মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর |
মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর
- অথবা, মার্কিন নাগরিকদের অধিকার কী কী? ব্যাখ্যা কর ।
- অথবা, মার্কিন নাগরিকদের অধিকারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দাও ৷
উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন সংবিধানের প্রথম দশটি সংশোধনই হলো নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহের মূল উৎস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত মূল বিষয়সমূহ এই প্রথম দশটি সংশোধনের মধ্যেই নিহিত আছে।
এই সংশোধনগুলোতে বিষয়গত এবং পদ্ধতিগত উভয় ধরনের অধিকার আলোচনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাছাড়া সংবিধানের অন্যান্য সংশোধন এবং বিভিন্ন সময়ে আদালতের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মার্কিন জনগণের গুরুত্বপূর্ণ কতকগুলো অধিকার স্বীকৃত হয়েছে।
→ মার্কিন নাগরিকের অধিকারসমূহ : প্রত্যেক দেশের নাগরিকের ন্যায় মার্কিন নাগরিকও কিছু অধিকার ভোগ করে থাকে। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
১. ধর্মীয় স্বাধীনতা : উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ধর্মাচরণ ও ধর্ম প্রচারের অধিকারের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনের স্বীকৃত অধিকার এবং চতুর্দশ সংশোধনের দ্বারা অঙ্গরাজ্যগুলোর উপর বিধিনিষেধ আরোপের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার সুদৃঢ় হয়েছে।
মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনে বলা হয়েছে যে, কংগ্রেস আইন প্রণয়ন করে কোনো ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না অথবা স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না।
২. বাকস্বাধীনতা ও মুদ্রাযন্ত্রের স্বাধীনতা : উদারনৈতিক | গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে বাক-স্বাধীনতা ও মুদ্রণযন্ত্রের স্বাধীনতার কথা বলা হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের গুরুত্ব অপরিসীম। গণতন্ত্রকে জনমতের অনুগামী শাসনব্যবস্থা বলা হয়।
বাক-স্বাধীনতা ও মুদ্রণযন্ত্রের স্বাধীনতা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মতামত আদান-প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং সুষ্ঠু জনমত গঠনে সাহায্য করে। এই কারণে মত প্রকাশের ও মুদ্রণযন্ত্রের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।
৩. সমবেত হওয়ার ও আবেদন করার অধিকার : সমবেত হওয়ার এবং আবেদন করার অধিকার ও সংবিধানের প্রথম সংশোধনের স্বীকৃত হয়েছে।
বলা হয়েছে যে, জনগণের শান্তি পূর্ণভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার এবং অভিযোগের প্রতিকারের উদ্দেশ্য সরকারের কাছে আবেদন করার অধিকারকে সংকুচিত করে কংগ্রেস কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারবে না।
সংবিধানের | চতুর্দশ সংশোধনের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্ত অন্তসারে অঙ্গরাজ্যগুলো আইনসভার ক্ষেত্রেও এই নিয়ন্ত্রণ কার্যকর হবে।
৪. অস্ত্র রাখার অধিকার : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র রাখার ও বহন করার অধিকার স্বীকৃত। সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনে এ অধিকার স্বীকার করা হয়েছে।
তবে আগ্নেয়াস্ত্রের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং মার্কিন সমাজজীবনে অপরাধ প্রবণতার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে এই অধিকারের গুরুত্ব যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে।
৫. তল্লাশি ও আটকের বিরুদ্ধে অধিকার : মার্কিন নাগরিকদের অযৌক্তিক তল্লাশি ও আটকের বিরুদ্ধে অধিকার স্বীকৃত। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনে এই অধিকার স্বীকৃত হয়েছে।
বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তিকে বা তার ঘরবাড়ি, জিনিস বা কাগজপত্র যুক্তিগত কারণ এবং পরোয়ানা ছাড়া আটক করা যাবে না। ম্যাজিস্ট্রেটের সই করা পরোয়ানা ছাড়া কোনো ব্যক্তির সম্পত্তির তল্লাশি করার এখতিয়ার পুলিশ কর্মচারীর নেই।
