প্রাইভেট ও পাবলিক বলতে কি বুঝ
প্রাইভেট ও পাবলিক বলতে কি বুঝ
- প্রাইভেট ও পাবলিক কী
- নারীর ব্যক্তিগত ও সরকারি অবস্থান কি?
উত্তর : ভূমিকা : নারী প্রশ্নে প্রাইভেট ও পাবলিক এ দুটি ক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক শ্রেণিবিভাজন তথা নারী অধস্তনতা ও পুরুষ আধিপত্যের মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করে। প্রাইভেট ও পাবলিক সামাজিক সম্পর্কের এমন দুটি ক্ষেত্র, যার প্রথমটিতে নারী এবং দ্বিতীয়টিতে পুরুষ যোগ্যতাসম্পন্ন হয়ে উঠে।
আপাতদৃষ্টিতে প্রাইভেট ও পাবলিক এ দুটি ক্ষেত্রে পরস্পরবিরোধী লিঙ্গভিত্তিক শ্রেণি (Sexual class) হিসেবে নারী ও পুরুষ চিহ্নিত করে। প্রাইবেট ক্ষেত্র হচ্ছে পারিবারিক বা গৃহস্থালী ক্ষেত্র। যার স্থান গৃহের ভিতর। অন্যদিকে পাবলিক ক্ষেত্র হচ্ছে সামাজিক ক্ষেত্র। যার স্থান গৃহের বাইরে ।
প্রাইভেট ও পাবলিক বলতে কি বুঝ |
প্রাইভেট : সাধারণত নারীর জন্য নির্ধারিত ক্ষেত্রকে প্রাইভেট বলে বুঝানো হয়েছে। প্রাইভেট ক্ষেত্র বলতে গৃহস্থালীর ক্ষেত্র অথবা সমাজের অধস্তন প্রতিষ্ঠান এবং নারীই হলো ঘরের অভ্যন্তরীণ কাজের জন্য উপযোগী।
এভাবেই নারীকে প্রাইভেট ক্ষেত্র চিহ্নিত ও নির্ধারিত করে তাদেরকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখার জন্য চেতনা সৃষ্টি করা । যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য বা কাম্য নয়। পাবলিক : পরিবারের চেয়ে বৃহত্তম, মহত্তম ও উচ্চতর, সমাজ ব্যবস্থাকে বুঝানো হয় পাবলিক।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মনে করে সামাজিক ক্ষেত্রে সকল কর্মকাণ্ড ও অধিকার ভোগের অধিকার একমাত্র পুরুষের। অর্থাৎ, পুরুষের জন্য ঘরের বাহিরের উচ্চতর ক্ষেত্রসমূহ নির্ধারিত। আর সমাজের সকল নাগরিক অধিকারসমূহ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরুষেরাই একমাত্র প্রাপ্য ।
কিন্তু দেশ, সমাজ এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বৃহত্তম অংশ সম্পাদিত হয় নারীর ভূমিকার মাধ্যমে। অথচ নারীর এই অবদানগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত নয় অপর দিকে রাষ্ট্র নারীকে পুরুষের অধীনস্থ ও নির্ভরশীল হিসেবে চিহ্নিত করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উদারপন্থি নারীবাদী তত্ত্ববিদদের মানদণ্ডে নারীকে মূল্যায়িত করলেও প্রাইভেট পাবলিক ধারণায় এখনও নারী-পুরুষের শ্রমের মূল্যায়ন হচ্ছে। পরিকল্পিত সংগঠন, নির্দেশনা, নিয়োগ, সমন্বয়, রিপোর্টিং এবং অর্থায়ন ইত্যাদি বিষয় পুরুষের সাথে সম্পৃক্ত।
নারীর সাথে নয়। এ সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিবর্তন করে নারীকে মূল উন্নয়ন স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে এবং দেশ ও জাতি গঠনে অবদান রাখার সুযোগ দিতে হবে।
মনোভাবের কারণে রাজনীতিতে নারী অংশগ্রহণ বিস্তৃত হচ্ছে না এমনকি মৌলবাদীদের আক্রমণের ভয়ে অনেক নারী তাদের রাজনৈতিক অধিকার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করছে না। ফলে নারীর ক্ষমতায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।