তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর
তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর |
তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর
তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি সম্পর্কে লিখ
উত্তর : ভূমিকা : তৃতীয় আব্দুর রহমান স্পেনের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক গোলযোগ উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেন স্পেনের মুসলিম ইতিহাসের এই যুগসন্ধিক্ষণে আব্দুর রহমান দৃঢ়তার সঙ্গে এই বিপদের মোকাবিলা করেন। এই চরম রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা নিরসনের জন্য তিনি সর্বপ্রথম সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠন করেন।
তিনি সুকৌশলে জার্মান, ফ্রান্স, ইটালিয়ান প্রভৃতি বেতনভুক্ত সৈন্যদের সমন্বয়ে একটি বিশাল ও শক্তিশালী বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনীর সাহায্যে তিনি অভ্যন্তরীণ সকল বিদ্রোহীদের নির্মূল করেন।
→ অভ্যন্তরীণ নীতি : স্পেনের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ও বিশৃঙ্খলায় যখন স্পেনের ভাগ্যাকাশ মেঘাচ্ছন্ন তখন আব্দুর রহমানের সিংহাসনে আরোহণ স্পেনবাসীর জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। নিম্নে তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি তুলে ধরা হলো :
১. কর্ডোভায় শাস্তি স্থাপন । বিদ্রোহীদের নিকটতম দুর্গ ইসিজা, ৯১৩ খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারি মাসে আব্দুর রহমানের হাজিব বদর শহরটির সামনে উপস্থিত হলে আত্মসমর্পণ করে।
৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭ এপ্রিল তার প্রথম অভিযান ছিল মন্টেলিওনের প্রথম নব মুসলিম ইবন হুযাইল এর বিদ্রোহ দমনের জন্য, হুযাইল ক্ষমা প্রার্থনা করে। বেজার শত্রু বাহিনী পরাজিত করে তিনি গাউডিক্সের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়ে ওমর ইবনে হাফসুনের অনুগামীদের দুর্বার প্রতিরোধের পর ফিনানা শহরটি দখল করেন।
জুভিলেস পদানত করে পার্বত্য ভূমির মধ্য দিয়ে আরও দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী সালব্রেনা অধিকার করে তিনি এ অভিযান সমাপ্ত করেন। এ অভিযানে সামরিক গুরুত্বপূর্ণ ৬৬টি দুর্গ ও ৩০টি স্থান থেকে বিদ্রোহী ও হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের বিতাড়িত করতে সক্ষম হন।
২. সেভিলে শাস্তি স্থাপন : তৃতীয় আব্দুর রহমান ক্ষমতা লাভ করে প্রথমে সেভিলে প্রতাপশালী বনু হাজ্জাজের বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন আহমদ ইবন মাসলামাহ ।
কিন্তু আমিরের বিশাল বাহিনী সমস্ত প্রতিরোধ ধ্বংস করে ৯১৩ খ্রিস্টাব্দে গুয়াদালকুইভার নদীর তীরে সংঘটিত যুদ্ধে শত্রুদের পরাজিত করেন।
আহমদ পরাজিত হয়ে আব্দুর রহমানের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। কারমোনার বিদ্রোহী নেতা মুহম্মদ পর্যুদস্ত হয়ে আত্মসমর্পণ করলে তাকে উজির নিযুক্ত করা হয়। এভাবে সেভিল ও কারমোনায় কর্ডোভার কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
৩. ওমর ইবনে হাফসুনের বিপর্যয় : স্পেনের উমাইয়া শাসনের প্রচণ্ড হুমকিস্বরূপ ওমর ইবনে হাফসুন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। পরপর তিনজন আমিরের শাসনামলে তিনি যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিলেন তার অবসান হয় তৃতীয় আব্দুর রহমানের শাসনামলে ।
তিনি খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হয়ে স্যামুয়েল নাম ধারণ করলে তার প্রতিপত্তি কমে যায় । আমি আব্দুর রহমান তার বিরুদ্ধে সমরাভিযান করে টোলক্স অধিকার করেন।
এভাবে স্যামুয়েলের/ওমর বিন হাফসুনের পতন হয়। তার উত্তরাধিকারী চারজন পুত্র; জাফর, সুলাইমান, আব্দুর রহমান ও হাফস-বোবাস্ট্র দুর্গ সংরক্ষিত করতে পারেননি । আমিরের সেনাবাহিনীর কাছে তার পরাস্ত হয়।
৪. টলেডোর আত্মসমর্পণ : আব্দুর রহমানের বিপর্যয়ের দিনগুলোতে সমগ্র টলেডো অঞ্চলটি কেন্দ্র হতে বিচ্ছিন্ন হয় এবং নাগরিকদের দ্বারা নির্বাচিত নেতাগণের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করতো। এদের কয়েকজন ছিলেন বানুকাসি পরিবারের সদস্য।
এ শহরটি তখন ছালাবা ইবনে আব্দুল ওয়ারিসের অধীনে ছিল। ছালাবা আস্তুরিয়ার খ্রিস্টান রাজার সাথে মৈত্রীসূত্রে আবদ্ধ ছিলেন। ৯৩০ খ্রিস্টাব্দে আব্দুর রহমান মন্ত্রী সাইদ আল মুনজিরের নেতৃত্বে একটি ক্ষুদ্র বাহিনী পাঠালে অভিযানটি শুরু হয়।
অতঃপর জুলাই মাসে বিশাল বাহিনীসহ তিনি আলগডরে শিবির স্থাপন করে সেখানে ‘মদিনাত আল ফাতাহ' (বিজয়ের শহর) নামে একটি ছোট শহর প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। কেননা আব্দুর রহমান জানতেন অবরোধটি দীর্ঘস্থায়ী হবে। টলেডো শহরে প্রবেশ করার সকল রাস্তা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল।
দু'বছর পর খাদ্যভান্ডার নিঃশেষ হয়ে গেলে ক্ষুধার্ত শহরবাসী সন্ধি প্রার্থনা করে। অতঃপর আব্দুর রহমান বিজয় গৌরবে টলেডোতে প্রবেশ করেন। তিনি শহরটিতে সেনা ছাউনি তৈরি করেন ।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আব্দুর রহমানের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি ছিল বিদ্রোহী, সন্ত্রাসী এবং স্বনির্বাচিত নেতাদের নির্মূল করে পুনরায় তার রাজ্যের দৃঢ়তা বিধান করা।
এক্ষেত্রে তিনি কঠোরতা অবলম্বন করে রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। এজন্য তাকে স্পেনের ত্রাণকর্তা হিসেবে অভিহিত করা হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম তৃতীয় আব্দুর রহমানের অভ্যন্তরীণ নীতি আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।