মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুঘল কারা মুঘল জাতির পরিচয় দাও |
মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও
- অথবা, মুঘল জাতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষের ইতিহাসে যে কয়েকটি শাসনামল গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে তার মধ্যে মুঘল শাসনামল অন্যতম। কেননা মুঘল শাসকরা ভারতবর্ষে বলা যায় সবচেয়ে বেশি দিন শাসন করেছে।
তবে এ মুঘল শাসকরা ভারতের স্থানীয় জনগোষ্ঠী নয়। মূলত ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে ভারতে মুঘলদের আগমন ঘটে এবং ভারতের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়।
→ মুঘল জাতির পরিচয় : ভারতবর্ষের শাসকগোষ্ঠীর ইতিহাসে মুঘলদের তাদের রয়েছে নিজস্ব এক জাতিসত্তা। নিম্নে মুঘল জাতির পরিচয় তুলে ধরা হলো :
১. মুঘল কথাটির উৎপত্তি : মুঘল কথাটি প্রথমে একেবারেই মুঘল বলে পরিচিত হয়নি। মূলত ‘মুঘল' কথাটির উৎপত্তি হয়েছে ‘মোঙ্গল' শব্দ থেকে, যার অর্থ নির্ভীক। আবার অনেকে বলেন, মোঙ্গল কথাটি এসেছে ‘মোঙ্গ' শব্দ থেকে।
২. বাসভূমি ও জীবনযাপন : 'মুঘল' বা 'মুঘলদের' আদি নিবাস হচ্ছে বর্তমানকার মোঙ্গলিয়ায়। ভারতবর্ষে আগমন করার পূর্বে মুঘলরাও মোঙ্গলিয়ায় বসবাস করতো।
মুঘলরা বিভিন্ন রকম দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে জীবনযাপন করতো এবং এদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
৩. নেতৃত্ব : মুঘল জাতিরা যখন বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত হয়ে জীবনযাপন করছিল তখন তাদের মধ্যকার একটি দল অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং এ দলের নেতা ছিলেন ইয়েসুবাই। প্রবর্তীতে ইয়েসুবাইর মৃত্যুর পর তার পুত্র চেঙ্গিস খান মুঘল জাতির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
৪. নিৰ্ভীক ও শক্তিশালী : মোঙ্গলরা জাতি হিসেবে ছিল নির্ভীক যোদ্ধা ও শক্তিশালী জাতি। বিশেষ করে চেঙ্গিস খান মোঙ্গল জাতির সকল উপদলগুলোকে একত্রিত করে আরেক শক্তিশালী জাতি তাতারকে পরাজিত করে এশিয়ায় একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
চেঙ্গিস খানের অসাধারণ নৈপুণ্য ও রণকৌশলের জন্য মোঙ্গলরা তাকে 'চেঙ্গিস খান' বা “অসীম শক্তিশালী” উপাধিতে ভূষিত করেন। আমীর খসরু তার রচনার মুঘলদের দুর্ধর্ষতার পরিচয় তুলে ধরেন।
৫. জীবনধারণ : মোঙ্গল বা মুঘল জাতির লোকেরা কখনই একসাথে বসবাস করতো না যার কারণে তাদের জীবনধারণ প্রক্রিয়াও এক ছিল না। তবে মুঘলদের প্রধান জীবিকা ছিল মৃগয়া ও পশু পালন ।
পরবর্তীতে চেঙ্গিস খানের সময়ে মুঘলরা দস্যুতা বা ডাকাতিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে এবং তা থেকে যা পেত তাই দিয়ে জীবনধারণ করতো।
৬. বিভক্তি : মুঘল জাতির পরিচয় আলোচনা করলে আমরা এ জাতির মধ্যে বেশ কয়েকটি বিভক্ত দেখতে পাই। বিশেষ করে চেঙ্গিস খানের মৃত্যুর পর তার গড়ে তোলা বিশাল সাম্রাজ্য কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আর দ্বিতীয় চাখতাই খান লাভ করেন মধ্য এশিয়া। তাছাড়া এ সকল অঞ্চলের মধ্যেও আবার কতকগুলো বিভক্তি দেখা যায় ।
৭. তৈমুর লঙ ও বাবর : মুঘল জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষদের মধ্যে তৈমুর লঙ ও বাবর ছিল অন্যতম। তৈমুর লঙ ছিলেন চাখতাই খার বংশধর, যিনি ১৩৯৮ সালে ভারতবর্ষ আক্রমণ করে সুলতানি সাম্রাজ্যকে বিধ্বস্ত করেন।
আর বিশ্ববিখ্যাত চেঙ্গিস খান ও তৈমুর লঙ্গেরই বংশধর হচ্ছে বাবর । তিনি মোঙ্গল ও তুর্কি উভয় জাতির বাহক ছিলেন। আর পরবর্তীতে এ বাবরই তৈরি করে ভারতবর্ষে মুঘল শাসনামল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জাতি হিসেবে সৃষ্টির শুরু থেকেই মুঘলরা অনেক শক্তিশালী ও নির্ভীক জাতি। পরবর্তীতে এ জাতির মধ্যে বিভিন্ন বিভক্তি দেখা দিলেও তারা তাদের বীরত্ব সর্বদা প্রদর্শন করে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। তারা ১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে জয়লাভ করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও । যদি তোমাদের আজকের মুঘল কারা | মুঘল জাতির পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।