সিরাজ উদ দৌলার সিংহাসনারোহণ সম্পর্কে লিখ
সিরাজ উদ দৌলার সিংহাসনারোহণ সম্পর্কে লিখ |
সিরাজ উদ দৌলার সিংহাসনারোহণ সম্পর্কে লিখ
- অথবা, সিরাজ-উদ-দৌলার সিংহাসনারোহণ সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : ১৭৫৬ সালে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার সিংহাসনে উপবেশন ঘটে। আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি বাংলার মসনদে আরোহণ করেন।
তাঁর আমলেই বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত যায়। পলাশির প্রান্তরে নিজ বাহিনীর বিশ্বাসঘাতকতায় তিনি পরাজিত ও নিহত হন।
→ সিরাজ-উদ-দৌলার সিংহাসনারোহণ : ১৭১৭ সাল থেকে বাংলার নবাবগণ মুর্শিদাবাদে অবস্থান করতেন। আর বাংলার জন্য তখন থেকেই একজন নায়েব নাজিম নিযুক্ত করা হতো।
১৭৪০-১৭৪৪ পর্যন্ত আলীবর্দী খানের ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা নওয়াজ নায়েব নাজিম নিযুক্ত হন। তবে তিনি কুলী খান ও হোসেন উদ্দিনকে ঢাকার দায়িত্ব দিয়ে চলে যান। এ সময় থেকেই আলীবর্দীর অন্য জামাতার মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে অত্যন্ত সৎ ও ধার্মিক হোসেন কুলি খানকে রাতের আঁধারে হত্যা করা হয়। সকাল বেলা ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে শহরের অধিবাসীগণ একত্রিত হয়ে বিদ্রোহীদের মারার প্রস্তুতি নেয়।
এ সময় তারা নায়েব নামের একজন নিজেকে নায়েব নাজিম দাবি করলে জনগণ তার কাছে সনদ দেখতে চায়। তা প্রদর্শন করতে না পারায় জনতার আক্রমণের আগেই ঐ ব্যক্তি মারা যান।
নেওয়াজের পরম বন্ধু কুলি খান ছিলেন ধন-ভাণ্ডারের দায়িত্বে। এ রকম দুর্যোগময় পরিস্থিতিতেই ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল আলীবর্দী খাঁ মৃত্যুবরণ করেন।
চারদিকে শুরু হয় প্রচণ্ড অরাজকতা। এদিকে রাজবল্লভ নওয়াজের অল্প বয়স্ক পুত্রকে সিংহাসনে বসার জন্য চক্রান্ত শুরু করে। এদিকে ইংরেজরাও তাদের দুর্গ সংস্কারের কাজ শুরু করে দেয়।
রাজবল্লভ ঘষেটি বেগমকে সহায়তা করার জন্য তার পুত্র কৃষ্ণবল্লভকে ঢাকার রাজকোষের সম্পূর্ণ অর্থসহ কলকাতায় ইংরেজদের ঘাঁটিতে পাঠায়।
এ রকম পরিস্থিতিতেই ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল শাহ কুলি খান মির্জা "সিরাজ-উদ-দৌলা” উপাধি গ্রহণ করে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসনে আরোহণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নবাব সিরাজ-উদ- দৌলা অনেক কণ্টকাকীর্ণ অবস্থায় বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু তিনি বেশি দিন টিকে থাকতে পারেননি।
পরবর্তীতে ইংরেজদের চক্রান্তে তাঁকে নিহত হতে হয়েছে এবং সাথে সাথে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হলো।