মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ |
মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ
- অথবা, মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থা বর্ণনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : সুলতান আলাউদ্দিনের রাজত্বকালে ১২৯৩ সাল থেকে ১৩০৭ সাল পর্যন্ত মোট সাত বার মোঙ্গলরা ভারত আক্রমণ করে।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে কেবল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি, বরং বলবনের মত তিনি তার রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে প্রহরার উদ্দেশ্য কতগুলো প্রতিরোধের ব্যবস্থা করেন। তার এ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয় ।
→ মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধের গৃহীত পদক্ষেপ : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :
১. দুর্গ নির্মাণ : মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধে সুলতান আলাউদ্দিন খলজির অন্যতম পদক্ষেপ হল দুর্গ নির্মাণ। এজন্য তিনি সব পুরাতন দূর্গ সংস্কার করেন এবং মোঙ্গলদের অগ্রগতির পথে নতুন নতুন দুর্গ নির্মাণের আদেশ জারি করেন ।
২. নতুন অস্ত্র কারখানা নির্মাণ : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধের অন্যতম পদক্ষেপ হলো নতুন কারখানা নির্মাণ। মোগলদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠুভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য উন্নতয়ানের অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণের উদ্দেশ্য অনেক নতুন কারখানা নির্মাণ করা হয়।
তার এ পদক্ষেপ মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধে অনেকটা সহজ হয় এবং পরবর্তীতে মোগলরা | আক্রমণ করার সাহস পায়নি।
৩. বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের উপর সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব প্রদান : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব সুযোগ্য ও বিশ্বস্ত কর্মচারীদের ওপর ন্যস্ত হয়।
সুলতান আলাউদ্দিন অন্যতম বিশ্বস্ত সেনাপতি ছিলেন পাঞ্জি মালিক। তিনি ১৩০৫ সালে পাঞ্জাবের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। পাঞ্জাবের শাসনকর্তা থাকাকালীন তিনি দক্ষতার সাথে মোঙ্গলদের আক্রমণ প্রতিরোধ করেন।
৪. সীমান্তে সেনাবাহিনী মোতায়েন : মোঙ্গলদের আক্রমণ প্রতিরোধে সুলতান আলাউদ্দিন খলজির অন্যতম পদক্ষেপ হল সেনাবাহিনী সীমান্তে মোতায়েন করা। দিপালপুর সামানা ও মুলতান শক্তিশালী সেনাবাহিনী মোতায়েন করা।
ফলে এসব অঞ্চল দিয়ে মোঙ্গলরা আগে যে আক্রমণ করত তা গৃহীত এ পদক্ষেপের ফলে তাদের প্রতিরোধের সফলতা লাভ করে। তাছাড়া সেনাবাহিনীরা দক্ষতার সাথে সীমান্ত পাহারা ও পরিচালনা করার জন্য তার সফলতা আসে।
৫. সীমান্ত নীতি গ্রহণ : সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন ও সুলতান আলাউদ্দিন খলজি তাদের সীমান্ত নীতির জন্য ভারতীয় ইতিহাসে প্রসিদ্ধ হয়ে আছেন।
তারা যদি মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করত তবে ভারতের ইতিহাসের ধারা হয়তো ভিন্নরূপ ধারণ করত।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সীমান্তনীতি ছিল কঠোর। তার সীমান্ত নীতি গ্রহণ করার ফলে মোগলদের আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
৬. সেনাবাহিনী গঠন : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গলদের আক্রমণ করার জন্য বিশাল সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি ৪,৭৫,০০০ সৈন্য সংগ্রহ করে এক বিশাল সেনাবাহিনী গঠন করেন।
আর সেনাবাহিনী যাতে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করতে পারে সেজন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু করেন। এই ব্যবস্থার ফলে সেনাবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। তাদের এ দক্ষতার দ্বারা মোগলদের প্রতিরোধ করা সহজ হয়।
৭. স্পর্শকাতর অঞ্চল চিহ্নিতকরণ : সুলতান আলাউদ্দিন | এলজির মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ ছিল সুচিন্তিত। তিনি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য সীমান্তের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেন।
উক্ত অঞ্চল রক্ষা করার জন্য তিনি ১৩০৫ সালে সুদক্ষ ও সুযোগ্য সেনাপতি গাজী মালিকের উপর দায়িত্ব ন্যস্ত করেন। ফলে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়।
৮. প্রাচীর নির্মাণ : আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা নেন। তিনি দিল্লির চারদিকে নতুন প্রাচীর নির্মাণ করেন। দিল্লিতে গিরি দুর্গ পুনঃনির্মাণ করা হয়।
মোঙ্গলদের আসার পথের বলবনের আমলের পুরাতন দুর্গগুলো সংস্কার এবং নতুন দুর্গ নির্মাণ করেন। এ দুর্গগুলোতে অভীষ্ট সাহসী সেনাদের প্রতিরোধের জন্য রাখা হয়।
৯. সেনাবাহিনীদের প্রশিক্ষণ দান : সুলতান আলাউদ্দিন মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য দক্ষ সেনাবাহিনী গঠন করেন । এর সেনাবাহিনীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দান করে তাদেরকে উন্নত অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত ও রণকৌশলে অভিজ্ঞ করে তোলা হয়। ফলে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দিনের দৃঢ় প্রতিরোধের ফলে মোঙ্গল আক্রমণের তীব্রতা কমে যায় । গাজি মালিক আফগানিস্তানে আক্রমণ চালিয়ে মোঙ্গল আক্রমণের সম্ভাবনা বিনষ্ট করে দেন।
এ প্রতিবিধানমূলক ব্যবস্থা বেশ কার্যকরী হয়। মোঙ্গল আক্রমণের প্রতিরোধে জয়ী হয়ে সুলতান আলাউদ্দিন খলজি নিরাপদ হয়ে দাক্ষিণাত্যে অভিযান করার জন্য মন দিতে পারে।
মোঙ্গল আক্রমণের ভয়ে ভারতের বিভেদকামী আলাউদ্দিন ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। পরিত্রাতা হিসেবে ভাবতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে সাহস করেনি।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ । যদি তোমাদের আজকের মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সুলতান আলাউদ্দিনের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ লেখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।