সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো |
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো
- অথবা, সুপ্রিমকোর্টের গুরুত্ব ও ভূমিকা আলোচনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন শাসনতন্ত্র অনুসারে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিমকোর্ট হলো মার্কিন জাতির সর্বোচ্চ আদালত। মার্কিন বিচার ব্যবস্থার শীর্ষদেশে সুপ্রিমকোর্ট অবস্থিত। সুপ্রিমকোর্টের মূল এবং আপিল উভয় এলাকাই আছে। সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্তই আইন ও শাসতন্ত্রের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বলে গণ্য হয় ।
→ সুপ্রিমকোর্ট : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট হলো মার্কিন শাসনতন্ত্র কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একমাত্র আদালত। একে মার্কিন জাতির সর্বোচ্চ আদালত বলা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় কাঠামো পিরামিডের মতো। এই শীর্ষদেশে সুপ্রিমকোর্ট অবস্থিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাংবিধানিক ইতিহাসের গোড়ার দিকে সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা এতো ব্যাপক ও কর্তৃত্বপূর্ণ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত এবং সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে | সুপ্রিমকোর্ট তার প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত করেছে।राि
১. সুপ্রিমকোর্টের গঠন : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট একজন প্রধান | বিচারপতি এবং একজন সহযোগী বিচারপতি নিয়ে গঠিত। সর্বপ্রথম মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট ১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত আইন অনুসারে একজন প্রধান বিচারপতি এবং পাঁচজন অন্যান্য বিচারপতি নিয়ে গঠিত হয়।
১৮০৭ সালে বিচারপতিদের এবং পাঁচজন অন্যান্য বিচারপতি নিয়ে গঠিত হয়। ১৮০৭ সালে বিচারপতির সংখ্যা বাড়িয়ে সাতজন করা হয়। তার পর ১৮৮৯ সালে কংগ্রেস বিচারপতির সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
সেই অর্জন অনুসারে বর্তমানের মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট একজন প্রধান বিচারপতি এবং আটজন সহকারী বিচারপতি নিয়ে গঠিত হয়। বিচারকার্য সম্পাদনের সময় অন্তত ছয় জন বিচারপতির উপস্থিতি অপরিহার্য।
২. কার্যকলাপ ও বেতন ভাতা : তাদের কার্যকাল অনির্দিষ্ট। শাসনতন্ত্রে বিচারপতিদের কার্যকাল নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। বিচারপতিগণ যতদিন ইচ্ছা স্বপদে বহাল থাকতে পারেন।
সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের বেতন ও ভাতা মার্কিন কংগ্রেস আইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট করে দেয়। প্রধান বিচারপতি ৬৫,৬০০ ডলার এবং অন্যান্য সহকারী বিচারপতিগণ ৬৫,০০০ বাৎসরিক বেতন পান।
৩. নিয়োগ পদ্ধতি : মার্কিন রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের নিযুক্ত করেন। তবে এই নিয়োগ সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষ। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে মার্কিন শাসনতন্ত্রে কোনো উল্লেখ নেই। নির্দিষ্ট যোগ্যতাবলির নির্দেশ না থাকার দরুন সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব কার্যকরী হতে দেখা যায় ।
→ সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা, গুরুত্ব ও ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। অন্য যেকোনো দেশের সর্বোচ্চ আদালত অপেক্ষা মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট অধিক ক্ষমতার অধিকারী।
আইনের ব্যাখ্যা ও বৈধতা বিচার এবং সংবিধানের অভিভাবক ও ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্ট তার ক্ষমতা ও কার্যাবলির পরিধিকে প্রসারিত করেছে।
বর্তমানে মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের কার্যাবলি ও ক্ষমতা বিশেষভাবে ব্যাপক এবং শাসনতান্ত্রিক ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
নিচে এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো :
১. আইনের ব্যাখ্যা : মার্কিন শাসনতন্ত্রের অন্যতম প্রণেতা হ্যামিলটন এর মতানুসারে আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইনের অর্থ ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা বিচারকদের আছে।
