ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে |
ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে
- অথবা, ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি সম্পর্কে লেখ।
- অথবা, ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের বিকাশসমূহ আলোচনা কর।
- অথবা, ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলের বিকাশ হয় কিভাবে? তা লেখ।
উত্তর : ভূমিকা : পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থার মাতৃভূমি গ্রেট ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা। দলীয় ব্যবস্থা ছাড়া পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা অচল।
ব্রিটেনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব একদিনে হয়নি। ব্রিটেনের অনন্য শাসনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মতো রাজনৈতিক দল ব্যবস্থাও ঐতিহাসিক ক্রমবিবর্তনের ফল।
→ রাজনৈতিক দলের উদ্ভব : ব্রিটেনে কিভাবে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো :
১. ব্রিটেনের দলব্যবস্থার পরিক্রমা : আধুনিক অর্থে ব্রিটেনের সুস্পষ্ট রাজনৈতিক মতবাদের ভিত্তিতে দলীয় ব্যবস্থার উদ্ভব উনিশ শতকের আগে হয়নি।
আঠারো ও উনিশ শতকের গোড়ার দিকে বিভিন্ন সংসদীয় গোষ্ঠীর কার্যকলাপ আইনসভার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। মহারানি প্রথম এলিজাবেথের শাসনামলে দলীয় রাজনীতির সূত্রপাত ঘটলেও স্টুয়ার্ট মাজাদের আমলেই এটি সমধিক প্রসিদ্ধি লাভ করে ।
২. হুইগ ও টোরী দল : পার্লামেন্টের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হলে মতাদর্শগত বিচারে হুইগ ও টোরী নামে দুইটি দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘটে। মূলত রাজা ৩য় ডোমসকে সমর্থন করা না করার ভিত্তিতেই হুইগ ও টোরী দলের উদ্ভব হয়েছে।
হুইগ দল সমকালীন উদীয়মান বণিক শ্রেণির সমর্থনপুষ্ট ও পার্লামেন্টের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করার পক্ষে। অপরদিকে, টোরী দল অভিজাত ও সামস্ত শ্রেণির সমর্থনপুষ্ট অবধি সমর্থক।
৩. উদারনৈতিক ও রক্ষণশীল দল : ১৮৩২ সালে একটি সংস্কার আইন পাস হওয়ার পর হুইগ ও টোরী দলের নাম পরিবর্তিত হয়ে উদারনৈতিক ও রক্ষণশীল দল নাম হয়। ব্রিটেনের রাজনীতিতে উনিশ শতক জুড়ে এই দুইটি দলের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
ক্রমশ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুবিন্যস্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা, প্রতিনিধিত্বমূলক সদস্য সংস্থা সুনির্দিষ্ট মতাদর্শভিত্তিক কর্মসূচি প্রভৃতি প্রবর্তিত হতে দেখা যায়।
৪. উদারনৈতিক দলে ভাঙন : ১৮৬৭ সালের সংস্কার আইনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটেনের কমন্সসভায় দ্বি-দল ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়। আয়ারল্যান্ডকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রদানের প্রথাকে কেন্দ্র করে উদারনৈতিক ও রক্ষণশীল দলের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য হয়।
গাডস্টোন এর মতে, হোমরুল বিলের ভিত্তিতে উদারনৈতিক দলের মধ্যে তীব্র ভাঙনের ভেতরকার রক্ষণশীল সদস্যরা দলত্যাগ করে রক্ষণশীল দলে যোগ দেন। পরে এই দলের প্রগতিশীল অংশ শ্রমিক দল হলে উদারনৈতিক দল হীনবল হয়ে পড়ে।
৫. শ্রমিক দলের উদ্ভব : বিশ শতকের শুরুতেই ব্রিটেনের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক দলের উদ্ভব হয়। পার্লামেন্ট বেশি | সংখ্যক শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধি পাঠানোর উদ্যোগকে সামনে রেখে ৩টি সমাজতান্ত্রিক দল সংগঠন এবং ৬৪টি শ্রমিক সংঘ লক্ষ করা যায়।
আর এ সংখ্যাগুলো মিলে একটি শ্রমিক প্রতিনিধি সমিতি গঠন করে। ১৯০৬ সালে এর নাম পরিবর্তন করে 'শ্রমিক দল' রাখা হয়।
৬. ব্রিটেনের বর্তমান দলব্যবস্থা : বর্তমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রক্ষণশীল দল এবং শ্রমিকদলের প্রাধান্য সুপ্রতিষ্ঠিত। তবে উদারনৈতিক দল এখনো টিকে আছে। এখনো রক্ষণশীল ও শ্রমিক দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিলক্ষিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রিটেনের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দলের আবির্ভাব একদিনে তৈরি হয়নি। এটি ঐতিহাসিক বিবর্তনের ফল। বর্তমানে এখানে দ্বি-দল। ব্রিটেনের উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক চর্চায় রাজনৈতিক দলের গুরুত্ব অপরিসীম।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে। যদি তোমাদের আজকের ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয় কীভাবে পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।