গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো |
গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো
- অথবা, গণতন্ত্রের বিভিন্ন দিক আলোচনা কর।
- অথবা, গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা কর।
- অথবা, গণতন্ত্রের কী কী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়? বিস্তারিত লেখ।
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বে গণতন্ত্র একটি জনপ্রিয় শাসনব্যবস্থা। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে গণতন্ত্র শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। ধীরে ধীরে সময়ের প্রেক্ষিতে গণতন্ত্র আধুনিক অবস্থায় রূপ নিয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অন্য কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে এত সমালোচনার ঝড় উঠেনি। প্রাচীন গ্রিক দেশেই গণতন্ত্রের প্রথম সূচনা।
বাংলায় খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে হিরোডোটাস গণতন্ত্র শব্দটি ব্যবহার করেন।ও গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আধুনিককালে গণতন্ত্র হলো সর্বোৎকৃষ্ট শাসনব্যবস্থা।
পণতন্ত্র জনগণের কথা বলে। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটে। গণতন্ত্রের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে কতিপয় বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠে। যা নিচে আলোচনা করা হলো :
১. নিয়মতান্ত্রিকতা : গণতন্ত্রের প্রথম দিক হলো নিয়মতান্ত্রিকতা। পণতন্ত্র নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিয়মতান্ত্রিকতায় বিশ্বাস করে।
এ ধরনের শাসনব্যবস্থা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সরকার বাছাই করে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকার পরিবর্তন হয়। নিয়মতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা একটি সুষম শাসনব্যবস্থা।
২. গণসার্বভৌমত্ব : গণতন্ত্রের মৌলিক দিক হলো গণসার্বভৌমত্ব। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। প্রাচীনকালে রোমে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা স্বীকার করা হয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করে।
৩. বহুদলীয় ব্যবস্থা : গণতন্ত্র একটি বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো জনগণ ও রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দল হলো গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি। বহুদলীয় ব্যবস্থায় গণতন্ত্র চর্চা করে এবং এর মূল্যবোধ সম্পর্কে অবহিত করে।
৪. প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটাধিকার : প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটাধিকার গণতন্ত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গণতন্ত্রের প্রাপ্ত বয়স্কদের ভেটাধিকার স্বীকৃত। গণতন্ত্রে ভোটাধিকার একটি মূল্যবান অধিকার।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটাধিকার স্বীকৃত। ফলে নির্বাচনে প্রতিনিধি বাছাই করা সহজ হয়।
৫. আইনের অনুশাসন : আইনের অনুশাসন গণতন্ত্রের একটি মৌলিক ভিত্তি। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
আইনের অনুশাসন ব্যতীত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও দেশে ন্যায়বিচার, প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলেই আইনের দৃষ্টিতে সমান।
৬. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় বিচার বিভাগকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রাখা হয়।
বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পায়। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়।
৭. সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন : গণতন্ত্র হলো সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনব্যবস্থা। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দল সরকার গঠন করে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দল নেতৃত্বস্থানীয় সদস্যদের নিয়ে সরকার গঠন করে।
৮. জনমতের প্রাধান্য : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের প্রাধান্য স্বীকৃত। কারণ গণতন্ত্রের জনগণ হলো সকল ক্ষমতার উৎস। গণতন্ত্র হলো সর্বজনীন শাসনব্যবস্থা।
জনমত হলো গণতন্ত্রের প্রাণস্বরূপ। এ শাসনব্যবস্থাকে জনমতের উপর প্রতিষ্ঠিত সরকার বলা হয়। এ ধরনের ব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
৯. দায়িত্বশীলতা : গণতন্ত্র হলো একটি দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা। এ শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত।
তারা জনগণের নিকট দায়ী থাকে। জনপ্রতিনিধি তাদের কাজের জন্য জনগণের নিকট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী থাকে। দায়িত্ববোধ শাসনব্যবস্থাকে গতিশীল করে।
১০. গঠনমূলক সমালোচনা : গঠনমূলক সমালোচনা গণতন্ত্রের একটি বিশেষ দিক। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনগণের সমালোচনা করার সুযোগ থাকে।
শুধু জনগণ নয়, বিরোধী দলও সরকারের সমালোচনা করে থাকে। সরকারের সমালোচনা করলে সরকার যথার্থভাবে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয় ।
১১. স্বার্থ সংরক্ষণ : স্বার্থসংরক্ষণ গণতন্ত্রের একটি মৌলিক দিক। গণতন্ত্রে জনগণ হলো সকল ক্ষমতার উৎস, জনগণকে কেন্দ্র করে শাসনব্যবস্থা আবর্তিত।
এ শাসনব্যবস্থায় জাতি, ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সকলের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে। সকলের স্বার্থ সংরক্ষিত হলে নাগরিক অধিকার সুসংহত হবে।
১২. সমন্বয় : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সমন্বয়ের বিধান রয়েছে। এ শাসনব্যবস্থায় বহুধরনের লোক থাকে। তাদের মধ্যে মতের পার্থক্যও থাকে।
কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকার বিভিন্ন দল ও মতের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা রক্ষার চেষ্টা করে। কেননা সমন্বয় ও সহযোগিতা ছাড়া গণতন্ত্র ব্যর্থ ।
১৩. সাম্য : সাম্য গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। সাম্য গণতন্ত্র সুরক্ষায় অত্যন্ত প্রহরীর ন্যায় ভূমিকা রাখে। সাম্য ও স্বাধীনতার মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হলে গণতন্ত্রের পথ উন্মুক্ত হয়। তাই সাম্য গণতন্ত্র রক্ষায় সহায়তা করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ গণতন্ত্রের মৌলিক দিক। এগুলো জনগণের সাথে সম্পৃত্ত। এগুলোর কোনো একটিকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্র কল্পনা করা যায় না।
এগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের মূল পরিচয় নিহিত। সুতরাং গণতন্ত্র সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভের জন্য এগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন সম্ভব নয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। যদি তোমাদের আজকের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।