সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর |
সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : সংবিধান প্রণয়ন বা সৃষ্টিতে যেসব বিষয় সাহায্য করে থাকে সেগুলোকে সংবিধানের উৎস বলা হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে সংবিধান প্রাণবন্ত হয়।
যেহেতু সংবিধানের নিয়মকানুন মানুষের আচার-প্রথা, রীতিনীতির আলোকে সংবিধান প্রণীত হয়ে থাকে সেহেতু সংবিধানের কিছু উৎস বিদ্যমান থাকে।
যেগুলো থেকে সংবিধান প্রণয়ন করা হয় মানুষের প্রয়োজনেই বিভিন্ন উৎস থেকে সংবিধান তার সারনির্যাস গ্রহণ করে।
প্রত্যেক দেশের ভিন্ন ভিন্ন উৎস থেকে সংবিধান রচনা করা হয়েছে। তাই একেক দেশের সংবিধান একেক রকম নিয়মনীতি দেখা যায়।
→ সংবিধানের উৎস : দেশ-কালভেদে সংবিধানের উৎস ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
১. প্রচলিত রীতিনীতি : অতি প্রাচীনকাল থেকে সমাজজীবনের ব্যবস্থায় যেসব রীতিনীতি আচার-প্রথা প্রচলিত হয়ে আসছে, সেগুলো যখন কোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে সেগুলোকে সংবিধানের রীতিনীতি হিসেবে গণ্য হয়। ব্রিটিশ সংবিধানের একটি বড় অংশ এ ধরনের প্রচলিত রীতিনীতি ও প্রথা সংবিধানের উৎস।
২. ঐতিহাসিক সনদ : সনদ হচ্ছে সংবিধানের অন্যতম একটি উৎস। অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ এটাকে সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বলে বর্ণনা করেছেন।
বিভিন্ন দেশের ঐতিহাসিক সনদের ভিত্তিতে সংবিধান রচিত হয়েছে। ব্রিটিশ সংবিধান দেখা | যায়, ব্রিটেনের রাজন্যবর্গ কতকগুলো ঐতিহাসিক দলিল ও সনদের মাধ্যমে নাগরিকদের কিছু অধিকার স্বীকার করে নেয়। যেমন- ১২১৫ সালের ঐতিহাসিক ম্যাগনাকার্টা সনদ
৩. বিধিবন্ধ আইন : বিধিবদ্ধ আইনের মাধ্যমে অনেক সময় সংবিধান রচিত হয়। বিধিবদ্ধ আইন হচ্ছে আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইন এবং আইনসভা যখন তখন এগুলোকে পরিবর্তন করতে পারে।
যেমন— ১৮৩২, ১৮৬৭, ১৮৮৪-৮৫ সাচল প্রণীত ভোটাধিকার সম্প্রসারণের ‘সংস্কার আইন' ১৯১১ ও ১৯৪৯ সালে প্রণীত পার্লামেন্টের ক্ষমতাবিষয়ক ‘পার্লামেন্ট আইন’ ইত্যাদি ব্রিটিশ সংবিধানের উৎস বলে বিবেচিত।
৪. সন্ধি বা চুক্তি : সন্ধি বা চুক্তিকে সংবিধানের উৎস বলে ধরে নেওয়া হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চুক্তির আলোকে সংবিধানের উৎস বলে ধরা হয়।
একটি দেশ যখন অপর কোনো দেশের সাথে সন্ধি করে তখন ঐ সন্ধি অনুযায়ী সংবিধানে বিধিবিধানে সংযুক্ত হয়, যা সংবিধান রচনার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব বহন করে।
৫. সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি : সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি সংবিধানের উৎস হিসেবে গণ্য হয়। সংশোধনের পদ্ধতি অনুসারে সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনী পাস হয়।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১৬তম সংশোধনী আইন সংবিধানের সাথে সংযোজিত হয়েছে। তাই এটিকে সংবিধানের উৎস বলে ধরা হয়।
৬. বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত : অনেক সময় বিচার বিভাগ জটিল কোনো মামলার নিষ্পত্তির ব্যাপারে তাদের সুচিন্তিত রায় প্রদান করে থাকেন যেগুলো সংবিধানের ধারা বা উপধারা হিসেবে সংযোজিত হয়।
বিচারপতি হিউজেস বলেছিলেন, “আমরা একটি সংবিধানের অধীন কিন্তু সংবিধান হচ্ছে তাই যা বিচারকরা একে যেভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে। তাই বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত সংবিধান রচনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।”
৭. গণপরিষদ : অনেক সময় গণপরিষদকে সংবিধানের উৎস হিসেবে ধরা হয়। যেমন- ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধান গণপরিষদে সংবিধান খসড়া প্রণয়নের জন্য খসড়া সংবিধান কমিটি গঠন করে। যা বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের উৎস বলে ধরা হয় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সংবিধানের কোনো একটি নির্দিষ্ট দলিল নেই। তাই সংবিধানের উৎস খুঁজে বের করতে বিভিন্ন উপাদানের উপর নির্ভর হতে হয়।
প্রত্যেক রাষ্ট্রের নিজস্ব সংবিধান থাকে। তবে ব্রিটেনের সংবিধান আদর্শ সংবিধান ।. কেননা এ সংবিধানের আলোকেই বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংবিধান রচিত হয়েছে।
সেসব উৎসগুলো থেকেই সংবিধানের সমষ্টি যা রাষ্ট্রের জনসাধারণের কল্যাণের জন্য গঠিত।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের সংবিধানের উৎস সমূহ আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।