মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও |
মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও
- অথবা, সুলতান মুবারক শাহের সংক্ষিপ্ত পরিচনা পাও।
- অথবা, মুবারক শাহ সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা: সৈয়দ বংশের অন্যতম শাসক সুলতান মুবারক শাহ ভারতীয় উপমহাদেশে দক্ষতার সাথে প্রায় ১৩ বছর শাসন করে গেয়েছেন। তিনি সৈয়দ বংশের যোগ্যতম শাসক হিসেবে কৃতিত্ব রেখে গিয়েছে।
শাসন পরিচালনায় তিনি অনেক নম্রতার পরিচয় দিয়েছেন। পিতার মৃত্যুর পর মুবারক শাহ সৈয়দ বংশের উত্তরাধিকারী হিসেবে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি সৈয়ন বংশের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সফল কৃতিত্ববান শাসক ছিলেন।
মুবারক শাহের পরিচয় : সুলতান মুবারক শাহ ছিলেন সৈয়দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা খিজির খানের জ্যেষ্ঠপুত্র ১৪২১ সালে পিতা খিজির খান মৃত্যুবরণ করলে তিনি দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন।
সুলতান হিসেবে তিনি প্রায় দীর্ঘ ১৩ বছর দিল্লির শাসনকার্য পরিচালনা করে যান। সর্বশেষ সম্মিলিত হিন্দু মুসলিম মালিক, জায়গীরকর ও উজিরের চক্রান্তে ১৪৩৪ সালে নিহত হন। তার মৃত্যুর পর তার ভ্রাতুস্পন সৈয়দ বংশের শাসনে অধিষ্ঠিত হন।
→ মুবারক শাহের কৃতিত্ব : নিম্নে মুবারক শাহের কৃতিত্ব তুলে ধরা হলো :
১. বিদ্রোহ দমন : পিতা খিজির খানের আমলে বিদ্রোহ দমনে তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে যেতে পারেননি।
তার পিতার শাসনমাল থেকে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যখন মুবারক শাহ ক্ষমতায় আসেন তখনও সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ সংঘটিত হলে সুলতান মুবারক শাহ কঠোর হাতে এসব বিদ্রোহ দমনে সক্ষম হন।
২. খোকর জাতির বিরুদ্ধে অভিযান : সুলতানের দুর্বলতার সুযোগে পাঞ্জাব প্রদেশে খোকর জাতি বিদ্রোহ সংগঠিত করে দিল্লির শাসন অধিকার করতে চেয়েছিল।
সুলতান মুবারক শাহ তাদের ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে তাদের দমন করার জন্য অভিযান প্রেরণ করে। তার কঠোর পদক্ষেপের জন্য খোক্ষর জাতি নেতা বাসারাত হত্যার মাধ্যমে সে বিদ্রোহ দমনে অনেক সচেষ্ট হন।
৩. জৌনপুরের বিদ্রোহ দমন : সুলতান মুবারক শাহ ক্ষমতায় আরোহণের দ্বিতীয় বছরের মাথায় জৌনপুরের রাজা মুহাম্মাদ খান মুবারক শাহের প্রতি অনাস্থা করে বিদ্রোহ শুরু করেন সুলতানকে সিংহাসনচ্যূত করার জন্য।
তাই সুলতান মুবারক শাহ তার বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করে তাদেরকে দমন করে জৌনপুরের শাসকদের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করেন।
৪. দোয়াব ও রোহিলা খণ্ডে আধিপত্য : সুলতান মুবারক শাহ ক্ষমতায় আরোহণ করে দোয়াব ও রোহিলা খণ্ডে আধিপতা [ বিস্তারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন।
দিল্লি থেকে একটু দূরবর্তী হওয়া সত্ত্বেও তিনি সাহসের সাথে সেই অঞ্চলে অভিযান প্রেরণ করেন। সেই বিদ্রোহের সুযোগে তিনি সেখানে অভিযান প্রেরণ করে দোয়াব ও রোহিলা খণ্ডে আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হন।
৫. মিশরের খলিফার আনুগত্য : সুলতান মুবারক শাহ এর শাসনামলে পৃথিবীর বিখ্যাত শাসক ছিল মোঙ্গল শাসনের অধীনে। মোঙ্গল শাসকদের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণে তৎকালীন মোঙ্গল শাসক তৈমুর লঙ্গের আনুগত্য না করে মিশরে তদানীন্তন খলিফার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন।
৬. মুবারকের শাসনব্যবস্থা : মুবারক শাহ শাসক হিসেবে বিদ্রোহ দমনে সচেষ্ট হয়ে রাজ্যের শাসনব্যবস্থার দিকে নজর দেন। তিনি শাসন সংস্কারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
তিনি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পূর্বের নিয়োগ অপরিবর্তিত রাখলেও অধিক ক্ষমতা থেকে বিরত থাকা উদ্দেশ্যে মালিক ও জায়গীর ব্যবস্থার সংস্কার সাধন করে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেন।
৭. জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক : সুলতান মুবারক শাহ একজন বিদ্যোৎসাহী শাসক ছিলেন। সুলতান মুবারক শাহের শাসন আমলে সুলতানের নিজস্ব পৃষ্ঠপোষকতায় ইয়াহিয়া বিন আহমদের “তারিখ-ই-মুবারক শাহী” নামক বিখ্যাত ঐতিহাসিক গ্রন্থটি প্রণয়ন করে । তিনি জ্ঞানী গুণীদের অনেক কদর করতেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান মুবারক শাহ সৈয়দ বংশের অন্যতম শাসক ছিলেন তার রাজত্ব পর্যালোচনার মাধ্যমে বোঝা যায়, তিনি ব্যক্তিগতভাবে একজন নম্র চরিত্রের অধকারী ছিলেন।
তার চরিত্রে অসংখ্য গুণের সমাহার ঘটে। তাইতো জনৈক সমসাময়িক ঐতিহাসিক এভাবেই বর্ণনা করেন যে "A element and generous soveriengful exellent quilities."
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও । যদি তোমাদের আজকের মুবারক শাহ কে ছিলেন পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।