মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল |
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল
- অথবা, আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি মুঘল সাম্রাজ্যের ক্রমাবনতিতে কতটুকু দায়ী বলে মনে কর।
উত্তর : ভূমিকা : ১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেব দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি রাজ্য পরিচালনার 'সুবিধার্থে বেশ কিছু নীতি গ্রহণ করেন।
তন্মধ্যে রাজপুত নীতি ছিল সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। তবে সম্রাট আকবর কর্তৃক অনুসৃত রাজপুত নীতির ন্যায় আওরঙ্গজেব তার শাসনামলে সেভাবে রাজপুত নীতি গ্রহণ করতে পারেননি।
যদুনাথ সরকার আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতির সমালোচনা করে মন্তব্য করেন যে, “রাজপুত যুদ্ধ সম্রাটের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার পরিচায়ক । কারণ এর ফলে রাজকোষ হতে অজস্র অর্থ ব্যয় হয়।”
→ আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতির পটভূমি : বাবরের রাজত্বকাল থেকেই রাজপুত জাতির ষড়যন্ত্র ও মুঘল বিরোধী কার্যকলাপ চলতে থাকে। বাবরের সাথে রানা সংগ্রাম সিংহ এবং আকবরের সাথে রানা প্রতাপ সিংহ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।।
রাজপুতদের রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপ বারবার মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তিকে প্রকম্পিত করে তুললে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব | রাজপুতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করতে বাধ্য হন।
→ মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী : ঐতিহাসিকগণ মনে করেন যে, মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি অনেকাংশে দায়ী ছিল।
সমালোচকদের মতে, “রাজপুত যুদ্ধ রাজকীয় মর্যাদার যেরূপ হানিকর ছিল, এর ফলাফলও ছিল মারাত্মক।” ম্রাট আকবরের রাজপুত নীতির ন্যায় আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কৌশলগত দিক থেকে ততোটা সুবিধাজনক ছিল না।
ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ যুদ্ধপ্রিয় জাতি রাজপুতদের শক্তিকে আওরঙ্গজেব নিজের ও মুঘল সাম্রাজ্যের স্বার্থে ব্যবহার না করে তিনি এদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মারাত্মক ভুল করেন।
আর এর ফলে রাজকোষ থেকে অজস্র অর্থ ব্যয় হয়। অসংখ্য সুদক্ষ সেনাপতি ও সৈন্যদল নিহত হলে পরবর্তী যুদ্ধাভিযান বিশেষ করে দাক্ষিণাত্যে প্রেরিত অভিযান দুর্বল হয়ে পড়ে।
মেবার ও মারওয়ার মতো শক্তিশালী রাজপুতদের সঙ্গে আত্মঘাতী যুদ্ধের ফলে অপরাপর ক্ষুদ্র রাজপুত সমস্ত রাজাগণ যেমন হাদা ও গৌড় জাতি মুঘলদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে। এছাড়া মারাঠা ও রাজপুতদের মধ্যকার মৈত্রী মুঘল সাম্রাজ্যের জন্য ক্ষতিকর ছিল।
সুতরাং বলা যায় যে, আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি সাম্রাজ্যের সামরিক শক্তিকে দুর্বল করে দেয় এবং এ নীতির ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হতে হয় যা এ সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে পরোক্ষভাবে দায়ী ছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পথকে প্রশস্ত করেছিল। তার এ নীতি সাম্রাজ্যের জন্য সাফল্য বয়ে আনেনি, বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বলা যায় যে, মুঘল সাম্রাজ্যের পতনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি অনেকাংশে দায়ী।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল । যদি তোমাদের আজকের মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি কতটুকু দায়ী ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।