তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ |
তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ
- অথবা, তৈমুর লং-এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে কি জান?
- অথবা, তৈমুর লং-এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে বর্ণনা দাও ৷
উত্তর : ভূমিকা : ফিরোজ শাহের বংশধরগণ যখন অন্তর্কলহে ও গৃহবিবাদে জর্জরিত এবং তাদের দুর্বলতা ও অকর্মন্যতায় যখন দিল্লি সাম্রাজ্যের পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছিল তখন মধ্য এশিয়ার সমরকন্দের অধিবাসী দুর্ধর্ষ সামরিক নেতা আমীর-তৈমুর তুর্কি সৈন্যদের এক বিরাট বাহিনী নিয়ে ভারত আক্রমণ করে।
তিনি চাপতাই তুর্কি জাতির নেতৃত্ব গ্রহণ করে একে একে পারস্য, আফগানিস্তান, মেসোপটেমিয়া প্রভৃতি অধিকারের পর ভারত অভিমুখে অগ্রসর হয়।
তৈমুর লং-এর ভারত আক্রমণ : তৈমুর লং পারস্য, আফগানিস্তান, মেসোপটেমিয়া প্রভৃতি অঞ্চল জয় করার পর ভারতবর্ষের দিকে মনোনিবেশ করেন। তৈমুর লং-এর ভারত আক্রমণের প্রকৃতি লক্ষ্য করলে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ভারতের প্রভূত ঐশ্বর্য ও ধনরত্ন লুণ্ঠনই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।
পৌত্তলিকতার অবসান ঘটিয়ে ভারতে ইসলামের | আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ইচ্ছাও তৈমুর লং-এর ছিল। অনেকে বলেন, তার দুর্ধর্ষ সামরিক শক্তিই ছিল ভারত আক্রমণের অন্যতম কারণ।
তবে ভারতের বিচ্ছিন্ন ও গোলযোগপূর্ণ পরিস্থিতি তার ভারত অভিযানের পরিকল্পনাকে উদ্দীপ্ত করেছিল। ১৩৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তৈমুরের পৌত্র পীর মুহাম্মদ সসৈন্যে ভারতে প্রবেশ করে এবং অতি সহজে মুলতান অধিকার করেন।
একই বছর তৈমুর লং তার বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে সিন্ধু, বিলাস, রাঙী নদী অতিক্রম করে ভলম্ব শহর দখল করেন এবং প্রভূত ধনরত্ন লুন্ঠন করেন।
তলম্ব হতে দিল্লি অভিমুখে দীপালপুর, ভাতনেইর প্রভৃতি স্থানে অর্থলুন্ঠন ও শত শত নরনারীর প্রাণনাশ করে তিনি অবশেষে দিল্লির উপকণ্ঠে উপস্থিত হন।
তিনি দিল্লির উপকণ্ঠে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নারকীয় ঘটনা সংঘটিত করেন। লক্ষ লক্ষ নরনারীকে বন্দি ও নির্মমভাবে হত্যা করেন।
সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহ ও তার মন্ত্রী মায়ু ইকবাল বিরাট সৈন্যবাহিনী সংগ্রহ করে তৈমুর লংকে প্রতিহত করেন কিন্তু যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মানু বারণ প্রদেশে এবং মুহম্মদ শাহ গুজরাটে পলায়ন করতে বাধ্য হন।
ফলে তৈমুর লং খুব সহজেই দিল্লি অধিকার করেন। তিনি বিজয়ীর বেশে দিল্লিতে প্রবেশ করেন। তৈমুরের দুর্ধর্ষ বাহিনী নিশ্চিতে এক ব্যাপক হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল।
তার সেনাবাহিনীর লুণ্ঠন ও অত্যাচারে দিল্লি নগরী সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তিনি হত্যাকাণ্ড ও লুণ্ঠন চালানোর পর ১৩৯৯ খ্রিষ্টাব্দের খিজির খানের নিকট ক্ষমতা অর্পণ করে ভারত ত্যাগ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, তৈমুর লং-এর ভারত আক্রমণ ছিল স্রষ্টার অভিসম্পাতস্বরূপ। তৈমুর লং-এর ন্যায় অন্য কোনো আক্রমণকারী একটিমাত্র অভিযানের মাধ্যমে ভারতের উপর এরূপ ব্যাপক হত্যাকাও, দুষ্ঠন, অত্যাচার ও দুর্দশা সৃষ্টি করে ভারত ত্যাগ করেছেন বলে ইতিহাসে দৃষ্টান্ত নেই।
ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা রক্তপিপাসু, নিষ্ঠুর ও অত্যাচারী সামরিক নেতা হিসেবে নিজ পরিচয় রেখে দিল্লি থেকে প্রত্যাবর্তনের কয়েক বছরের মধ্যেই ১৪০৫ খ্রিষ্টাব্দে তৈমুর লং মারা যান।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ । যদি তোমাদের আজকের তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণ সম্পর্কে লিখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।