জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর
জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর |
জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর
জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে লিখ
উত্তর : ভূমিকা : উত্থান-পতন পৃথিবীর একটি চিরন্তন। ঘটনা। স্পেনের ইতিহাসে বানু জাহওয়ারি বংশের উত্থান যেমন বিদ্যুৎ বেগে হয়েছিল তেমনি তার পতন হয় ত্বরিত বেগে।
জাহওয়ারী বংশের প্রতিষ্ঠাতা ইবনে জাহওয়ারের পর তেমন যোগ্য শাসক' না থাকায় তার পতন অনিবার্য হতে থাকে । অবশেষে ১১৭০ খ্রিস্টাব্দে এই বংশের পতন ঘটে ।
→ জাহওয়ারি বংশের পতন : জাহওয়ারি বংশের উত্থান যেমন নাটকীয়ভাবে ঘটেছিল তেমনি তার পতনও অতি দ্রুত ঘটে। নিম্নে জাহওয়ারি বংশের পতনের কারণ আলোচনা করা হলো :
১. অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র : কর্ডোভা অধিকারের উদ্দেশ্যে সেভিলের রাজা মুতাদিদ, আব্দুল মালিক ও ইবনুল সাক্কার মধ্যে বিভেদের বীজ বপন করেন। ফলে ওয়াজির ইবনুল সাক্কা নিহত হয়। ওয়াজিরের প্রতি অনুগত অধিকাংশ অভিজাত ব্যক্তি ও কর্মচারী আব্দুল মালিককে ত্যাগ করে।
পরিত্যক্ত শাসক প্রজাতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছিয়ে ফেলেন। এইভাবে কর্ডোভার অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলার জন্য কর্ডোভা দখল বহিঃশত্রুদের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান ও সময় হয়ে দাঁড়ায় ।
২. টলেডোর মামুন কর্তৃক আক্রমণ : ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে টলেডোর রাজা মামুন কর্ডোভা আক্রমণ করেন। আক্রমণের সময় আব্দুল মালিকের পক্ষে মাত্র ২০০ সৈন্য ছিল। এই স্বল্প সংখ্যক সৈন্যের আনুগত্য সম্পর্কেও সন্দেহ ছিল।
আব্দুল মালিক শত্রু নিধনের জন্য সেভিলের মুতাদিদকে আমন্ত্রণ জানান। ইতিমধ্যে মুতাদিদের মৃত্যু ঘটে। পরে মুতাদিদের উত্তরাধিকারী মুতামিদ আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য আব্দুল মালিককে সাহায্য করেন।
৩. মুতামিদের কর্ডোভা দখল : মূলত মুতামিদ কর্ডোভা অধিকার করার জন্যই আব্দুল মালিককে সাহায্য করেছিলেন। তাই ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি কর্ডোভাকে নিজ অধিকারে নিয়ে আসেন। শত্রু অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য হয় সত্য কিন্তু কর্ডোভাবাসী তাদের প্রভুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং মুতামিদের সাথে যোগদান করে।
মুতামিদ কর্ডোভা অধিকার করে আব্দুল মালিক ও তার বৃদ্ধ পিতাসহ সমস্ত পরিবারকে সাল্টেশের কারাগারে বন্দি করেন। বৃদ্ধ আবুল ওয়ালিদ এই ঘটনার পর চল্লিশ দিন জীবিত ছিলেন। ১০৭৫ খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারি মাসে মুতামিদ তার ভাবি উত্তরাধিকারী আব্বাডকে কর্ডোভার গভর্নর নিয়োগ করেন। মামুন ও মুতামিদ কর্ডোভা দখলের জন্য দীর্ঘ কয়েক বছর যুদ্ধ করেন।
মামুনের ষড়যন্ত্রে কর্ডোভার জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তি ইবনে উক্কাশা নতুন গভর্নর ও তার সেনাপতি মুহাম্মদ বিম মারটিনকে হত্যা করেন। এভাবে মামুন কর্ডোভার ভাগ্যবিধাতা হন কিন্তু উক্কাশা ও মামুনের .বৈরিতার সুযোগ গ্রহণ করে মুতামিদ উক্কাশাকে শায়েস্তা করেন এবং ১০৭৮ খ্রিস্টাব্দে কর্ডোভা পুনঃদখল করেন।
ওয়াদি আল কাবির দখল করে তিনি নিজ শক্তি বৃদ্ধি করেন। এভাবে মামুনের নিকট হতে মুতামিদ বলপূর্বক কর্ডোভা দখল করেন এবং অল্পদিনের মধ্যে কর্ডোভা টলেডোর মামুনের নিকট হতে সেভিলদের অধিকারে চলে যায়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্পেনের রাজতান্ত্রিক চাকায় নিষ্পেষিত স্পেনের অধিবাসীগণ ইবনে জাহওয়ারির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের সুযোগ পায়। শাসক হিসেবে জাহওয়ার ছিলেন একজন যোগ্যতম ব্যক্তি।
স্পেনের জনগণের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয় । চল্লিশ বছরের শাসনকালে স্পেনে জাহওয়ারি বংশ উল্লেখযোগ্য কোনো কৃতিত্ব প্রদর্শন করতে পারেনি।
কিন্তু তার উত্তরাধিকার আব্দুল মালিক ছিলেন একজন অযোগ্য, অদূরদর্শী এবং বিচক্ষণতার অভাব ছিল যথেষ্ট। তার এই দুর্বলতার সুযোগে ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের জাহওয়ারি বংশের পতন ঘটে এবং সেখানে সেভিলের বানু আব্বাড বংশের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জাহওয়ারি রাজবংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।