সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সৈয়দ বংশ কি সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও |
সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও
- অথবা, সৈয়দ বংশের পরিচয় লিখ ।
- অথবা, সৈয়দ বংশ সম্পর্কে কি জান?
উত্তর : ভূমিকা : খিজির খান তৈমুর লং-এর ভারতীয় সাম্রাজ্যের শাসনকর্তা ছিলেন। কিন্তু তিনি দিল্লির সিংহাসন লাভ করেও তৈমুর বংশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতেন।
খিজির খান নিজেকে সৈয়দ বংশোদ্ভূত বলে দাবি করতেন। তাই তার প্রতিষ্ঠিত বংশ "সৈয়দ বংশ" নামে ভারতীয় ইতিহাসে পরিচিত সৈয়দ বংশ ভারতে ১৪১৪–৫০ খ্রিষ্টাব্দের পর্যন্ত সর্বমোট ৪ জন শাসক শাসন করেন।
→ সৈয়দ বংশের পরিচয় : সৈয়দ বংশ দিল্লি সালতানাতের চতুর্থ রাজবংশ। এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা খিজির খান। খিজির খাঁনের দাবি মতে, তার পূর্বপুরুষগণ ছিলেন মহানবি (সা.)-এর বংশধর।
তাই তার প্রতিষ্ঠিত রাজবংশের নামকরণ করা হয় সৈয়দ বংশ। তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন মতও রয়েছে। ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ মনে করেন, খিজির খানের পূর্বপুরুষদের আদি নিবাস আরবে হলেও তিনি মহানবি (সা.)-এর বংশধর ছিলেন কিনা এই বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য প্রমাণ নেই।
তাদের মতে, সাধারণত নিজের মর্যাদা বৃদ্ধি ও জনগণের আনুগত্য ও শ্রদ্ধা অর্জনের উদ্দেশ্যে খিজির খান নিজেকে মহানবি (সা.) এর বংশধর বলে দাবি করেন। যা হোক এ বংশটি প্রায় ৩৭ বছর ভারতবর্ষে শাসন করে। এই বংশের মোট শাসকের সংখ্যা হলো ৪ জন।
১. খিজির খান (১৪১৪-২১ খ্রি.) : ১৪১৩ খ্রিষ্টাব্দে তুঘলক বংশের শেষ সুলতান নাসিরউদ্দিন মাহমুদের মৃত্যুর পর উদ্ভূত অরাজক পরিস্থিতিতে খিজির খান ১৪১৪ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লি অবরোধ করেন এবং সভাসদদের দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত দৌলত খানকে পরাজিত করে দিল্লি দখল করেন।
এর মধ্য দিয়ে ভারতে তুঘলক শাসনের অবসান ঘটে এবং সৈয়দ বংশের গোড়াপত্তন হয়। তিনি ১৪২১ খ্রিষ্টাব্দে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
২. মোবারক শাহ (১৪২১-৩৪ খ্রি.) : খিজির খানের মৃত্যুর পর তার পুত্র মোবারক শাহ ১৪২১ খ্রিষ্টাব্দে মোবারক শাহ | উপাধি ধারণ করে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করে।
সিংহাসনে আরোহণ করে অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার অবসান করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু ১৪৩৪ খ্রিষ্টাব্দে অসন্তুষ্ট মন্ত্রী সারওয়ার উল মূলক-এর নেতৃত্বে দিল্লির হিন্দু ও মুসলিম অভিজাতবর্গের ষড়যন্ত্রে নিহত হন।
৩. মুহাম্মদ শাহ (১৪৩৪-৪৫ খ্রি.) : ১৪৩৪ খ্রিষ্টাব্দের খিজির খাঁনের পৌত্র মুহাম্মদ শাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। মুহাম্মদ শাহের রাজত্বের প্রথমার্ধে অভিজাতবর্গের নেতা মন্ত্রী সারওয়ারমূলক দেশের শাসনক্ষমতা হস্তগত করেছিলেন। ১৪৪৫ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মদ শাহ মৃত্যুবরণ করেন।
৪. আলাউদ্দিন আলম শাহ (১৪৪৫-৫১ খ্রি.) : আলাউদ্দিন আলম শাহ সৈয়দ বংশের সর্বশেষ ও সর্বাপেক্ষা দুর্বল সুলতান ছিলেন। বলতে গেলে, তিনি সুলতান পদের অযোগ্যই ছিলেন।
তিনি এতোটাই অকর্মণ্য ছিলেন যে, স্বেচ্ছায় বাহলুল লোদীকে শাসনক্ষমতা অর্পণ করেন এবং বাহলুল লোদীর অনুকূলে সিংহাসনে ত্যাগ করে ১৪৫১ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রিয় স্থান বদায়ুনে প্রস্থান করলেন। এভাবে সৈয়দ বংশের অবসান ঘটল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খিজির খান কর্তৃক ১৪১৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সৈয়দ বংশের প্রায় ১৪৫১ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত দিল্লির শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করেছিল। বাহলুল লোদীর হাতে এ বংশের পতন ঘটে।
এ বংশের পতনের অন্যতম কারণ হলো সুলতান খিজির খাঁনের আমল থেকেই রাজ দরবারের উপর আমির ওমরাহের প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। তারা সালতানাতের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠে। যার ফলে সালতানাতে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং সৈয়দ বংশের পতন ঘটে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও। যদি তোমাদের আজকের সৈয়দ বংশ কি | সৈয়দ বংশের পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।