সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.
সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর |
সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর
- অথবা, সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতির বর্ণনা দাও।
উত্তর : ভূমিকা : সম্রাট জাহাঙ্গীরের পর ১৬২৭ সালে সম্রাট শাহজাহান সিংহাসনে আরোহণ করেন। সম্রাট সিংহাসনে আরোহণের পর তিনি তার সাম্রাজ্যকে স্থাপত্য শিল্প, শিল্পকলা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে সুসজ্জিত করেছেন।
এজন্য তার সময়কালকে মুঘল সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগ বলা হয়। তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করে। দাক্ষিণাত্য নীতি গ্রহণ করেন।
→ সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি : সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলে তিনি তার পিতা এবং পিতামহের অনুসরণে দাক্ষিণাত্য নীতি অব্যাহত রাখেন।
তিনি কয়েক বছর ধরে দাক্ষিণাত্যে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তিনি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে দাক্ষিণাত্যে আক্রমণ করেন।
নিম্নে দাক্ষিণাত্য নীতির উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো আলোচনা করা হলো :
১. আহমদ নগর বিজয় : মালিক অম্বরের মৃত্যুর পর আহমদ নগর রাজ্যে অন্তর্বিপ্লব শুরু হয়। এসময় মালিক অম্বরের পুত্র আহমদনগরের মন্ত্রী নিযুক্ত হন।
কিন্তু অচিরেই নিজাম শাহী সুলতান মুর্তজার সঙ্গে তার বিরোধের দরুণ তিনি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। পরে তিনি মুক্ত হয়ে স্বপদে পুনর্বহাল হলেও এর প্রতিশোধ নিতে ভুলেননি ।
তিনি মুঘলদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন এবং সম্রাট শাহজাহানের নির্দেশক্রমে সুলতান মুর্তজাকে বন্দি করে সুলতানের এক নাবালক পুত্র হুসেন শাহকে সিংহাসনে বসিয়ে নিজে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন।
এভাবে ক্ষমতা পেয়ে তিনি মুঘলদের বিরোধিতা শুরু করেন। ১৬৩১ সালে মুঘল বাহিনী। দৌলতাবাদ দুর্গটি অবরোধ করলে ফতেহ খান মুঘলদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেন।
কিন্তু ১০ লক্ষ মুদ্রা উৎকোচের বিনিময়ে তিনি দুর্গটি মুঘলদের হস্তে অর্পণ করলে আহমদ নগর রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটে।
২. গোলকুণ্ডা ও বিজাপুরের বিরুদ্ধে অভিযান : সম্রাট শাহজাহান ১৬৩৫ সালে গোলকুণ্ডার বিরুদ্ধে অভিযান করলে সেখানকার সুলতান যুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় মনে করে শাহজাহানের বশ্যতা স্বীকার করেন এবং বার্ষিক কর দানে স্বীকৃত হন।
এ সময় বিজাপুরের সুলতান মুঘলদের কর্তৃত্ব অস্বীকার করলে সম্রাট শাহজাহান তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে বিজাপুরের শাসক আদিল শাহ সম্রাট শাহজাহানের বশ্যতা স্বীকার করেন এবং বার্ষিক ২০ লক্ষ টাকা কর দানে অঙ্গীকারবদ্ধ হন। এর সাথে সাথে তিনি শিবাজীর পক্ষ ত্যাগ করতেও অঙ্গীকার করেন।
৩. দাক্ষিণাত্য নীতির ফলাফল : দাক্ষিণাত্য বিজয়ের ফলে সম্রাট শাহজাহান আওরঙ্গজেবকে সেখানকার শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। তৎকালীন দাক্ষিণাত্যের মুঘল এলাকাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করা হয় এবং আওরঙ্গজেবকে এ চারটি প্রদেশের শাসনকর্তা নিয়োগ করেন।
দৌলতাবাদ ও আহমদনগর প্রভৃতি জেলা নিয়ে প্রথম প্রদেশটি গঠিত হয়। দ্বিতীয় প্রদেশটি গঠিত তেলিঙ্গনা ও দক্ষিণ-পূর্ব গোলকুণ্ডার সীমান্ত নিয়ে এবং তৃতীয় প্রদেশটি খান্দেশ পরিগণিত হয়। এ প্রদেশগুলোতে মোট ৬৪টি দুর্গ ছিল। এ থেকে মুঘলরা বার্ষিক ৫ কোটি টাকা রাজস্ব পেত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উত্তর পশ্চিম সীমা নীতি ও দাক্ষিণাত্য নীতি সম্রাট শাহজাহানের মাজালের বহুল আলোচিত ঘটনা হলেও প্রকৃতপক্ষে এ দুটি ক্ষেত্রে মুঘলদের সাফল্য ছিল অতি নগণ্য।
শাহজাহানের পরবর্তী মুঘল শাসকগণ দাক্ষিণাত্য নীতি কার্যকর রাখতে গিয়ে প্রবল বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হন এবং দাক্ষিণাত্যেই তাদের সর্বাধিক সময় ব্যয় করতে হয়। ফলে কেন্দ্রে মুঘল শাসনের ঘণ্টা বেজে ওঠে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের সম্রাট শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য নীতি আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।