ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর |
ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর
- অথবা, ফররুখশিয়ারের পতন কেন ঘটেছিল?
উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগে ভারতবর্ষের ইতিহাসে মুঘল বংশের শাসন এক চির অম্লান ঘটনা। মুঘলরা বিশেষ করে সম্রাট বাবর থেকে সম্রাট আওরঙ্গজেব পর্যন্ত শাসকরা সবাই খুবই দক্ষ, বিচক্ষণ ও যোগ্য ছিলেন।
তাই এই পর্যায়কে মুঘল শাসনের প্রথম পর্যায় এবং তার পরের শাসকদের ২য় পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের শাসকদের মধ্যে ফররুখশিয়ারও ছিলেন । তিনি সৈয়দ ভ্রাতাদের ষড়যন্ত্রে ক্ষমতাচ্যুত হন।
→ ফররুখশিয়ারের পতন : নিম্নে ফররুখশিয়ারের পতনের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. ফররুখশিয়ারের দুর্বলতা : মুঘল শাসনে অর্থাৎ ফররুখশিয়ারের শাসনের অধীনে সৈয়দ ভ্রাতারা উচ্চপদে আসীন ছিলেন। ফলে তারা আরও বেশি ক্ষমতালোভী হয়ে উঠেন।
তারা বুঝতে পারেন তাদের ক্ষমতা শক্তিশালী করতে হলে আরও বেশি শক্তিশালী হতে হবে এবং কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
ফলে তারা ফররুখশিয়ারের দুর্বলতার সুযোগে হুসেন আলী নিজামুল মুলকে পদচ্যুত করেন এবং নিজে দক্ষিণের সুবাদারি লাভ করেন ৷
২. সৈয়দ ভ্রাতাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি : ফররুখশিয়ারের শাসনাধীনে সৈয়দ ভ্রাতারা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে বেশ ক্ষমতাবান হয়ে যান। সৈয়দ ভ্রাতাদের হাতে সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ এসে যায়। যথা- উজির, মীর বকশি এবং দক্ষিণের সুবাদারী। ফলে তারা সাম্রাজ্যের ক্ষমতার দিকে নজর দেয়।
৩. প্রাচীন ও প্রধান অভিজাতদের দুর্বলতা : সৈয়দ ভ্রাতারা ক্ষমতাশালী হওয়ায় প্রাচীন ও প্রধান, অভিজাতরা ঈর্ষান্বিত হয়ে । পড়েন। এছাড়া তাদের দুর্বলতা শিয়ারের পতন ত্বরান্বিত করে।
কারণ অভিজাতরা শক্তিশালী থাকলে সৈয়দ ভ্রাতারা এতো বেশি। সাহস পেতো না। তাই শিয়ারের বিপদের সময় অভিজাতরা কোনো সাহায্য করতে পারেনি।
৪. মারাঠাদের সাথে সৈয়দ ভ্রাতার সন্ধি : সৈয়দ ভ্রাতারা ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠায় তারা সাম্রাজ্যে নজর দেন। আর এ লক্ষ্যে আরও শক্তি বৃদ্ধির জন্য তারা গোপনে মারাঠাদের সাথে সন্ধি করেন।
আর এ সন্ধির মাধ্যমে শিবাজির স্বরাজ্যে পূর্ণ আধিপত্য দেয়া হয় শাহকে। আর এর ফলে শাহ বাদশাকে ১০ লক্ষ পেশকাশ এবং পনেরো হাজার অশ্বারোহী সেনা দিতে অঙ্গীকার করেন ।
৫. ফররুখশিয়ারের পদচ্যুতি : মারাঠাদের সাথে সৈয়দ ভ্রাতারা গোপন সন্ধি করলে সৈয়দদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সৈয়দদের এরূপ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শিয়ার তাদের দমানোর জন্য জুলফিকার খানকে প্রাণদণ্ড দেন এবং আসাদ খানকে বরখাস্ত করেন।
তাছাড়া মীর জুমলা ও খান-ই-দৌব্রাজকে উচ্চ পদে নিয়োগ দেন। এসব কারণে সৈয়দ ভ্রাতারা ক্ষুব্ধ হয়ে ১৭১৯ সালে ফররুখশিয়ারকে পদচ্যুত করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দিন দিন সৈয়দ ভ্রাতারা শক্তিশালী হয়ে উঠেন। তারা রাজ্যের উচ্চপদ পাওয়ায় তাদের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। অপরপক্ষে, ফররুখশিয়ার অদূরদর্শী হওয়ায় তার কিছু সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে হয়নি।
ফলে সৈয়দ ভ্রাতারা নিজেদের সংগঠিত করার যথেষ্ট সময় পান। তাদের উপর দমন নীতির ফলে তারা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে পড়েন এবং ফররুখকে সিংহাসনচ্যুত করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের ফররুখশিয়ারের পতন আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।