চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর |
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের উপকারী দিকগুলো উল্লেখ কর
উত্তর : ভূমিকা : চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হলো একটি চুক্তি । এই চুক্তির সাহায্যে জমিদাররা জমির মালিক হয়। জমিদাররা প্রজার কাছ থেকে খাজনা আদায় করে সরকারকে দিবেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে বাংলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পকারখানা উন্নতি লাভ করে। সমাজে নতুন জমিদার শ্রেণির উদ্ভব হয়। বাংলার প্রজাদের আর্থিক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে। সরকার দেশের রাজস্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে বাজেট প্রণয়ন করে ।
→ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল : চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হলো একটি চুক্তি। এই চুক্তির ফলে জমিদাররা জমির মালিকানা লাভ করেন। বাংলার কৃষকরা ভূমিহীন কৃষকে পরিণত হয়। নিম্নে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ করা হলো :
১. জমিদারের ক্ষমতা বৃদ্ধি : জমিদাররা যথেষ্ট ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন। জমিদাররা নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনীর সাহায্যে প্রজাদের নিকট থেকে খাজনা আদায় করতেন। জমিদার মালিক টাকার বিনিময়ে জমি বিক্রি করতে পারতেন । তারা সমাজে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।
২. রাজস্ব বৃদ্ধি : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে জমিদারদের রাজস্ব বৃদ্ধি পায়। জমিদারগণ কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করেন। এছাড়া অনাবাদি জমি চাষযোগ্য করে তোলেন। জমির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সার ও ওষুধের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া কৃষকদের দিয়ে অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য অর্থকরী ফসল চাষাবাদ করান । ফলে জমিদারদের রাজস্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পায় ।
৩. সরকার সমর্থন গোষ্ঠী : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে সরকার সমর্থনগোষ্ঠী গঠিত হয়। জমিদার যে লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করে তা সরকারের সমর্থনে কাজ করেন। বিভিন্ন জায়গার বিদ্রোহ দমনে জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনী কাজ করে থাকে। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ দমনে জমিদার বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
৪. উন্নয়ন সাধন : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে বাংলার উন্নয়ন সাধিত হয়। জমিদাররা বাংলার রাস্তাঘাট সংস্কার করেন । পুকুর খনন করেন, স্বাস্থ্যখ্যাত উন্নয়ন করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। চাষাবাদের জন্য অনাবাদি জমি সংস্কার করেন। কৃষকদের উন্নয়নে জমিদাররা সহায়তা করেন ।
৫. ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন : বাংলার উন্নয়নে জমিদার ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগ করেন। এছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ক্ষুদ্র শিল্পকারখানায় শ্রমিকদের কাজ করার সুযোগ দেন। ফলে শিল্প উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়।
৬. দক্ষতা বৃদ্ধি : কোম্পানির কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। কোম্পানি কর্মচারীদের দ্বারা প্রজাদের নিকট থেকে রাজস্ব আদায় করা হয়। এছাড়া জমিদারদের কাজে কর্মচারীদের দক্ষ করে তোলা হয়।
৭. বাজেট প্রণয়ন : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে জমিদারদের আয় বৃদ্ধি পায়। এর ফলে দেশের উন্নয়নের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করা হয় তা সহজে বাস্তবায়ন করা হয়। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব অনুযায়ী বাজেট প্রণয়ন করা হয়। জমিদারদের দেওয়া রাজস্ব সরকারের অর্থভান্ডার সমৃদ্ধ করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে বাংলার নতুন জমিদার প্রথার উদ্ভব হয়। জমিদার শ্রেণি প্রজাদের উপর অত্যাচার করে খাজনা আদায় করতো। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে জমিদাররা জমির গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য কাজ করেন।
অনাবাদি জমি সংস্কার করে চাষের জন্য উপযোগী করে তোলে । এছাড়া জমিদাররা তাদের যাতায়াতের জন্য রাস্তাঘাট নতুন করে তৈরি করেন ও পুরনো রাস্তাঘাট সংস্কার করেন। জমিদাররা উন্নত ফসল চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতেন ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর । যদি তোমাদের আজকের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল উল্লেখ কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।