মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর |
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর
- অথবা, মুঘল সাম্রাজ্যের অবস্থানের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সংক্ষেপে তুলে ধর ।
উত্তর : ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো মুঘলদের শাসনামল। প্রায় সাড়ে তিনশ বছর মুঘল বাদশাগণ প্রতাপের সাথে ভারতবর্ষে রাজত্ব করলেও নিয়তির নির্মম পরিহাসে এক সময় মুঘল সাম্রাজ্যও বিস্মৃতির অতলগর্ভে নিমজ্জিত হয়। এ সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে মুঘল সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরীণ কিছু কারণ পরিলক্ষিত হয়।
→ মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণ : মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ যে বিষয়গুলো দায়ী ছিল সেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. সাম্রাজ্যের বিশালতা : মুঘল সাম্রাজ্যের বিশালতা তাদের পতনের পেছনে অনেকাংশ দায়ী ছিল। কেননা মুঘল শাসকরা প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষব্যাপী শাসন পরিচালনা করতো।
কিন্তু আওরাঙ্গজেবের পরবর্তী অদক্ষ শাসকদের পক্ষে এ বিশাল অঞ্চলের শাসনভার পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে এ সাম্রাজ্যের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছিল।
২. উপযুক্ত উত্তরাধিকারীর অভাব : পৃথিবীর যেকোনো সাম্রাজ্যের উন্নতি বা অবনতি নির্ভর করে সেই সাম্রাজ্যের শাসকদের দক্ষতার উপর। কিন্তু মুঘল সাম্রাজ্যে আওরঙ্গজেবের পরবর্তীতে আর তেমন কোনো দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন সম্রাটের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
ফলে এ সকল অপদার্থ, অনুপযুক্ত, অদক্ষ সম্রাটগণ মন্ত্রীদের উপর রাজ্যভার অর্পণ করে নিশ্চিন্তে আমোদ- প্রমোদ ও হেরেমে নারী ও মদ নিয়ে ব্যস্ত থাকত।
যে কারণে রাজ্যে বিদ্রোহ, বিশৃঙ্খলা ও বৈদেশিক আক্রমণের পরিমাণ দিনে দিনে বাড়তে থাকে। আর এভাবেই মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ঘনিয়ে আসে ৷
৩. উত্তরাধিকার আইনের অভাব : ঐতিহাসিকদের মতে, উত্তরাধিকার আইনের অভাব মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম একটি কারণ। কেননা এ সাম্রাজ্যে উত্তরাধিকার নির্বাচনে তেমন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ছিল না।
ফলে আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর সাম্রাজ্যের সিংহাসন অধিকারকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ১৩ বছরের মধ্যে ১৭টি গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়। আর এ অন্তর্দ্বন্দ্বের দরুণ মুঘল সাম্রাজ্য অভ্যন্তরীণভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পতনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়।
৪. অভিজাতবর্গের অবনতি : মুঘল শাসনের শেষদিকে এসে এ সাম্রাজ্যের অভিজাত শ্রেণি বিলাসপ্রিয়, বিশ্বাসঘাতক, কূট, কোন্দলপ্রিয় ও অকর্মণ্য শ্রেণিতে পরিণত হয়। তারা ভুরানি, ইরানি ও হিন্দুস্থানীয়-এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত হয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
৫. অন্যান্য কারণ : মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অন্যান্য যেসব কারণ বিদ্যমান ছিল সেগুলো হলো :
(ক) সেনাবাহিনীর উচ্ছৃঙ্খলতা;
(খ) প্রাদেশিক শাসকদের শক্তি বৃদ্ধি;
(গ) রাজকোষের শূন্যতা;
(ঘ) সাম্রাজ্যের অন্তর্দ্বন্দ্ব;
(ঙ) নৌবাহিনীর অভাব;
(চ) প্রজাসাধারণের অসন্তোষ প্রভৃতি কারণে মুঘল সামাজ্যের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর এবং তার পরবর্তী কয়েকজন উত্তরাধিকারী বহুকাল শাসন পরিচালনা করলেও এ সাম্রাজ্যের শেষদিকে এসে এ সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এত প্রকট হয়ে দেখা দেয় যে, প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে কালের স্রোতে একসময় এ সাম্রাজ্যের পতনকাল ঘনিয়ে আসে এবং অবশেষে তাদের পতন হয়। তবে এ সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলোই বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণগুলো আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।