সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর |
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর
- অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয়ের বর্ণনা দাও ৷
উত্তর : ভূমিকা : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ছিলেন মধ্যযুগীয় সাম্রাজ্যবাদের মূর্তপ্রতীক। তিনি আলেকজান্ডারের ন্যায় দিগ্বিজয়ের প্রেরণায় দাক্ষিণাত্যে অভিযান পরিচালনা করেন।
প্রকৃতপক্ষে তার শাসন আমল থেকে মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তারের যুগের সূচনা হয়। সুলতান আলাউদ্দিন উত্তর ভারত জয় করার পর দাক্ষিণাত্য অভিযান চালনা করেন। ১৩০৬ সাল থেকে ১৩১৩ সাল পর্যন্ত দাক্ষিণাত্য অভিযান করে বিভিন্ন অঞ্চল জয় করেন ।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় : উত্তর ভারত জয় করার পর সুলতান দাক্ষিণাত্য জয় করেন। নিচে তার দাক্ষিণাত্য বিজয়ের ইতিহাস আলোচনা করা হলো :
১. দেবগিরি বিজয় : দেবগিরি যাদব রাজ্যের রাজা রামচন্দ্রদেব পূর্ব প্রতিশ্রুত কর প্রদান ও উপঢৌকন প্রদান বন্ধ করে দেন এবং গুজরাটের রাজা কর্ণদেবকে আশ্রয় প্রদান করে সুলতানের বিরাগভাজন হন।
সুলতান ১৩০৬ সালে মালিক কাফুরকে রামচন্দ্র দেবের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন এবং অভিযানে রামচন্দ্র পরাজিত হয়ে সুলতানের আনুগত্য স্বীকার করেন।
রাজার নিকট আশ্রিত কর্ণদেব পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। মালিক কাফুর প্রচুর ধনরত্নসহ এবং কর্ণদেবের কন্যা দেবলা দেবীকে নিয়ে রাজধানীতে ফিরে আসেন। সুলতান তার জ্যেষ্ঠ পুত্র খিজির খাঁনের সাথে দেবলার বিবাহ দেন।
২. বরাঙ্গল বিজয় : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ১৩০৭ সালে বরঙ্গলের কাকতীয় বংশীর রাজা দ্বিতীয় প্রতাপ চন্দ্র দেবের বিরুদ্ধে মালিক কাফুরকে প্রেরণ করে।
প্রায় আড়াই বছর যুদ্ধ করে মালিক কাফুর রাজা প্রতাপ চন্দ্র দেবকে পরাজিত করেন। রাজা প্রতাপ চন্দ্র দেব কর প্রদানের শর্তে সন্ধিতে আবদ্ধ হয়ে পুনরায় নিজ রাজ্য ফিরে পান।
৩. হোয়সল রাজ্য বিজয় : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ১৩১০ সালের নভেম্বরে মালিক কাফুর ও খাজা হাজীর নেতৃত্বে এক অভিযান পরিচালনা করেন হোয়সল রাজ্য তৃতীয় বল্লালের বিরুদ্ধে। রাজা বীর বল্লাল সুলতানের সামরিক শক্তির কথা বিবেচনা করে তার আনুগত্য মেনে নেয় ।
৪. পাণ্ডু রাজ্য বিজয় : পান্ডা রাজ্যে রাজ পরিবারে সুন্দ্র পান্ডা এ দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের সুযোগে অতি সহজে মালিক কাফুর পাণ্ডু রাজ্যের রাজধানী মাদুরা জয় করেন এবং প্রচুর লুণ্ঠিত দ্রব্য লাভ করেন। আমির খসরুর বর্ণনা মতে, এখানে তিনি ৫১২টি হাতী, ৫০০০ ঘোড়া, ৫০০ মণ মণি-মুক্তা, হীরা-পান্না লাভ করেন ।
৫. মহারাষ্ট্রে মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠা : রামচন্দ্র দেবের মৃত্যুর পর তার পুত্র শংকর দেব দেবগিরির রাজা নিযুক্ত হন। ক্ষমতা লাভ করে শংকর দেব প্রতিশ্রুত কর প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে।
তাকে শাস্তি প্রদান করার লক্ষ্যে সুলতান মালিক কাফুরের নেতৃত্বে এক অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে শংকর দেব নিহত হন।
৬. পুনরায় দেবগিরি আক্রমণ : ১৩১২ সালে মালিক কাফুর শংকর দেবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অভিযান পরিচালনা করেন। রামচন্দ্র দেবের পুত্র শংকর দেব পিতৃ প্রতিশ্রুত কর প্রদান বন্ধ করে দেন এবং সুলতানের কর্তৃত্ব অস্বীকার করে স্বাধীনতা লাভের চেষ্টা করে। ফলে মালিক কাফুর পুনরায় দিল্লি হতে তার বিরুদ্ধে অগ্রসর হন এবং তাকে পরাজিত ও নিহত করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয়ের কাহিনি ছিল খুবই রোমাঞ্চকর। তিনি তার সেনাপতি মালিক কাফুরের আপ্রাণ চেষ্টায় দাক্ষিণাত্য | বিজয় করে খলজি সাম্রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাক্ষিণাত্য বিজয় নিয়ে আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।