সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল |
সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল
- অথবা, সিন্ধুতে আরবদের ব্যর্থতার কারণগুলো লিখ।
- অথবা, কি কি কারণে সিন্ধুতে আরবরা ব্যর্থ হয়?
উত্তর : ভূমিকা : উমাইয়া শাসনামলের ৭১২ সালে মুহম্মদ- বিন-কাসিম কর্তৃক সিন্ধু বিজিত হয়। এরপর প্রায় দেড়শত বৎসর যাবৎ সিন্ধুদেশ আরব সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ হিসেবে ছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে নানা কারণে আরবগণ সিন্ধুদেশে শাসন অব্যাহত রাখতে ব্যর্থ হয়। অন্যথায় এ বিজয়ের স্থায়িত্ব দীর্ঘস্থায়ী হলে ভারতবর্ষের ইতিহাস অন্যভাবে লিখতে হতো।
সিন্ধুতে আরবদের ব্যর্থতার কারণ : সিন্ধুতে একক কোনো কারণে আরবরা বার্ম হয়নি। সিন্ধুতে আরবদের ব্যর্থতার অনেকগুলো কারণ রয়েছে।
নিম্নে সিন্ধুতে আরবদের ব্যর্থতার কারণসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. অপ্রতিহত রাজপুত শক্তি : সিন্ধু প্রদেশের উত্তর ও পূর্বে বিদ্যমান রাজপুত রাজাদের অপ্রতিহত শক্তি আরবদের সাম্রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক ছিল।
সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী রাজপুতদের অপ্রতিহত শক্তি দমন করার জন্য সিন্ধু রাজা তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়নি। যার কারণে অপ্রতিহত রাজপুত শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ কারণে আরবরা সিন্ধুতে ব্যর্থ হয়।
২. স্বল্প সেনাবাহিনী : সিন্ধুতে উমাইয়া খলিফা যে সংখ্যক সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন তা ভারত বিজয়ের ক্ষেত্রে অগ্রভুল ছিল। উমাইয়া খলিফা চতুরতার সাথে আরবদের সময়কার বিভিন্ন বিদ্রোহের কথা চিন্তা করেনি।
যার দরুন তিনি দেশ রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রতি তেমন নজর দেননি তিনি যে পরিমাণে সেনাবাহিনী পোষণ করেছেন, তা ছিল তখনকার সময়ের জন্য অতি অল্প । যার দরুন আরবরা ব্যর্থ হয়।
৩. অসমাপ্ত বিজয় : আরবরা সিন্ধু বিজয় করেই ক্ষ্যান্ত হয়ে যায়। সিন্ধুর আশেপাশের অঞ্চলগুলো যে বিদ্রোহ করতে পারে সেদিকে তাদের তেমন নজর ছিল না।
পরবর্তীতে দেখা যায়, যেসব অঞ্চল আরবরা বিজয় করেনি সেসব অঞ্চল থেকে বিদ্রোহ শুরু হয় এবং এসব বিদ্রোহ মোকাবেলায় আরবরা ব্যর্থ হয়। যার | কারণে সর্বোপরি সিন্ধুতে আরবরা ব্যর্থ হয়।
৪. অলাভজনক অর্থনীতি : সিন্ধু ছিল অনুৎপাদনশীল একটি দেশ। তাই তা অধিকার ও রক্ষণাবেক্ষণ লাভজনক নয় ভেবে খলিফা সিন্ধুর প্রতি উদাসীন ছিলেন।
৫. মুহাম্মদ-বিন-কাসিমের মৃত্যু : বাস্তবিক পক্ষে মুহাম্মদ- বিন কাসিমের আকস্মিক মৃত্যু ও তার উত্তরাধিকারীদের অযোগ্যতাই ছিল সিন্ধু দেশে আরবদের ব্যর্থতার প্রধান কারণ ছিল
৬. সিন্ধু ও রাজধানীর মধ্যকার দূরত্ব : উমাইয়া খেলাফতের রাজধানী দামেস্ক হতে সিন্ধুর দূরত্ব ছিল অনেক। ফলে আরবগণ সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়।
৭. হিন্দুদের রাজ্য পুনরুদ্ধার : নীতি উমাইয়া খলিফাদের দুর্বলতা, অযোগ্যতা ও আত্মকলহের সুযোগে দেশীয় হিন্দুদের হৃতরাজ্য পুনরুদ্ধারে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করে তুলেছিল।
৮. অবিরত আক্রমণ : ভারতের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হিন্দু রাজ্যগুলো আরব শক্তিকে বাধা প্রদান করতে থাকলে সিন্ধুদেশে আরব | শাসন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত কারণগুলোর প্রেক্ষিতে সিন্ধু দেশে আরব শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে। এরূপ অবস্থায় ৮৭২ সালে খলিফা সিন্ধুর প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করলে সিন্ধুদেশে গোলযোগের সুযোগে ১৯৭৮ সালে মুহাম্মদ ঘুরী সিন্ধুদেশ জয় করলে আরব শাসনের অবসান ঘটে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল। যদি তোমাদের আজকের সিন্ধু আরবদের ব্যর্থতার কারণ কি ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।