নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.
নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও |
নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও
উত্তর : ভূমিকা : মুঘল বংশের ইতিহাসে নারীদের প্রভাব মূঘল রাজনীতির উপর মাঝে মাঝে দেখা যায়। আকবরের সময় ধাত্রী মাতা মহম অনাগা আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টা করেন।
কিন্তু তা সফল হয়নি। তেমনিভাবে নূরজাহান জাহাঙ্গীরের উপর প্রভাব স্থাপনের চেষ্টা করে সফল হন এবং পরবর্তী রাজ্য পরিচালনায় যথেষ্ট অবদান রাখেন।
→ নূরজাহানের পরিচয় : নূরজাহানের পূর্বনাম ছিল মেহেরউন্নিসা। ১৫৭৬ সালে ভারতের কান্দাহারে তার জন্ম হয়। তার পিতার নাম মির্জা গিয়াস বেগ। মালিক মাসুদ নামে এক ব্যবসায়ীর সহায়তায় গিয়াস বেগ আকবরের দরবারে এক সামান্য পদে নিযুক্ত হন।
পরে নিজের কৃতিত্ব বলে গিয়াস বেগ কাবুলের দেওয়ান পদে নিযুক্ত হন। সতেরো বছর বয়সে আলীকুলী বেগ নামে এক পারসিক যুবকের সঙ্গে মেহেরউন্নিসার বিবাহ হয়।
আলীকুলী বাংলাদেশের জায়গিরপ্রাপ্ত হন এবং শের আফগান উপধি লাভ করেন। অল্প কালের মধ্যে শের আফগান ঔদ্ধত্য ও বিদ্রোহী হয়ে উঠলে বাংলার শাসনকর্তা কুতুবউদ্দিন কোকা তাকে রাজধানীতে প্রেরণ করার জন্য জাহাঙ্গীরের আদেশ পান।
কুতুবউদ্দিন শের আফগানকে বন্দি করতে উদ্যত হলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শের আফগাণ নিহত হন। মেহেরউন্নিসা তাঁর একটি কণ্যাসহ দিল্লিতে মুঘল প্রাসাদে আনীত হন।
১. জাহাঙ্গীরের সাথে বিবাহ : ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে জাহাঙ্গীর মেহেরউন্নিসাকে বিবাহ করেন। সম্রাজ্ঞী নূরজাহানকে বিবাহ করে জাহাঙ্গীর প্রথমে মেহেরউন্নিসাকে "নূরমহল” (রাজ প্রাসাদের আলো) এবং পরে তাকে 'নূরজাহান' (জগতের আলো) . উপাধিতে ভূষিত করেন।
২. নূরজাহানের সমর বিদ্যা : নূরজাহান কেবল কাব্য আর কলা চর্চাই করেননি, যুদ্ধেও তিনি দারুন পারদর্শী ছিলেন। তিনি ভালো তীর ছুড়তে পারতেন।
একবার জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মৃগয়ায় গমন করে তিনি নিজ হাতে একটি বাঘ শিকার করে ছিলেন। এতে খুশী হয়ে জাহাঙ্গীর তাঁকে একটি বহুমূল্য অলংকার দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
৩. নূরজাহানের ক্ষমতা বিস্তার : নূরজাহান দরবারে অত্যাধিক ক্ষমতা বিস্তার করেছিলেন। তার চক্রের প্রভাবে অনেকে তাঁর রোষে পড়েছিল। সিংহাসনের উত্তরাধিকার কে পাবেন, তাও নূরজাহান ঠিক করতেন।
দরবারে কোনো গুরুতর সিদ্ধান্ত তাঁকে না জানিয়ে নেয়া সম্ভব ছিল না। তিনি রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা নিজ হাতে কেন্দ্রীভূত করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন।
৪. নূরজাহানের গুণাবলি : নূরজাহান ছিলেন অসামান্য রূপবতী ও বিদূষী মহিলা। ফার্সি ও আরবীয় সাহিত্যে তাঁর অসাধারণ ব্যুৎপত্তি ছিল। বিপদে ধৈর্য, সাহস ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্ত্ব ছিল অসাধারণ। যেকোনো জটিল রাজনৈতিক সমস্যা সহজেই অনুধাবন করার মত শক্তি তাঁর ছিল।
৫. স্নেহ প্রবণতা : নূরজাহানের মধ্যে দয়া মায়ার যথেষ্ট সমাবেশ ছিল। তিনি দরিদ্র ব্যক্তিদের সাহায্য করতেন, শরণাপন্নকে রক্ষা করতেন। তিনি নাবালিকা মুসলিম কন্যাদের বিবাহে অর্থ সাহায্য করতেন।
৬. রাজনীতি থেকে অব্যাহতি গ্রহণ : ১৬২৭ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর শাহজাহান মুঘল সিংহাসনে আরোহণ করে নূরজাহানকে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেন।
এরপর তিনি কন্যা লাভলী বেগমকে নিয়ে লাহোরে অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতে থাকেন। ১৯৪৫ সালে নূরজাহান মৃত্যুবরণ করলে লাহোরের সহদরায় জাহাঙ্গীরের সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নূরজাহানের সৌন্দর্য আর সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে জাহাঙ্গীর তাঁকে বিবাহ করেছিলেন। সে শুধু সৌন্দর্যপ্রবণ সম্রাজ্ঞীই ছিলেন না রাজ্য পরিচালায় তার যথেষ্ট বুদ্ধিবৃত্তির পরিচয় দিয়েছেন।
তাঁর রাজনৈতিক কৌশলের নিকট সম্রাট জাহাঙ্গীর শীতল হয়ে পরবর্তী জীবনে নূরজাহানের ছত্রছায়ায় জীবন প্রতিপালন করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও। যদি তোমাদের আজকের নূরজাহান কে ছিলেন । নূরজাহানের পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।