বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর |
বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর
- অথবা, বাবরের সামরিক দক্ষতার পরিচয় দাও।
উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষে সুলতানি শাসনের অবসান ঘটিয়ে যে ব্যক্তি মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তিনি হচ্ছেন জহিরউদ্দিন মুহম্মদ বাবর।
বাবর ছিলেন বিখ্যাত মঙ্গোলীয় শাসক চেঙ্গিস খান ও তৈমুর লঙ এর বংশধর। ছোটবেলা থেকেই বাবরের ভাগ্যে নেমে আসে নানা প্রতিকূলতা। কিন্তু বাবর সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হন।
→ বাবরের সামরিক দক্ষতা : মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর ছিলেন অসামান্য সামরিক প্রতিষ্ঠার অধিকারী। এ সামরিক দক্ষতার কারণেই তিনি প্রায় সকল যুদ্ধে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করতেন।
নিম্নে বাবরের সামরিক প্রতিভার পরিচয় তুলে ধরা হলো :
১. সুনিপুণ রণকৌশলী : বাবর ছিল অত্যন্ত সুনিপুণ রণকৌশলী। তার রণকৌশলের কাছে শত্রু পক্ষ খুব তাড়াতাড়ি ধরাশায়ী হয়ে যেত। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ও খানুয়ার যুদ্ধে বাবরের উন্নত কৌশলের পরিচয় পাওয়া যায়।
তিনি অল্পসংখ্যক সৈন্যবাহিনীকে ডান, বাম, মধ্য ইত্যাদি ভাগে এমন কৌশলে সাজাতেন যে শত্রুপক্ষ তার বুহ্য ভেদ করতে পারত না ৷
২. দক্ষ যোদ্ধা : বাবর ছিল অত্যন্ত দক্ষ ও নির্ভীক একজন যোদ্ধা। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি কখনোই ভয় পেতেন না। এমনকি সবসময় তিনি সম্মুখভাগ থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদান করতেন।
তিনি মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে শত্রুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তাই তৎকালীন যুদ্ধ ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে বাবরই ছিল সবচেয়ে দক্ষ যোদ্ধা।
৩. চতুর ও দূরদর্শিতার অধিকারী : বাবর ছিলেন একজন চতুর ও দূরদর্শিতার অধিকারী সেনানায়ক। তার চিন্তা-চেতনা ছিল অত্যন্ত দূরদর্শী। তাছাড়া তিনি একইসাথে সুযোগসন্ধানী ছিলেন।
তিনি সঠিক সময়ে সঠিক জায়গা দিয়েই শত্রুপক্ষকে আক্রমণ করতেন। অন্যদিকে নিজেদেরকে যেন শত্রুপক্ষ আক্রমণ করতে না পারে সেদিকে সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখতেন ।
৪. আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন : বাবর ছিল আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একজন রণকৌশলী। তিনিই সর্বপ্রথম পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ভারতবর্ষের ইতিহাসে কামান ও গোলার ব্যবহার করেন এবং তার এ গোলার আঘাতেই মূলত শত্রুপক্ষ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
তাছাড়া তিনি সৈন্যদেরকে শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে চারদিক থেকে গোলা নিক্ষেপ! করতে বলেন । যা উন্নত মস্তিষ্কেরই পরিচয় বহন করে।
৫. অসীম ধৈর্যশীল : বাবর ছিলেন অসীম ধৈর্যশক্তির অধিকারী। তিনি তার প্রত্যেকটি অভিযানে অসীম ধৈর্যের পরিচয় দেন। বিশেষ করে আমরা দেখতে পাই যে, পানিপথের প্রথম যুদ্ধে বাবরের সৈন্যদের প্রথম আক্রমণ ব্যর্থ হলেও তিনি ধৈর্যহারা হননি । তিনি ঠান্ডা মাথায় পরের অভিযান চালান এবং সফল হন।
৬. সৈনিকদের প্রেরণার উৎস : বাবরের মধ্যে নেতৃত্ব প্রদান করার অসামান্য ক্ষমতা ছিল। তিনি ছিলেন তার বাহিনীর সৈন্যদের প্রেরণার উৎস। সৈন্যরা যাতে সবসময় উজ্জীবিত থাকে সেজন্য বাবর তাদেরকে বিভিন্ন উপদেশ দিতেন।
তিনি সৈন্যদের বোঝান যে, কাপুরুষদের মতো পালিয়ে বাঁচার চেয়ে যুদ্ধের ময়দানে শহিদ হওয়া উত্তম। তাই বাবরের সৈন্যবাহিনী সবসময় তার নিয়ন্ত্রণাধীন থাকত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাবর ছিল অসাধারণ নির্ভীক এক রণকৌশলী। তার সামরিক প্রতিভা ও দক্ষতার কারণেই তিনি ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি যুদ্ধে জয়লাভ করেন এবং ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠা করেন মুঘল সাম্রাজ্য।
তার শৌর্যবীর্যের দ্বারা মুঘল সাম্রাজ্য সমগ্র বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে এবং ভারতবর্ষে মুঘল জাতি একটি দীর্ঘ ইতিহাস রচনা করে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের বাবরের সামরিক প্রতিভা আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।