সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.
সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো |
সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো
- অথবা, সুলতানা রাজিয়ার সংক্ষিপ্ত রাজত্বকালের বর্ণনা কর।
- অথবা, সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত কর।
- অথবা, সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে টীকা লিখ ৷
উত্তর : ভূমিকা : সুলতানা রাজিয়া ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নারী শাসক। ভারতে মুসলিম রাজত্বের ইতিহাসে তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী, যিনি দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন।
তিনি সিংহাসনে বসার অল্প দিনের মধ্যে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন। তবে তিনি প্রাণপণে রাজ্য শাসনে সচেষ্ট হয়েছিল।
- সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল : ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত নারী শাসক সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. সুলতানা রাজিয়ার পরিচয় : সুলতানা রাজিয়া ছিলেন দাস বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা সুলতান ইলতুৎমিশের কন্যা। ইলতুৎমিশের পুত্রদের সকলেই ছিলেন উত্তরাধিকারের অনুপযোগী।
তাই ইলতুৎমিশ সুলতানা রাজিয়াকে পরবর্তী উত্তরাধিকারী নির্বাচন করেন। কিন্তু দিল্লির সাম্রাজ্যের আমির-উলামাগণ তাকে মেনে না নিলেও তিনি ১২৩৬ সালে অযোধ্যা, বাধায়ুন, হান্সি এবং মুলতানের শাসনকর্তাগণের সমর্থনে দিল্লির সিংহাসনে বসেন।
২. রাজিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বিদ্রোহ: সুলতানা রাজিয়া সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। ওয়াজিব বা প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ জুনাইদি এবং অভিজাতবর্গের কয়েকজন প্রথম দিকে তাকে সহজভাবে মেনে না নিলেও পরবর্তীতে তার বশ্যতা স্বীকার করে নেন। একমাত্র তার প্রতিভা ও কূটনৈতিক প্রজ্ঞার সাহায্যে এটা সম্ভব হয়েছিল।
৩. আলডোনিয়ার বিদ্রোহ : সুলতানা রাজিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করেন লাহোরের শাসনকর্তা কবির খান। রাজিয়া পরবর্তীতে এই বিদ্রোহ করেন। ভাতিন্ডার শাসনকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আলতোনিয়ার বিদ্রোহ ঘোষণা করলে তিনি ভাতিন্ডার দিকে যান।
ভাতিন্ডা দুর্গ আক্রমণের সময় আলতোনিয়ার হাতে বন্দি হলে মুক্তিলাভের আশায় তিনি আলডোনিয়ারকে বিয়ে করেন। উল্লেখ্য যে, এই অভিযান তার সমর্থক ইয়াকুত খান নিহত হন।
৪. রাজিয়ার পরাজয় : সুলতানা রাজিয়া ভাতিন্ডার দুর্গ আক্রমণে ধৃত হলে তার অনুপস্থিতিতে দিল্লির আমির-উলামাগণ তার ভাই মুইজউদ্দিন বাহরাম শাহকে ১২৪০ সালে সিংহাসনে বসান।
এ সংবাদে তিনি স্বামীকে নিয়ে সিংহাসন পুনরুদ্ধারে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু যুদ্ধে পরাজিত হয়ে কাইথল নামক স্থানে তিনি ও তার স্বামী আলতোনিয়া ১২৪০ সালে এক হিন্দু আততায়ীর হাতে নিহত হন। এভাবে তার অল্পদিনের শাসনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
৫. চরিত্র ও কৃতিত্ব : মিনহাজ-উল-সিরাজি, সুলতানা রাজিয়াকে শ্রেষ্ঠ সুলতান জ্ঞানী, ন্যায়বর্তী, মহানুভবা, বিদ্যোৎসাহিনী ও সুবিচারক রূপে আখ্যায়িত করেছেন।
যুদ্ধবিদ্যায় তিনি যেমন পারদর্শিনী ছিলেন তেমনি ছিলেন দয়াদাক্ষিণ্যে, বিদ্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় পিছপা ছিলেন না। ফিরিশতা বলেন, তিনি শুদ্ধ উচ্চারণে কুরআন পাঠ করতেন। দিল্লির প্রজারা ন্যায্য ব্যবহারের জন্য তার অনুগত ছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতানা রাজিয়া ছিলেন সুবিচারক, ন্যায়নিষ্ঠ, জ্ঞানী, বিদ্যোৎসাহী ও সুদক্ষ শাসক । নারীশাসকের প্রতি পুরুষ অভিজাতগণ যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারেনি বলে তার মতো একজন বিচক্ষণ শাসকের পতন হয়। তবে কৃতিত্বের বিচারে দিল্লি সালতানাতে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো। যদি তোমাদের আজকের সুলতানা রাজিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে আলোচনা করো পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।