মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর |
মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর
- অথবা, 'মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক বর্ণনা কর।
- অথবা, মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থার তুলনামূলক সম্পর্ক নিরূপণ কর।
- অথবা, মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থার তুলনামূলক সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তার ফলে আইনসভার কাজ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া আইন প্রণয়ন ব্যবস্থা এখন বিশেষভাবে জটিল এবং বিশেষজ্ঞের কাজে পরিণত হয়েছে।
বহু সংখ্যক সদস্য নিয়ে এখনকার আইনসভা পঠিত হয়। এই কারণে বিপুল পরিমাণ আইনের সকল দিক খুঁটিনাটি বিচার বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয় না।
তাই এখন সুষ্ঠুভাবে এবং দ্রুত আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রায় সকল দেশের আইনসভায় বিভিন্ন কমিটির সাহায্য গ্রহণ করা হয়।
মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থার তুলনা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে উভয় দেশের আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কমিটি ব্যবস্থার প্রচলন দেখা যায়।
কিন্তু মার্কিন কংগ্রেস এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কমিটি ব্যবস্থার মধ্যে কতকগুলো ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখা যায়। নিয়ে এ সম্বন্ধে বিশদ আলোচনা করা হলো :
১. আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে : মার্কিন কংগ্রেসে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কমিটিগুলো অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মার্কিন কংগ্রেসে মূলত কমিটিগুলোর মাধ্যমেই আইন প্রণীত হয়।
কংগ্রেসের বিভিন্ন কমিটি বিলের খসড়া রচনা থেকে শুরু করে আইনে পরিণত হওয়া পর্যন্ত সকল স্তরের যাবতীয় কার্যসম্পাদন করে। | বিলের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিক সম্পর্কে কমিটি বিচার বিবেচনা করে।
২. শাসনব্যবস্থায় প্রকৃতিতে পার্থক্য : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে - কমিটি ব্যবস্থার গুরুত্ব পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এখানে কমিটি ব্যবস্থার উদ্ভবের কারণও আলাদা ।
মার্কিন শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রযুক্ত হওয়ায় আইন প্রণয়নের ব্যাপারে শাসন বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কোনো এখতিয়ার, দেই।
কংগ্রেসের বিভিন্ন কমিটিগুলোই এই দায়িত্ব পালন করে। এ কারণেও মার্কিন কংগ্রেস আইন প্রণয়নের ব্যাপারে কমিটিগুলো অত্যধিক প্রাধান্য ভোগ করে।
৩. বিল উত্থাপনের ক্ষেত্রে : ব্রিটেনের পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থায় আইনসভার অধিকাংশ বিলই কোনো না কোনো মন্ত্রী কর্তৃক উত্থাপিত হয়। মন্ত্রিগণ পার্লামেন্টের সদস্য তাই তাঁদের পক্ষে বিল উত্থাপনের বিষয়ে বিষয়ে কোনো অসুবিধা নেই।
অপরদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি বা তাঁর কেবিনেটের সদস্যগণ কংগ্রেসের সদস্য নন। তারা কংগ্রেসে কোনো বিল উত্থাপন করতে পারেন না।
৪. সভাপতি পদের ক্ষেত্রে : মার্কিন কংগ্রেসে কমিটিসমূহে সভাপতিগণই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন। তাঁদের নামেই বিলগুলো প্রচারিত হয় এবং তাদের নামানুসারেই বিলগুলো পরিচিতি লাভ করে।
ব্রিটেনে কিন্তু কমিটির সভাপতিদের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে না। তাই তারা সাধারণত অজ্ঞাতনামা থেকে যান ।
৫. পদ্ধতিগত পার্থক্য : মার্কিন কংগ্রেসে বিলের প্রথম পাঠের পর আলোচনা শুরু হওয়ার আগে তা কমিটিতে পাঠানো হয়।
ব্রিটেনে কিন্তু বিলের দ্বিতীয় পাঠের পর সাধারণত বিলগুলোকে কোনো কমিটির কাছে পাঠানো হয়। বিলের ছোটখাটো পরিবর্তন ছাড়া ব্রিটেনে কমিটিগুলো বিলের মৌলিক নীতিগত পরিবর্তনের সুপারিশ করে না।
৬. গঠনগত পার্থক্য : মার্কিন কংগ্রেসের উভয়কক্ষের সরকার ও বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত কমিটিগুলোর কমিটি নামক একটি উচ্চতর কমিটি কংগ্রেসের কমিটিসমূহের সদস্যদের নিযুক্ত করে। ব্রিটেনে কমন্সসভার বিভিন্ন কমিটির সদস্যগণ একটি মনোয়ণ কমিটি'র দ্বারা মনোনীত হন।
৭. মার্কিন কমিটিগুলোর দলীয় ভিত্তি : মার্কিন কংগ্রেসের কমিটিগুলো দলীয় ভিত্তিতে গঠিত হয়। কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল কমিটিগুলোতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখে।
অর্থাৎ দলের সদস্যগণ দলীয় ভিত্তিতে মনোনীত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কক্ষ কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হন।
৮. সংখ্যাগত পার্থক্য : ব্রিটিশ কমন্সসভায় স্থায়ী কমিটিগুলোর তুলনায় মার্কিন প্রতিনিধি কংগ্রেসের কমিটিগুলোর সংখ্যা তুলনামূলক বিচারে অনেক বেশি।
৯. প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে : মার্কিন শাসনব্যবস্থায় কমিটিগুলোর গুরুত্ব ও কর্তৃত্বের কারণে কংগ্রেসের সদস্যদের মধ্যে কমিটির সদস্যপদ লাভের জন্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যায়।
ব্রিটেনে কমিটিগুলোর গুরুত্বহীনতার জন্য পার্লামেন্টের সদস্যদের মধ্যে কমিটির সদস্য হওয়ার ব্যাপারে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যায় না ।
১০. প্রয়োগ ও প্রভাব : ব্রিটেনে কমিটিসমূহের সভাপতিদের কার্যকরীভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ অত্যন্ত সীমাবদ্ধ ।
অপরদিকে মার্কিন কংগ্রেসের কমিটিসমূহের সভাপতিগণই কক্ষের নেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন। তারা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ ও প্রভাব বিস্তারের যথেষ্ট সুযোগ পান।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ক্ষমতা ও গুরুত্বের দিক থেকে বিচার করলে মার্কিন কংগ্রেসের কমিটিসমূহের অবস্থান ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কমিটিগুলোর অনেক উপরে।
অনুসন্ধান ও রিপোর্ট প্রদান ছাড়া ব্রিটিশ কমন্সসভার কমিটিগুলোর আর তেমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন ও ব্রিটিশ কমিটি ব্যবস্থা তুলনামূলক সম্পর্ক আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।