণকারী যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :
১. কায়রো নগরীকে রক্ষা : মোঙ্গলরা অত্যন্ত সাহসী ও দুর্ধর্ষ জাতি ছিলেন। আইন জালুতের যুদ্ধে যদি মামলুকরা পরাজিত হতো তাহলে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সভ্যতার লীলাভূমি মিশরের কায়রো মোঙ্গলদের হাতে ধ্বংস হতো।
এ যুদ্ধের মাধ্যমে মামলুকগণ প্রথমবারের মতো দুর্জয় ও দুর্ভেদ্য মোঙ্গল জাতিকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিল।
২. কায়রো ও ইসলামি জগৎ রক্ষা : দুর্ধর্ষ হুন জাতির নেতা আট্রিলা এবং সম্মলিত জার্মান ও রোমান বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত ঐতিহাসিক কলোনসের যুদ্ধের সাথে আইন জালুতের যুদ্ধের তুলনা করা হয়।
যেমন- হুনদের পরাজয়ের ফলে রোম ও খ্রিস্টান জগৎ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায় ঠিক তেমনি আইন জালুতের যুদ্ধে মোঙ্গলদের পরাজয়ের ফলে কায়রো ও ইসলামি জগৎ রক্ষা পায় ।
৩. ইসলামি ও খ্রিস্টান সভ্যতা রক্ষা : আইন জালুতের যুদ্ধে মুসলমানদের জয়ের ফলে ইসলামি ও খ্রিস্টান সভ্যতা রক্ষা পেয়েছিল।
কারণ তারা যদি মিশর জয় করতে সক্ষম হতো, তাহলে উত্তর আফ্রিকা ও স্পেন সম্ভবত ইউরোপের ভিতরে তারা প্রবেশ করতো, মোঙ্গলরা জয়ী হলে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের ইসলামি এবং খ্রিস্টান সভ্যতা ধ্বংস করে দিতেন। এ যুদ্ধে মোঙ্গলরা পরাজিত হলে ইসলাম ও মুসলিম সভ্যতা রক্ষা পেয়েছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আইন জালুতের যুদ্ধের ফলাফল ও গুরুত্ব ছিল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধে মোঙ্গলদের পরাজয়ের ফলে পশ্চিম সীমান্তে তাদের অগ্রযাত্রা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।