বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.
বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর |
বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর
- অথবা, বলবনের "Blood and iron policy" সম্পর্কে কি জান?
- অথবা, বলবনের "Blood and iron policy" সম্পর্কে ধারণা দাও ।
- অথবা, সুলতান বলবনের 'রক্তপাত ও কঠোর নীতি' সম্বন্ধে লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : গিয়াসউদ্দিন বলবন ভারতে মুসলিম শাসন ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি সুদীর্ঘ ৪০ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমের দ্বারা দিল্লি সালতানাতের ভিত্তি সুদৃঢ় করে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ঐতিহাসিক স্টানলি লেনপুল বলেন, “বলবন দিল্লির সুলতানদের দীর্ঘ তালিকায় সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনিই ভারতের ইতিহাসে 'রক্তপাত ও কঠোর নীতি' গ্রহণ করেন ।
→ বলনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি : সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন তার শাসনকালে যেমন ছিল নরম তেমনি ছিল শক্ত। নিম্নে তার 'Blaod & Iron Policy' তথা 'রক্তপাত ও কঠোর নীতি' সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন : 'রক্তপাত ও কঠোর নীতির' বাস্তবায়নে বলবন সর্বপ্রথম সরকারের গৌরব, মর্যাদা ও ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করেন। ষড়যন্ত্র নির্মূল ও বহিঃশত্রুর অভিযান প্রতিহত করার জন্য তিনি একটি শক্তিশালী ও সুদক্ষ সৈন্যবাহিনী গঠনে সচেষ্ট হন।
২. আমির ও মালিকদের প্রতি কঠোর নীতি : বলবন বিদ্রোহী আমির ও মালিকদের প্রভাব ধ্বংসকল্পে 'রক্তপাত নীতি' গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনে শত্রু নিধনে কুণ্ঠিত হননি। এই নীতিতে তিনি “চল্লিশ চক্রের অপরিসীম ক্ষমতাকে নষ্ট করেন।
৩. গুপ্তচর প্রথা : বলবন রাজ্যের দায়িত্বকে সুনিশ্চিত করার জন্য একটি শক্তিশালী ও সুগঠিত গুপ্তচর বাহিনী গঠন করেন। তাদের মাধ্যমে সরকারি কার্যকলাপের ওপর কঠোর দৃষ্টি রাখতেন।
৪. রাজকোষ পুনর্গঠন : অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য বলবন রাজকোষ পুনর্গঠন করে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনয়নের প্রয়াস চালান ।
৫. ন্যায়পরায়ণতা : পক্ষপাত নীতি বর্জন করে বলবন সুবিচার করেন । তার ভৃত্যকে হত্যার দায়ে বদাউনের ভূ-স্বামীকে হত্যার নির্দেশ দেন। ঈশ্বরী প্রসাদের মতে, সুলতানের ন্যায় বিচারের জন্য লোকে এতই ভীতসন্ত্রস্ত থাকত যে, কেউ কখনো ভৃত্য ও ক্রীতদাসের প্রতি অসদাচরণ করতে সাহস পেত না ।
৬. রাজতন্ত্র ও সালতানাতের মর্যাদা বৃদ্ধি : রাজতন্ত্র ও সালতানাতের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য তিনি কঠোর নীতি অবলম্বন করেন। যেমন-
প্রথমত, পারসিক আদব-কায়দায় সিজদা ও পাইবস রীতির প্রবর্তন করেন।
দ্বিতীয়ত, রাজসভায় নৃত্যগীত, মদ্যপান প্রভৃতি নিষিদ্ধ করেন ।
তৃতীয়ত, সুলতান রাজকর্মচারী ও আমিরদের জন্য বিশেষ পোষাকের ব্যবস্থা করেন ।
চতুর্থত, নীচু লোকদের নিকট হতে উপহার গ্রহণ ও বাক্যালাপ বন্ধ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গিয়াসউদ্দিন বলবন ‘রক্তপাত ও কঠোর নীতি' গ্রহণ করে লুপ্ত সাম্রাজ্যের মর্যাদা ও কেন্দ্রীয় শাসনের হারানো গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
এজন্য ড. ঈশ্বরী প্রসাদ বলেছেন, “চল্লিশ বছরব্যাপী বলবনের দীর্ঘ কঠোর কার্যক্রম সম্বলিত রাজত্বকাল ভারতবর্ষের মধ্যযুগের ইতিহাসে অনন্য সাধারণ।"
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর । যদি তোমাদের আজকের বলবনের রক্তপাত ও কঠোর নীতি ব্যাখ্যা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।