পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর |
পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর
- অথবা, পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণসমূহ আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধ বিগ্রহ একটি পরিচিত বিষয়। যেসব যুদ্ধ বিগ্রহ ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে তার মধ্যে অন্যতম একটি যুদ্ধ হচ্ছে পানিপথের যুদ্ধ।
পানিপথের যুদ্ধ কয়েকটি ধাপে সংঘটিত হয়। প্রথম পর্যায়ে বা পানিপথের প্রথম যুদ্ধে সংঘটিত হয় মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর এবং ইব্রাহিম লোদীর মধ্যে।
১৫২৬ সালে বাবর পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীকে পরাজিত করে ভারতবর্ষে মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠা করে যে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন তা তাকে ইতিহাসে অমর করে রেখেছে।
নিম্নে প্রশ্নালোকে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
→ পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ : পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পিছনে কতিপয় কারণ উল্লেখপূর্বক আলোচনা করা হলো :
১. সমরকন্দে বাবরের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা : ওমর শেখ মির্জার মৃত্যুর পর ১৪৯৪ সালে বাবর পিতৃরাজ্য উত্তরাধিকার লাভ করেন। কিন্তু আমির ওমরাহদের ষড়যন্ত্রে বাবর ফরগনা ও সমরকন্দে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হন।
গাজওয়ানের যুদ্ধে পরাজয়ের পর তিনি বুঝতে পারেন যে সমরকন্দে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই তিনি ভারত অভিযানে মনোযোগী হলে পানিপথের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
২. কাবুল জয় : পিতৃভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবর ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দে কাবুল দখল করেন। কাবুল বিজয়ের সাফল্য তাকে ভারতবর্ষ অভিযানের অনুপ্রেরণা যোগায়। যা পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত।
৩. তৈমুর লং-এর দিল্লি জয় : তৈমুর লং-এর দিল্লি জয় পানিপথের প্রথম যুদ্ধের অন্যতম একটি কারণ। কেননা বাবর এক বর্ষীয়ান মহিলার কাছে তৈমুরের দিল্লি বিজয়ের কাহিনি শুনে ভারতবর্ষ অভিযানে আগ্রহী হন।
৪. উত্তর ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতা : পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার আরও একটি অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত উত্তর ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতা।
বাবর যে সময় ভারতবর্ষ অভিযানের চিন্তা করেন ঠিক সেসময় উত্তর ভারতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল। ফলে বাবর ভারত অভিযানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ইব্রাহিম লোদীর সাথে পানিপথের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
৫. ভারতের ঐশ্বর্য ও ধনসম্পদের লোভ : বাবর ক্ষুদ্র একটি পার্বত্য রাজ্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারেননি। ভারতের শস্য শ্যামল ভূমি এবং প্রচুর ঐশ্বর্য ও ধন-সম্পদ তাকে ভারত অভিযানে প্রলুব্ধ করে । যা পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত।
৬. বাদশাখান ও কান্দাহার জয় : বাবর ১৫২০ সালে বাদশাখান এবং ১৫২২ সালে কান্দাহার জয় করেন। এ দুই সাফল্য তাকে ভারত অভিযানে উৎসাহিত করে। ফলে তিনি দিল্লি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিলে বাবর ও ইব্রাহিম লোদীর মধ্যে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা। যার ফলে ভারতবর্ষে প্রথম বাবরের মতো মুঘল শাসনের সূত্রপাত হয় এবং প্রায় ৩০০ বছরের সুলতানি শাসনের অবসান হয়।
এ যুদ্ধে বাবরের কৃতিত্বের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা থেকে একথা বলা যায় যে বাবর সত্যিই একজন মহান শাসক এবং ইব্রাহিম লোদীর যে পরিচয় পাওয়া যায় তা তার নির্বুদ্ধিতার পরিচয় বহন করে। তাই পানিপথের প্রথম যুদ্ধকে ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের পানিপথের প্রথম যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।