মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল |
মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল
অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা চিত্র উল্লেখ কর।
উত্তর : ভূমিকা : মুসলিম বিজয়ের পূর্বে বাংলার ধর্মীয় অবস্থা ছিল কিছুটা ভিন্নধর্মী। সমকালীন কৌমবন্ধ সমাজব্যবস্থায় বিশ্বাসী সাম্যবাদীরা আত্মার অস্তিত্ব, মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রকৃতি পূজা ইত্যাদিতে বিশ্বাসী ছিল।
গুপ্ত শাসনামলে বাংলায় হিন্দুধর্মীয় সংস্কৃতির কিছুটা বিকাশ ঘটে। পাল রাজারা অহিংস ধর্মনীতির প্রচলন করে। সেন শাসনামলের পতাকাতলে জোর করে হিন্দুধর্মে দীক্ষিত করার প্রবণতা ছিল অনেক বেশি।
[] মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা : মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা আলোচনা করা হলো :
১. প্রধান প্রধান ধর্ম : মুসলমানদের বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলায় তিনটি ধর্মের প্রচলন ছিল। এ ধর্মগুলো হলো বৌদ্ধ ধর্ম, জৈনধর্ম ও হিন্দুধর্ম।
জৈনধর্ম তখন জনপ্রিয় ছিল না এবং বৌদ্ধ ধর্ম বিলুপ্ত হওয়ার পর্যায়ে চলে যায়। তখন হিন্দুধর্ম ছিল দেশের প্রধান ধর্ম। অধিকাংশ রাজাই ছিলেন হিন্দু এবং তারা হিন্দু ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন ।
২. বর্ণপ্রথা : হিন্দুধর্ম অনুসারে তাদের প্রধান চারটি শ্রেণি ছিল । যথা : ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। ব্রাহ্মণরা ছিল সমাজের প্রধান পুরোহিত। ক্ষত্রিয় যুদ্ধবিগ্রহ ও ব্যবসা বাণিজ্য করত।
বৈশ্যরা কিছু শাসনকার্যে নিয়োজিত ছিল এবং শূদ্ররা সমাজের সর্বনিম্ন স্তরে ছিল। সে সময়ে এ জাতিভেদ প্রথা কঠোরভাবে পালিত হতো।
৩. ব্রাহ্মণ শোষণ : পুরোহিত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ব্রাহ্মণগণ সে সুযোগে সাধারণ লোকদের শোষণ করতেন। তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে অধ্যাপক হাবিব বলেন, “ব্রাহ্মণগণ ইচ্ছাপূর্বক জনসাধারণকে অজ্ঞ করে রাখতেন"। দুর্নীতিপরায়ণ ব্রাহ্মণগণ জনসাধারণের দুর্বলতা ও ভীতির সুযোগে অর্থ উপার্জন করতেন।
৪. বৌদ্ধদের সাথে শত্রুতা : ব্রাহ্মণদের পুনর্জাগরণ ও তাদের আক্রমণাত্মক মনোভাবের কারণে বৌদ্ধদের সাথে তাদের শত্রুতা সৃষ্টি হয়।
তাছাড়া বৌদ্ধরা নানা কারণে হিন্দু শাসকদের বৈরীভাবাপন্ন ছিল। সেজন্য তারা হিন্দুদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য সিন্ধু আক্রমণকারী আরবদের স্বাগত জানায় ।
৫. ধর্মীয় কুসংস্কার : মুসলিম আগমনের প্রাক্কালে হিন্দুরা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করত। শাসকদের উৎসাহে মহিলাদের মধ্যে সতীদাহ প্রথা জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
→ সাংস্কৃতিক অবস্থা : আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলার নিজস্ব সাংস্কৃতিক ভাবধারা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কালের গর্ভে তা বিলীন হয়ে যায়। মৌর্য শাসনামলের যে কীর্তি ছিল তা গুপ্ত শাসনামলে বিলীন হয়ে যায়।
পাল রাজাদের শাসনামলে বাংলায় নবসংস্কৃতির বিকাশ সাধিত হয়। এ আমলে শিক্ষা ও সংস্কৃতির যথেষ্ট প্রসার ঘটে এবং একাধিক বৌদ্ধ বিহার গড়ে ওঠে।
বিহারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো :
১. বগুড়ার রামুবিহার ;
২. দিনাজপুরের সীতাকোট বিহার;
৩. . কুমিল্লার শালবন বিহার এবং
৪. নওগাঁর সোমপুর বিহার ।
সেন শাসনামলে বাংলার সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয় ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা তুলনামূলক উন্নত থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাও ছিল।
যেমন- রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলা ছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত। শুধু তাই নয়, এটি ছিল অনৈক্যে ভরা। তৎকালীন অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা উন্নত হলেও ধর্মীয় অবস্থা বাংলাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলেছিল।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল । যদি তোমাদের আজকের মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।