সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি |
সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি
- অথবা, সংবিধানের প্রকারভেদ লেখ। সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতিসমূহ বর্ণনা কর।
- অথবা, সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস কর। সংবিধান প্রতিষ্ঠার পদ্ধতিসমূহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা : সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল দলিল। আধুনিক বিশ্বে সংবিধান ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সংবিধান হচ্ছে কিছু লিখিত বা অলিখিত মৌলিক নিয়মাবলি যা কোনো রাষ্ট্রের ক্ষমতা বণ্টন ও ব্যবহারের নীতিনির্ধারণ করে এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সম্বন্ধ নির্ণয় করে।
কোনো রাষ্ট্রের শাসন পদ্ধতি কিরূপ তা। সংবিধান থেকে জানা যায়। তাই সংবিধানকে রাষ্ট্রের বলা হয়। তবে এই সংবিধান বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে।
সংবিধানের প্রকারভেদ এবং সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতির আলোচনা করা হলো:
সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ সংবিধানের যথার্থ স্বরণ উপপরিদ জন্য সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ করা প্রয়োজন।
লিপিবদ্ধকরণের প্রকৃতি ও পরিমাণ এবং সংশোধন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে = ৪ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। প্রকৃতি অনুসারে সংবিধান দুই যথা-
১. লিখিত সংবিধান ও
২. অলিখিত সংবিধান।
সংে পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে সংবিধানকে দুই ভাগে ভাগ করা যথা-
১. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান ও
২, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান।
নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
১. লিখিত সংবিধান : লিখিত সংবিধান বলতে সেই সকল সংবিধানকে বুঝায়, যার শাসনতান্ত্রিক বিষয়সমূহ একটি অথব একাধিক দলিলে লিপিবন্ধ থাকে। লিখিত সংবিধানে র পরিচালনায় অত্যাবশ্যকীয় মূলনীতিগুলো সুস্পষ্টভাবে লিখিত থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাংলাদেশ, ভারত, চীন এর সংবিধান হচ্ছে লিখিত সংবিধান।
২. অলিখিত সংবিধান : যে সংবিধানের অধিকাংশ ধারাসমূহ অলিখিতভাবে থাকে, তাকে অলিখিত সংবিধান বলে। এট কোনো রাষ্ট্রের প্রথা, আচার-ব্যবহার ও রীতিনীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে।
অধ্যাপক ফাইনার বলেন, “যেখানে আইন প্রণেতাগণ সংবিধানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেননি এবং এর ফলে সাংবিধানিক আইনকে অন্য প্রকার আইন থেকে পৃথক করা যায় না তখন তাকে অলিখিত সংবিধান বলে।" ইংল্যান্ডের সংবিধান হচ্ছে অলিখিত সংবিধান।
৩. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান : যে সংবিধানের ধারাসমূহ সহজে পরিবর্তন পরিবর্ধন ও সংশোধন করা যায় তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলে।
Lord Bryce বলেন, “সুপরিবর্তনীয় সংবিধান হলো ঐ সংবিধান যে সংবিধান সংশোধনের জন্য বিশেষ কোনো পদ্ধতির প্রয়োজন পড়ে না, বরং আইন পাসের ন্যায় সাধারণ পদ্ধতিতেই সংশোধন করা যায়। ইংল্যান্ডের সংবিধান একটি সুপরিবর্তনীয় সংবিধান।”
৪. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : যে সংবিধানের ধারাসমূহ সহজে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধন করা যায় না তাকে দুষ্পরিবর্তনীয়ঃ সংবিধান বলে। এ সংবিধান সংশোধনের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
Prof. Gettel বলেন, "If a constitution requires a special organ or a more difficult procedure of amendment then that required for the creation of ordinary law, at may be classed as rigid." বাংলাদেশের সংবিধান মার্কিন সংবিধান হচ্ছে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান।
চিত্রের সাহায্যে সংবিধানের প্রকারভেদ :
