খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর
খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর |
খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণ গুলো লিখ | খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : স্পেনে গোড়া খ্রিস্টানদের পরিচালিত ধর্মান্ধ আন্দোলন কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই পরিচালিত হয়। তাদের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য মাত্র একটাই ছিল তা হলো স্পেন থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করা।
কেননা স্পেনে মুসলিম শাসনের সুচনা লগ্নেই খ্রিস্টানরা মুসলমান ও মুসলিম শাসনকে মেনে নিতে পারে নাই। অথচ স্পেনে তারা ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রে সমান সুযোগ-সুবিধা লাভ করতো।
তাই স্পেনের গোড়া খ্রিস্টানরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে, মহানবি (সা.) ও আল্লাহর বিরুদ্ধে নানান কটুক্তি করতো এবং আত্মাহুতি দিতো। এটাই ছিল খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলন ।
→ ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণ : মুসলিম বিজয়ের পর স্পেনীয় খ্রিস্টানগণ রাজ্যের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা মুসলমানদের সাথে সমান ভাবে ভোগ করতো। তথাপি নিম্নোক্ত কারণে মুসলমানদের বিরুদ্ধে তথা ইসলাম ধর্ম ও মহানবি (সা.) এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে ।
১. ইসলামের সার্বজনীন জীবনাদর্শ : ইসলামের উদার ও সাম্য নীতির ফলে খ্রিস্টানরা অন্তরঙ্গভাবে মুসলমানদের সাথে মেশার সুযোগ পায়। এতদ্ব্যতীত ইসলাম ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং জীবনদর্শন একদল খ্রিস্টানদের মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে।
ইসলামের সাম্য, স্বাধীনতা, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভ্রাতৃত্বের ফলে সহজসরল জীবন আদর্শের প্রতি অধিকাংশ আকৃষ্ট হয়। এতে গোড়াপন্থি যাজকগণ খ্রিস্টধর্মের বিনাশ এবং নিজেদের স্বার্থের মূলে কুঠারাঘাতের আশঙ্কায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে ও আন্দোলন শুরু করে ।
২. আরবিকরণের প্রভাব : আরব সভ্যতা ও কৃষ্টির চোখ ঝলসানো আলোকে আলোকিত হয়ে এবং তাদের নিজস্ব দর্শন, কাব্য ও কলা শাস্ত্রের লঘুত্ব সম্পর্কে অবগত হয়ে জ্ঞান প্রদীপ্ত খ্রিস্টানগণ আরবদের আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতিকে ব্যাপকভাবে অনুসরণ করতে থাকে।
আরবি ভাষার ও সভ্যতার প্রতি তারা এতই প্রভাবান্বিত হয় যে বাহ্যিক দৃষ্টিতে তারা মুসলমান হয়ে পড়েছিল যদিও অন্তরে তারা খ্রিস্টান ছিল। হিট্টির ভাষায়, “তাদের আরবিকরণ হয়; ইসলামিকরণ নয়।”
এদেরকে স্পেনীয় সমাজে মুজারাব বলা হতো। ফলে অবস্থা এ দাঁড়ায় ৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ ১০০০ জনে একজন খুঁজে পাওয়া বিরল ছিল যে নিজস্ব ভাষায় কথা বলে ।
৩. খ্রিস্টধর্মের দুর্বলতা : স্পেনে গোড়া ও ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্বে স্পেনে দ্রুত ইসলামের বিকাশ ঘটতে থাকে । অন্যদিকে, ‘ভিজি গথ এরিয়ানিজম' এর খ্রিস্টধর্ম তত্ত্বের সাথে ইসলামের সামঞ্জস্যতা খুঁজে পেয়েছিল বলে ইসলামি সভ্যতার প্রতি তারা আকৃষ্ট হওয়ায় স্বভাবতই ধর্মান্ধ খ্রিস্টানদের আঁতে ঘা লাগে ।
৪. মুসলিম বিরোধী মনোভাব : স্পেনের পুরোহিত ধর্মান্ধ খ্রিস্টান অভ্যাসবশতই মুসলমানদের ঘৃণা করতো। তারা মহানবি (সা.) এবং তাঁর শিক্ষা সম্পর্কে সম্পূর্ণ মিথ্যা ধারণা পোষণ করতো।
তারা ইসলামকে রোমান জড়বাদের সমপর্যায়ভুক্ত করে এবং একে শয়তান কর্তৃক জাত পৌত্তলিকতা বলে বিবেচনা করতো। সুতরাং ইহা নিশ্চিহ্ন করার তৎপরতায় তারা নিয়োজিত ছিল।
৫. ধর্মের জন্য শাহাদাত বরণের স্পৃহা : ইসলামের শাহাদাত বরণের গভীর আকাঙ্ক্ষা যেমনভাবে মোজাহিদদেরকে যুদ্ধের দিকে আকৃষ্ট করেছিল ঠিক তেমনি খ্রিস্টানদের মধ্যেও শাহাদাত বরণের স্পৃহা যাজকগণ জাগ্রত করেছিল, যা আন্দোলনে রূপ নেয় ৷
৬. জাতীয়তাবাদী চেতনা : ইউরোপীয় ঐতিহাসিকদের মতে, দ্বিতীয় আব্দুর রহমান ছিলেন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সমর্থক । খ্রিস্টান ও ইহুদি বুদ্ধিজীবীদের আরবদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল না কেননা তারা সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো।
ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে তাদের বিরক্তির মূল সূত্র ছিল আরবদের চরিত্রে তথা আরবদের আভিজাত্যের প্রতি। আরব জাতীয়তাবাদের ফলে যে মোজারাব শ্রেণির সৃষ্টি হয় তাতে তাদের মধ্যেও খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদের জন্ম লাভ হয়। খ্রিস্টধর্ম রক্ষার্থে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ইসলামের বিরুদ্ধে স্বজাতীয় আন্দোলন শুরু করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ধর্মান্ধ আন্দোলনের পিছনে সক্রিয় কোনো কারণ ছিল না তবুও ইহা বিরাট আকার ধারণ করে। দ্বিতীয়ত খ্রিস্টানরা কখনই মুসলমানদেরকে সুদৃষ্টিতে দেখেনি। তারা সবসময়ই চেয়েছে মুসলমানদেরকে তাদের কলোনি বা আধিপত্য ধরে রাখতে।
যাই হোক মুসলমানরা উহাকে কঠোর হস্তে দমন না করলে হয়তোবা তাদেরকে স্পেন ভূমি হতে বিতাড়িত হতে হতো না। তাই বলা যায়, এখানে খ্রিস্টান ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম খ্রিস্টান ধর্মান্ধ আন্দোলনের কারণসমূহ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।