আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ |
আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ
- অথবা, আওরঙ্গজেব পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতাগুলো আলোচনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : ১৫২৬ সালে সম্রাট বাবর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মুঘল সাম্রাজ্য দীর্ঘদিন নিজ গৌরব অক্ষুণ্ণ রেখে ভারতবর্ষ শাসন করেছে।
বিশেষ করে সম্রাট বাবর থেকে শুরু করে সম্রাট আওরঙ্গজেব পর্যন্ত মোট ছয়জন শাসক মুঘল সাম্রাজ্যের গৌরব ধরে রাখার পাশাপাশি সাম্রাজ্যের বিস্তার সাধন করেন।
কিন্তু আওরঙ্গজেবের পর আর তেমন কোনো যোগ্য ও শক্তিশালী মুঘল শাসকের আগমন ঘটেনি।
→ আওরঙ্গজেব পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা : নিম্নে আওরঙ্গজেব পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতাসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. সামরিক ভিত্তির উপর গুরুত্ব প্রদান : আওরঙ্গজেবের পূর্ববর্তী সকল মুঘল সম্রাট মূলত স্থানীয় হিন্দুদের সাথে সভ্যতার মাধ্যমে সাম্রাজ্য শাসন করেছিল। এমনকি বহু হিন্দু বড় বড় নেতা বহু মুঘলদের যুদ্ধ জয়ে এবং সাম্রাজ্য বিস্তারেও অবদান রেখেছিল।
কিন্তু আওরঙ্গজেব পরবর্তী শাসকরা জনকল্যাণের কথা না ভেবে শুধুমাত্র সামরিক শক্তির উপর সাম্রাজ্য শাসন করতে চেয়েছিল।
২. সুনির্দিষ্ট উত্তরাধিকার আইনের অভাব : মুঘল সাম্রাজ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তরাধিকার আইন ছিল না। ফলে কোনো সম্রাট মারা গেলে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নিয়ে যুদ্ধ বিগ্রহের সৃষ্টি হতো।
ফলে নিজেদের ভিতর নানামুখি ষড়যন্ত্রের সৃষ্টি হতো। সম্রাট আওরঙ্গজেব মারা গেলে এই উত্তরাধিকার সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। ফলে সাম্রাজ্যের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।
৩. অভিজাত শ্রেণির নৈতিক পতন : আওরঙ্গজেব পর্যন্ত মুঘল শাসকগণ নৈতিক দিক দিয়ে ছিলেন মোটামুটি শক্ত। তবে আওরঙ্গজেব পরবর্তী মুঘল রাজবংশ তথা অভিজাত শ্রেণির নৈতিক অধঃপতন মারাত্মক আকার ধারণ করে। তারা নারী ও মদে আসক্ত হয়ে পড়ে। তাছাড়া সুদ ও ঘুসের প্রচলন ঘটে।
৪. দুর্বল উত্তরাধিকার : আওরঙ্গজেব নিজেও নিজের অপর তিন ভাইকে হত্যা করে ক্ষমতায় আসীন হন। কিন্তু তারপর তার উত্তরাধিকারীরা ছিল খুবই দুর্বল।
তারা কেউ এককভাবে তেমন শক্তিশালী ছিল না। ফলে সাম্রাজ্যে বিভক্তি শুরু হয় এবং সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে।
৫. অর্থনৈতিক বিপর্যয় : মুঘল শাসকদের অধিকাংশই খুবই বিলাসী ছিলেন। তাঁরা খুবই আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপন করতেন। তারা সাধারণ প্রজাদের দুঃখের কথা না ভেবে নিজেদের বিলাসিতা এবং সুখ সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করায় সাম্রাজ্যে চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দেয় । যা সাম্রাজ্যের ভিত্তিকে দুর্বল করে তোলে ।
৬. নৌবাহিনীর অভাব : আওরঙ্গজেবের পরবর্তী শাসকরা যুগোপযোগী সামরিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অক্ষম ছিলেন এবং এ ব্যাপারে তাদের আগ্রহ কম ছিল।
উপযুক্ত নৌবাহিনী ছিল না। দক্ষ ও শক্তিশালী নৌবাহিনীর অভাবে পরবর্তী মুঘল শাসকরা শত্রুর বিরুদ্ধে টিকতে পারেনি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সম্রাট আওরঙ্গজেবের পর যোগ্য উত্তরাধিকার অভাব, সুনির্দিষ্ট উত্তরাধিকারী নীতি না থাকা, শাসকদের বিলাসিতা ও নৈতিক অধঃপতন ইত্যাদি দুর্বলতা চরমভাবে প্রকাশ পায়।
যা পরবর্তীতে মুঘল সাম্রাজ্যকে দুর্বল করে তোলে এবং সাম্রাজ্যের একক শক্তিতে ছেদ তৈরি হয়। যা সাম্রাজ্যের পতন ত্বরান্বিত করে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ। যদি তোমাদের আজকের আওরঙ্গজের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বলতা লিখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।