অলিখিত সংবিধান (সুপরিকলিীয় সংবিধান দৃশীবাণীর সাধার সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতিসমূহ : বিভিন্ন দেশের সংবিধানের দিকে তাকালে দেখা যায়, কোনটি কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে। সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। কোনো দেশের সংবিধান সাধারণত ৪টি পদ্ধতি অবলম্বনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেমন-
১. অনুমোদন বা রাজার আদেশ।
২. গণপরিষদ বা ইচ্ছাকৃত পদ্ধতির মাধ্যমে;
৩. নাম বিবর্তন পদ্ধতি এবং
৪. বিপ্লব পদ্ধতি।
১. অনুমোদন বা রাজার আদেশ : সংবিধান প্রণয়নের একটি পদ্ধতি হচ্ছে অনুমোদন পদ্ধতি। পূর্বে পৃথিবীর প্রায় সকল রাষ্ট্রেই ছিল স্বৈরাচারী। তারা ছিল প্রচুর ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু কালক্রমে জনগণ সচেতন হতে থাকে।
তারা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য সচেষ্ট হয়ে উঠছে। ফলে রাজা কতিপর বিধিবিধান এবং নিয়মকানুনের মাধ্যমে রাজ্য পরিচালনা প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।
আর এভাবেই গড়ে উঠে একটি সংবিধান। তবে রাজা এ সংবিধান তার ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতে পারতেন। ব্রিটিশ জনগণ ১২১৫ সালে অত্যাচারী রাজাগণের ওপর চাপ প্রয়োগ করে ম্যাগনাকার্টা সংবিধানে রাজার অনুমোদন আদায় করে নেন।
১৭৯৯ সালে ফরাসি সম্রাট দ্বিতীয় নেপলিয়ন এবং ১৯০৫ সালে রুশ সম্রাট দ্বিতীয় জান Nocoles প্রণীত সংবিধান এভাবে প্রণীত হয়। ১৯০৮ সালে চীন সম্রাট সংবিধান প্রতিষ্ঠা করে।
২. গণপরিষদ বা ইচ্ছাকৃত পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে সংবিধান রচনা করার জন্য গণপরিষদ গঠন বা বিশেষ কোনো সম্মেলনের আহ্বান করা হয়ে থাকে।
দেশের বিভিন্ন শ্রেণির জনগণ নিয়ে গণপরিষদ গঠন করা হয়। গণপরিষদ প্রথমে একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন করে। এই খসড়া সংবিধান সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে অনুমোদিত হলে তা স্থায়ী সংবিধানে পরিণত হয়।
Dictionary of social Science-এর ভাষায়, "The establishment of constitution by deliberate creation is suitable for the countres that here achived peace or freedom of late. অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের সংবিধান প্রণয়ন করা হয় গণপরিষদের মাধ্যমে।
৩. ক্রমবিবর্তন পদ্ধতি : ক্রমবিবর্তন বা ঐতিহাসিক বিবর্তনের মাধ্যমেও একটি দেশের সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। গণআন্দালনের মাধ্যমে যখন স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটানো হয়।
তখন জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের ক্ষমতাকেই বৈধ বলে ঘোষণা দেয়, এভাবে একটি সংবিধান তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে কোনো শাসক ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধি সংবিধান প্রণয়ন করতে পারে না। এ ধরনের সংবিধানের উদাহরণ হচ্ছে ব্রিটিশ সংবিধান।
৪. বিপ্লব পদ্ধতি : কখনো কখনো বিপ্লবের মাধ্যমে সংবিধান প্রণয়ন হতে পারে। বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বিপ্লবীরা করায়ত্ব করে সংবিধানের খসড়া রচনা করেন এবং তা জনসাধাণের দ্বারা সমর্থন লাভ করলে তা সংবিধানের কাহিনি সংবিধান প্রণয়ন করে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি, কোনো দেশে সংবিধান প্রণয়ন করতে উপরিউক্ত পদ্ধতিসমূহ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। কোনো দেশ সংবিধান প্রণয়ন করতে হলে এই চারটি পদ্ধতির যেকোনো একটি পদ্ধতি প্রদান দ্বারা সংবিধান রচনা সম্ভব নয়।
K. C. Wheare এর মতে, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত গণপরিষদ সংবিধান রচনা করবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম । এবং অন্য সবগুলো ব্যতিক্রম মাত্র।bb
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি। যদি তোমাদের আজকের সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস দেখাও | সংবিধান প্রণয়নের পদ্ধতি কয়টি পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।