মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর |
মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর
- অথবা, মার্কিন স্বামী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ "স্বার্থাম্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দেখাও।
উত্তর : ভূমিকা : উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিচার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ভূমিকা এবং পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার আলোচনা অপরিহার্য। সংবিধানবহির্ভূত এই বিষয়টির আলোচনা বর্তমানে বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় গোষ্ঠীকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তা ও সমর্থকদের মতানুসারে গোষ্ঠীসমূহের কার্যকলাপ ও তাদের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিচার বিশ্লেষণ যথাযথভাবে করা যেতে পারে।
মার্কিন ও ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে সাদৃশ্য : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মোট ব্রিটেনের উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলোর অস্তিত্ব ও কার্যকলাপ পর্যালোচনা করলে নিম্নলিখিত কতকগুলো ক্ষেত্রে সাদৃশ্য দেখা যায়। যথা
১. রাজনৈতিক ব্যবস্থা অপরিহার্য : অঙ্গ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন উভয় দেশেই রাজনৈতিক ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলোর অস্তিত্ব স্বীকৃত।
উত্তরে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এই সমস্ত গোষ্ঠীর মাধ্যমে বহুলাংশে ব্যক্ত হয়। উভয় দেশেই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। এই গোষ্ঠীগুলো উভয় দেশেই জনসমর্থনের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত।
২. উদ্দেশ্যগত সাদৃশ্য : উভয় দেশেই স্বার্থাম্বেষী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উদ্দেশ্যগত সাদৃশ্যও আছে। এই গোষ্ঠীগুলো কোনো দেশেই, রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করতে চায় না।
তাদের মূল লক্ষ্য হলো ক্ষমতার মূল কেন্দ্রে অবস্থিত কাঠামোকে প্রভাবিত করা। এই কারণে গোষ্ঠীগুলো নীতিনির্ধারণকারী ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের উপর গোষ্ঠীস্বার্থের অনুকূলে চাপ সৃষ্টি করে বা কায়েম করে।
৩. পন্থা পদ্ধতির ক্ষেত্রে সাদৃশ্য : মার্কিন ও ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো তাদের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যে সমস্ত পন্থা পদ্ধতি অবলম্বন করে সেক্ষেত্রেও সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
উত্তরা দেশেই গোষ্ঠীগুলো তাদের নিজেদের গোষ্ঠীস্বার্থের অনুকূলে প্রচার ও প্রভাব বিস্তারের স্বার্থে বিভিন্ন পন্থা পদ্ধতি অবলম্বন করে।
গোষ্ঠীগুলো যে সমস্ত কলাকৌশলের আশ্রয় নেয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আইনসভার সদস্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করে ও জনমত গঠন করে।
৪. ভূমিকার গুরুত্ব : উভয় দেশেই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন স্বার্থের সংহতি ও সমন্বয়সাধনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই সমস্ত গোষ্ঠীর মাধ্যমে উভয় দেশের অধিবাসীদের বিভিন্ন স্বার্থ ব্যক্ত হয়। তাই মার্কিন ও ব্রিটিশ রাজনৈতিক ব্যবস্থার সরকার বিশেষ কোনো স্বার্থ সম্পর্কে আইন প্রণয়ন করে।O মার্কিন ও ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে বৈসাদৃশ্য ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দলীয় ব্যবস্থার প্রকৃতি রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আছে।
নিচে তা বর্ণিত হলো :
১. কার্যকলাপের পরিধি : দেশের রাজনৈতিক সাংস্কৃতির উপর স্বার্থ গোষ্ঠীগুলোর ক্রিয়াকলাপের ধারা নির্ভরশীল। মার্কি নাগরিকদের অনেকেই স্বার্থ গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ সম্পর্কে বহুলাংশে উদাসীন থাকেন । পক্ষান্তরে, ব্রিটিশ নাগরিকগণ সকল গোষ্ঠীর কাজকর্ম সম্পর্কে আপেক্ষাকৃত সচেতন থাকেন।
২. আইনসভার সঙ্গে সম্পর্কগত পার্থক্য : ব্রিটিনের দলীয় শৃঙ্খলা ও সংহতি অনেক বেশি। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই সমস্ত গোষ্ঠী সহজেই শিথিল ও নিয়মানুবর্তিতার অভাব অত্যন্ত প্রকট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বিল পাসের ব্যাপারে কংগ্রেসের কমিটিগুলোর ভূমিকাই মুখ্য। কিন্তু ব্রিটিশ কমনসভার কোনো কমিটির এ ব্যাপারে এতো ক্ষমতা নেই।
৩. জনমত গঠনের ক্ষেত্রে : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশেই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো নিজের স্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে সহায়ক জনমত সংগঠনের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে। কিন্তু এ ব্যাপারে ব্রিটেনের স্বার্থ গোষ্ঠীগুলো এত বেশি উদ্যোগী আয়োজন করে না।
তারও কারণ আছে। ব্রিটেনের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর দাবি-দাওয়ার মধ্যে সামঞ্জস্য সাধনের দিকে নজর দেয়।
৪. শাসন বিভাগের সাথে সম্পর্কগত পার্থক্য : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলোর তুলনায় গ্রেট ব্রিটেনের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো দেশের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করে কারণ ব্রিটিশ ব্যবস্থায় নীতিনির্ধারণী সংস্থা হিসেবে শাসন | বিভাগের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ ।
৫. বিচার বিভাগীয় সম্পর্কগত পার্থক্য : ব্রিটেনে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো বিচার বিভাগীয় স্তরে কাজকর্ম করে না।
কারণ ব্রিটেনে, আদালত পার্লামেন্ট কর্তৃক প্রণীত কোনো আইনের বৈধতা বিচার করতে যা আইনকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারে না। এর মূল কারণ হলো গ্রেট বিটেনের শাসনব্যবস্থায় আইনগত বিচারে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত।
৬. লবিংগত পার্থক্য : মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিভিন্ন লবিং আইনসভার স্তরে সুসংগঠিতভাবে সক্রিয় থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্রিটেনে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো সংসদীয় স্তরে এত সক্রিয় ও সংগঠিতভাবে লবিং-এর ব্যবস্থা করতে পারে না।
ব্রিটিশ গোষ্ঠীগুলোর তুলনায় মার্কিন গোষ্ঠীগুলোর লবিং ব্যবস্থা অনেক বেশি সংগঠিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লবিং বিশেষভাবে পেশাদারী হয়ে পড়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ উভয় দেশের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য ভিন্নতর। তাই উভয় দেশের স্বার্থান্বেষীর মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান।
আর এজন্য দু'দেশের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে গঠনগত ও কার্যগত যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। তবে এ সকল পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও মৌলিক কিছু সাদৃশ্য রয়েছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।