ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর |
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর
- অথবা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি সম্পর্কে বর্ণনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : ব্রিটেনে সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত বা প্রধানমন্ত্রীই শাসন ক্ষমতার প্রকৃত অধিকারী। বর্তমানে ব্রিটেনে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী বলতে প্রধানমন্ত্রীকেই বুঝায়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ ধীরে ধীরে বিবর্তন লাভ করে বর্তমান পর্যায়ে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত ক্ষমতা ও মর্যাদা ভোগ করেন এবং ব্যাপক দায়িত্ব পালন করেন।
তবে তার ক্ষমতা ও কার্যাবলি প্রথাগত ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। মূলত সাংবিধানিক রীতিনীতি এবং প্রথাগত আইনই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার উৎস।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি : ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি ব্যাপক। নিচে তার ক্ষমতা ও কার্যাবলির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হলো :
১. সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে : প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে ক্ষমতায় আসেন। তার দলের নেতৃত্বপদ হতে অপসারণ না করে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পন হতে অপসারণ করা অসম্ভব।
তিনিই সাধারণ নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দান করে একে বিজয়ী করেছেন- এ বাস্তবতা তার ব্যক্তিত্বকে বিশেষভাবে জনপ্রিয় করে তুলে।
প্রধানমন্ত্রী দলের জনপ্রিয়তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষভাবে যত্নশীল রাখে। দলের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করে একটি ঐক্যবদ্ধ টিম হিসেবে দলকে পরিচালনার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর।
২. কম সভার নেতা হিসেবে : সাধারণত প্রধানমন্ত্রীকেই কমন্সসভার নেতা ও মুখপাত্র হিসেবে মনে করা হয় যদিও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কাজের চাপ হ্রাস করার জন্য কমন্সসভার প্রাত্যহিক কার্য পরিচালনার তার অন্য কোনো মন্ত্রীর উপর ন্যস্ত করা হয়, তথাপি প্রধানমন্ত্রীই তার দলের নেতা হিসেবে কমন্সসভা পরিচালনার চূড়ান্ত দায়িত্ব বহন করেন।
৩. মন্ত্রিপরিষদের নেতা হিসেবে : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের নেতা। ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজা বা রানি মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ করেন। পরিষদের সদস্যদের নিয়োগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাই চূড়ান্ত। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকেই গ্রহণ করতে পারেন।
৪. নিয়োগ সংক্রান্ত : তত্ত্বগতভাবে রাজা বা রানি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী নিয়োগ করতে পারলেও কার্যত তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমেই নিয়োগ করেন। বস্তুত রাষ্ট্রের স্থায়ী কর্ম সচিব, অধস্তন কর্ম সচিবসহ অন্যান্য কর্মচারী ও উর্ধ্বতন বিচারপতি প্রমুখ ব্যক্তিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর মতামতকেই সাধারণত রাজা বা রানি মেনে নেন।
৫. শাসন বিভাগের প্রধান : ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ব্রিটিশ শাসন বিভাগের প্রধান। তিনি সকল বিভাগের কার্যকারিতা নিশ্চিত করেন। সকল দন্তরে সরকারি নীতি প্রয়োগ হচ্ছে কিনা সে দিকে তিনি নজর রাখেন। এসব ক্ষেত্রে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে সমাধানের চেষ্টা করেন।
৬. কেবিনেট গঠন : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেবিনেট গঠনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি অন্যান্য মন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন করে নেন এবং শাসন বিভাগের দক্ষতার উপর নজর রাখেন।
৭. কেবিনেটের নেতা হিসেবে : সাংবিধানিক রীতিনীতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সমপর্যায়ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম বা অগ্রগণ্য। বাস্তবে তিনি কেবিনেটের স্রষ্টা, প্রধান এবং নেতা।
প্রধানমন্ত্রী কেবিনেটের মধ্যমণি হলেও অন্যান্য মন্ত্রী তার সমমর্যাদাসম্পন্ন সহকর্মী অধীনস্থ কর্মচারী নয়।
কিন্তু বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী যে ব্যাপক ক্ষমতা ভোগ করেন, তাতে এ বর্ণনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিপত্তি ও মর্যাদার যথেষ্ট পরিচায়ক নয়। প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরেই কেবিনেটের উত্থান পতন ঘটে থাকে।
৮. সমন্বয়সাধনকারী প্রধানমন্ত্রী : কেবিনেট সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং সরকারি নীতির সমন্বয়সাধন করেন। কেবিনেটের কর্মসূচি কি হবে না হবে তা তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন।
এবং বিভিন্ন বিভাগ কর্তৃক অনুসৃত নীতির মধ্যে বিবাদ বাঁধলে তার মীমাংসা করে থাকেন। কেবিনেট সভায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের বক্তব্য শোনেন এবং নিজের মতামত স্থির করেন।
৯. মন্ত্রীদের অপসারণ : প্রধানমন্ত্রী কেবলমাত্র মন্ত্রীদের নিয়োগই করেন না। তিনি তাদের অপসারণও করেন এবং যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন। মন্ত্রীগণ যখন কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ করেন, তখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করেন।
১০. সংযোগ রক্ষাকারী : প্রধানমন্ত্রী রাজা এবং কেবিনেটের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী কোনো কোনো সময় মন্ত্রীরাও তাদের নিজস্ব বিভাগের সমস্যা ব্যাপারে রাজার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন।
১১. রাজা বা রানির পরামর্শদাতা : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হলেন রাজা বা রানির ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা। তিনি গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ ও সম্মান সূচক উপাধি বণ্টনে রাজা বা রানিকে পরামর্শ দেন।
তার পরামর্শ অনুযায়ী রাজা বা রানি রাষ্ট্রদূত, বাণিজ্যিক প্রতিনিধি এবং বিচারপতিদের নিয়োগ করেন। প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বান ও স্থগিত ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শমতোই রাজা কমপসভা ভেঙে দিতে পারেন। সর্বোপরি, সকল ক্ষেত্রে রাজা বা রানিকে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ নিয়ে থাকেন।
১২. আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও পররাষ্ট্র নীতিনির্ধারণের ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা, অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক সৃষ্টি করা, আন্তর্জাতিক ব্যাপারে ব্রিটিশ অভিমতকে গ্রহণযোগ্য করে তোলা, শত্রুর বিরুদ্ধে মিতালি ও যৌথ আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করা, আন্তর্জাতিক বোঝাপড়া সৃষ্টি করা প্রভৃতি কারণে প্রধানমন্ত্রীকে মাঝে মাঝে বিদেশ সফর করতে হয়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সর্বাধিক ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। তাকে কেন্দ্র করেই ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। তিনি হলেন ব্রিটেনের প্রকৃত শাসক প্রধান। বর্তমানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আধিপত্য বেড়েই চলেছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।