অন্যান্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মতো মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত আইনের অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারে। কোনো আইন ব্যাখ্যার মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্ট তার সঠিক অর্থ, উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি ঘোষণা করে এবং সেই ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়।
২. বিচার বিভাগীয় সমীক্ষার ক্ষমতা : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট শুধু আইনের ব্যাখ্যা করে না। আইনের বৈধতা বিচারও করে। সুপ্রিমকোর্ট, আইনের ব্যাখ্যার মাধ্যমে আইনের সঠিক অর্থ নির্ধারণ করে থাকে ।
কিন্তু আইনের বৈধতা বিচারের ক্ষেত্রে কোর্ট দেখে যে বিচার আইন বা শাসন বিভাগীয় কোনো কাজ সংবিধানের সীমা লঙ্ঘন করেছে কি-না।
সুপ্রিমকোর্ট আইন ও শাসন বিভাগীয় কার্যকলাপের বৈধতা বিচারের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র বহির্ভূত বা অসাংবিধানিকতার দায়ে আইন বা শাসন বিভাগের কোনো কাজকে বাতিল করে দিতে পারে।
৩. নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন সংবিধানের প্রথম দশটি সংশোধনের মাধ্যমে নাগরিকদের কতকগুলো মৌলিক অধিকার দেওয়া আছে।
এগুলো অধিকারের বিল নামে পরিচিত। তাছাড়া শাসনতন্ত্রের অন্যান্য অংশেও কিছু অধিকারের উল্লেখ আছে। সংবিধানের চতুর্দশ ও পঞ্চদশ সংশোধনে উল্লিখিত অধিকারগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চতুর্দশ সংশোধন অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা বা অব্যাহতি লাভের অধিকারকে কোনো আইন প্রণয়ন বা প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষুণ্ণ করা যাবে না।
৪. যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্যসরকারগুলোর মধ্যে অথবা রাজ্যগুলোর পরস্পরের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টনকে কেন্দ্র করে বিরোধের আশঙ্কা থাকে।
এই ধরনের কোনো বিরোধ বাঁধলে তার মীমাংসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় উপযুক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন একটি আদালত থাকে। এই যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের কাজ হলো কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলোর খাতে শাসনতন্ত্রে নির্দিষ্ট নিজ নিজ এলাকার মধ্যে থেকেই কার্য পরিচালনা করে থাকে।
৫. সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা ও অভিভাবক : সুপ্রিমকোর্ট মার্কিন শাসনতন্ত্রের অভিভাবক ও চরম ব্যাখ্যাকারক। সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে সুপ্রিমকোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী।
যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় একটি লিখিত শাসনতন্ত্র থাকে এবং দেশের শাসনকার্যে এই শাসনতন্ত্রের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় এই শাসনতন্ত্রের প্রাধান্য স্বীকৃত হয়েছে।
৬. মার্কিন সংবিধানের বিকাশ ও সুপ্রিমকোর্ট : সুপ্রিমকোর্টের ব্যাখ্যা মার্কিন সংবিধানের ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট নিরবিচ্ছিন্নভাবে শাসনতন্ত্রের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের সাহায্যে শাসনতন্ত্রের ধারণার পরিবর্তন করেছে এবং জীবন্ত ও অর্থবহ করে তুলেছে। সুপ্রিমকোর্ট সংবিধান, ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে সংবিধানকে পরিবর্তিত পরস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে তুলেছে।
৭. নীতিনির্ধারক : আইনের বৈধতা বিচারের মাধ্যমে মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট জাতীয় নীতিনির্ধারণ সংস্থা হিসেবেও কাজ করে। বিচারপতি মার্শালের সময় থেকে দেশের শাসন নীতিনির্ধারণে এবং মার্কিন জনগণের রাজনৈতিক জীবনে সুপ্রিমকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট আইনের সমালোচনা বৈধতা বিচারের মাধ্যমেই নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। সুপ্রিমকোর্ট বিচার্য কোনো আইনের বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য বিচার বিবেচনা করার পর সংশ্লিষ্ট আইনটি অসাংবিধানিকতার দায়ে বাতিল করতে পারে।
এক্ষেত্রে আদালত আসলে সংশ্লিষ্ট আইনটির সঙ্গে যুক্ত নীতিরই বিরোধিতা করে। সুপ্রিমকোর্ট এই পথেই নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো। যদি তোমাদের আজকের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।