৬. সম্পত্তির অধিকার : সম্পত্তির অধিকার মার্কিন সংবিধানে স্বীকৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিষ্ঠিত নাগরিক অধিকার। মার্কিন সমাজব্যবস্থার ধনতান্ত্রিক ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী ধ্যানধারণার পরিপ্রেক্ষিতে সম্পত্তির অধিকারের তাৎপর্য সহজেই অনুধাবন করা যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তির সম্পত্তি অর্জন, ভোগ দখল এবং বিক্রনা দানের মাধ্যমে হস্তান্তরের অধিকার সংবিধাে স্বীকৃত। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনে বলা হয়েছে যে, কংগ্রেস আইনের যথারিহিত পদ্ধতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে তার জীবন, স্বাধীনতা ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না।
৭. অভিযুক্ত ব্যক্তির অধিকারসমূহ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্য কতকগুলো স্বীকৃত অধিকার আছে। এই সমস্ত নাগরিক অধিকার পুলিশের ক্ষমতার উপর সীমা আরোপ করে থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বার্থরক্ষার প্রাথমিক রক্ষাকবচ হলো বন্দি প্রত্যক্ষীকরণের লোক। আটক বেআইনি-বিবেচিত হলে আদালত সেই ব্যক্তিকে মুক্তির আদেশ দিতে পারে।
৮. সৈন্যের অবস্থান বিরোধী অধিকার : সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনে সৈন্যের অবস্থান বিরোধী অধিকার স্বীকার করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, শান্তির সময়ে গৃহস্বামীর সম্মতি ছাড়া তাঁর বাসস্থানে কোনো সৈন্যের অবস্থানে ব্যবস্থা করা যাবে না। তবে যুদ্ধের সময় আইনানুসারে সৈন্যের অবস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে।
৯. আইনে সমান সংরক্ষণের অধিকার : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনের সমান সংরক্ষণের অধিকার স্বীকৃত। সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনে মার্কিন নাগরিকদের আইনের দ্বারা সমানভাবে সংরক্ষিত হওয়ার অধিকার স্বীকার করা হয়েছে।
অর্থাৎ সকলের ক্ষেত্রে। সমানভাবে আইন প্রযুক্ত হবে। তবে আর্থিক ক্ষেত্রে সাম্যের অস্তিত্ব ব্যতিরেকে এই অধিকারের যথাযথ প্রয়োগ অসম্ভব বলে বিবেচিত হয়। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনের দাসত্ব ও অস্বেচ্ছাপ্রণোদিত দাসত্বের অবসানের কথা বলা হয়েছে।
১০. ভোটাধিকার : ভোটাধিকার হলো গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাধিকারের ক্ষেত্রে সাম্যনীতি স্বীকৃত হয়েছে।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন অনুসারে জাতি, ধর্ম, বর্ণ অথবা পূর্বদাসত্বের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কোনো অঙ্গ রাজ্য নাগরিকদের ভোটাধিকার অস্বীকার বা সংকুচিত করতে পারবে না।
১৯২০ সালে গৃহীত সংবিধানের ঊনবিংশ সংশোধন অনুসারে নারীপুরুষ ভেদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কোনো অঙ্গরাজ্য কারও ভোটাধিকার অস্বীকার করতে পারবে না।
১১. বিনা বিচারে দণ্ড দেওয়ার ক্ষমতা : হল 'বিল অব অ্যাটেন্ডার' হলো এক ধরনের আইন। এই আইনের সাহায্যে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতের সংরক্ষণ থেকে বঞ্চিত করা যায় এবং সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তির সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যায়।
সরকারের এই ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করার জন্য মার্কিন সংবিধানে রাষ্ট্রদ্রোহের সংজ্ঞা এবং এই অভিযোগ উত্থাপনের নিয়ম পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন নাগরিকের অধিকার রক্ষায় মার্কিন সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
মার্কিন সংবিধানে মার্কিন নাগরিকের অধিকার সম্বন্ধে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। মার্কিন নাগরিক সচেতন। তবে মার্কিন নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রত্যয় ঘটলে নাগরিকগণ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন নাগরিকদের অধিকারসমূহ আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।