সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন |
সম্রট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন
- অথবা, আওরঙ্গজেবের অভিষেক অনুষ্ঠান আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : মুঘল সম্রাটদের মধ্যে সম্রাট আওরঙ্গজেব ছিলেন অধিকতর ধার্মিক। ১৬২৭ সালে সম্রাট শাহজাহান সিংহাসনে আরোহণ করলে আওরঙ্গজেব তখন পিতার " পক্ষ সমর্থন করেন।
১৬৫৭ সালে শাহজাহান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পুত্রের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে আওরঙ্গজেব জয়লাভ করে মুঘল সিংহাসনে আরোহণ করেন।
→ সম্রাট আওরঙ্গজেবের সিংহাসনে আরোহণ : শাহজাহানের চারপুত্র ছিল- দারাশিকো, সুজা, মুরাদ এবং আওরঙ্গজেব। এদের মধ্যে আওরঙ্গজেব ছিলেন তৃতীয়।
নিম্নে সম্রাট আওরঙ্গজেবের সিংহাসনে আরোহণের ঘটনা আলোচনা করা হলো :
১. দারাশিকোর মনোনয়ন : ১৬৫৭ সালে সম্রাট শাহজাহান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চার পুত্রদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। শাহজাহান আওরঙ্গজেবের প্রতি ভালো দৃষ্টি রাখলেও তিনি দারাশিকোকে সিংহাসনের উত্তরাধিকার মনোনীত করেন। এতে তার অপর তিন পুত্র শাহজাহানের প্রতি ক্রুদ্ধ হন।
২. সুজা ও মুরাদের স্বাধীনতা ঘোষণা : ১৬৫৭ সালে সর্বপ্রথম বাংলার শাসনকর্তা সুজা স্বাধীনতা ঘোষণা করে নিজ নামে পুত্রা এবং মুদ্রাক্ষন করে স্বসৈন্য নিয়ে রাজধানী আগ্রা দখল করতে অগ্রসর হন।
১৬৫৭ সালে ডিসেম্বর মাসে মুরাদও নিজেকে গুজরাটের সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। সুচতুর আওরঙ্গজেব কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে সুযোগের প্রতীক্ষায় ছিলেন।
৩. দারার পরাজয় : সম্রাট শাহজাহান দারাকে অন্ধ সমর্থন করলে আওরঙ্গজেব মুরাদের সাথে এক চুক্তিতে আবদ্ধ হন। ১৬৫৮ সালে দুই ভ্রাতার সম্মিলিত বাহিনী ধর্মাটের যুদ্ধক্ষেত্রে দারার বাহিনীকে পরাজিত করেন। তারপর সামুগড়ের যুদ্ধে দারা সম্পূর্ণভাবে আওরঙ্গজেবের হাতে পরাজিত হন।
৪. আওরঙ্গজেবের সম্রাট বলে ঘোষণা : দারাকে পরাজিত করার পর আওরঙ্গজেবের সামরিক মর্যাদা ও প্রতিপত্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। অতঃপর আওরঙ্গজেব সরাসরি অগ্রসর হয়ে রাজধানী আগ্রা অধিকার করেন।
দারার প্রতি অন্ধ সমর্থনের জন্য তিনি পিতাকে নজরবন্দি করে শাসনভার গ্রহণ করেন। এরপর আওরঙ্গজেব নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষণা করেন।
৫. ভ্রাতাদের হত্যা : সম্রাট আওরঙ্গজেব ইতিহাসের পাতা হতে ভাইদেরকে মুছে ফেলার ব্যবস্থা করেন। তিনি মুরাদকে আপত্তিকর কার্যাবলির অভিযোগে গোয়ালিয়র দুর্গে আটক করেন।
অতঃপর ১৬৬১ সালে হত্যার অভিযোগে মুরাদকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। ইতিপূর্বে সুজা আরাকানি মগ কর্তৃক নিহত হয়।
পরিশেষে আওরঙ্গজেব আজমিরের নিকট এক যুদ্ধে সারাকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। ধর্মদ্রোহিতার অপরাধে আওরঙ্গজেব দারাকে হত্যা করেন।
এরূপে দিল্লির সিংহাসনকে সম্পূর্ণভাবে নিষ্কন্টক করে আওরঙ্গজেব অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে ১৬৫৯ সালে জুন মাসে রাজ্যাভিষেক ক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৬৫৭ সাল থেকে - ১৬৫৯ সাল পর্যন্ত ৩ বছরের ইতিহাস ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে আপনজনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ইতিহাস।
মূলত আওরঙ্গজেব তার ধার্মিকতার কারণে এ গৃহযুদ্ধে জয়লাভ করেন। আর সাধারণ মানুষেরও সমর্থন ছিল আওরঙ্গজেবের প্রতি। যার ফলে তার সিংহাসনারোহণ সহজ হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন । যদি তোমাদের আজকের সম্রাট আওরঙ্গজেব কিভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেন পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।