আইন ই জালুতের যুদ্ধের ফলাফল লিখ
আইন ই জালুতের যুদ্ধের ফলাফল লিখ |
আইন ই জালুতের যুদ্ধের ফলাফল লিখ
উত্তর : ভূমিকা : মিশরে মামলুক বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শাজার-উদ-দার । তার স্বামী আমীর আইবেকের হত্যাকাণ্ডের পর মালিক আল মনসুর সিংহাসনে বসলে সাইফুদ্দিন কুতুজ তার প্রকৃত অভিভাবক নিযুক্ত হন।
তিনি সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে মামলুক সুলতানের পদ দখল করেন। তর শাসনামলের একটি উলেখযোগ্য ঘটনা হলো আইন-ই-জালুতের যুদ্ধ।
→ আইন-ই-জালুতের যুদ্ধের ফলাফল : ১২৬০ সালে সাইফুদ্দিন কুতুজের সেনাপতি বাইবার্সের নেতৃত্বে মোঙ্গলদের সাথে আইন-ই-জালুতের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নিম্নে এ যুদ্ধের ফলাফল আলোচনা করা হলো :
১. মোঙ্গলদের পরাজয় : আইন-ই-জালুতের যুদ্ধে হালাকু খানের পরাজয় ঘটে। এ যুদ্ধে মিশরবাসীর ভাগ্য নির্ধারিত হয়। কায়রো মোঙ্গলদের হাতে বিধ্বস্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
যুদ্ধে বহু মোঙ্গল সৈন্য মামলুক বাহিনীর হাতে হতাহত হয়। মোঙ্গল সেনাপতি কেতবগা অসীম বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেও অবশেষে নিহত হন।
২. সমগ্র সিরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার : মোঙ্গল সেনাপতি কেতবগা যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হলে মোঙ্গলরা পলায়ন করে। আলেপ্পো ও হামদান থেকে মোঙ্গলরা বিতাড়িত হয়। ফলে সমগ্র সিরিয়া মামলুকদের দখলে চলে আসে।
৩. মোঙ্গলদের বিজয়াভিযান ব্যাহত : চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে মোঙ্গলগণ যে জয়যাত্রা শুরু করেছিল তা আইন-ই-জালুতের যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে ব্যাহত হয়। বিশেষ করে পশ্চিম সীমান্তে মোঙ্গলগণ এরপর থেকে আর বিজয় অভিযান চালাতে পারেনি।
৪. মামলুকদের শক্তি বৃদ্ধি : আইন-ই-জালুতের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে মোঙ্গলদের শক্তিমত্তা যেমনি কমে যায়, অন্যদিকে তেমনি মামলুকদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুজ একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন রাজবংশের অধিপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
৫. মিশরবাসীর ভাগ্য নির্ধারণ : আইন-ই-জালুতের যুদ্ধ মিশরবাসীর ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। এ যুদ্ধে মামলুক শক্তি পরাজিত হলে অন্যান্য প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সভ্যতার কেন্দ্রভূমির ন্যায় কায়রোও মোঙ্গলদের হাতে পরাজিত হয়। এ যুদ্ধে বিজয়ের ফলে মিশরে মামলুকদের প্রভাব বিস্তার ঘটে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মিশর ও ইসলামের ইতিহাসে আইন-ই-জালুতের যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। এ যুদ্ধে একদিক যেমন আধিপত্য ধ্বংস করে, অন্যদিকে তেমনি মামলুকদের ক্ষমতার ভিতকে শক্তিশালী করে।