বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর
বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর |
বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর
- বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা কেমন
- সমাজে নারীর অবস্থান বলতে কী বুঝ
উত্তর : ভূমিকা : নারী ও পুরুষ সমাজের অপরিহার্য অংশ। একে অপরের পরিপূরক, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক হচ্ছে নারী । কিন্তু বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীর সামাজিক অবস্থা খুবই শোচনীয় । বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা।
এখানে পুরুষরা নারীদেরকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দিতে চায় না। এছাড়া ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার, নিপীড়ন ও বৈষম্য নারীর সামাজিক অবস্থানকে দুর্বল করে রেখেছে।
→ সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান : নিম্নে সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান আলোচনা করা হলো :
বাংলাদেশের নারীর সামাজিক অবস্থান খুবই ভঙ্গুর। নারীকে সমাজের অর্ধেক হিসেবে গণনা করা হলেও নারীকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। নারীনির্যাতন আমাদের সমাজে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এছাড়া নারী হত্যা, ধর্ষণ, ইভটিজিংসহ অন্যান্য মানবিকতা বিরোধী আচরণের শিকার হচ্ছেন। যা নারীর সামাজিক অবস্থানকে করেছে খুবই করুণ এবং হতাশাব্যঞ্জক ।
→ সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান : নিম্নে বাংলার সমাজে নারীর অবস্থান আলোচনা করা হলো :
১. সামাজিক অবস্থান : সমাজ সুসংহতকরণে ও সামাজিক উন্নয়নে নারীর উল্লেখযোগ্য অবদান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত করুণ। আমরা যদি সমাজের ক্ষুদ্রতম একক পরিবারের দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখতে পাই যে, সেখানে নারীর গৃহস্থালী কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না; বরং নারীকে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশের সমাজে নারীর অবস্থা।
নারী নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি এসিড নিক্ষেপ, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা, শিকার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ধর্ষণ, ইভটিজিং, যৌন হয়রানি, কর্মস্থলে বৈষম্য বাংলাদেশের সমাজে নারীর ভণ্ডগুরু অবস্থানকে নির্দেশ করে ।
২. সামাজিক মর্যাদা : নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক হলেও বাংলাদেশের সমাজে নারীর সামাজিক মর্যাদা ও অবস্থান পুরুষদের চেয়ে নিচু অবস্থান। পুরুষ শাসিত এই সমাজে সর্বাধিক আকাঙ্ক্ষিত হলো পুত্র সন্তান তারপর কন্যা সন্তান।
অনেক ক্ষেত্রে কন্যা সন্তান অনাকাঙ্ক্ষিত, নানা সামাজিক বিধি নিষেধ, কুসংস্কার ও ধর্মীয় অপব্যাখ্যা নারীর জীবনযাত্রাকে করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ । এই সমাজ ব্যবস্থা পুরুষকেই প্রচুর আসনে আসীন করেছে। নারীকে করা হয়েছে পুরুষের সেবিকা হিসেবে ।
৩. পারিবারিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে : পারিবারিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নারীর মতামতকে আমাদের গোঁড়া সমাজে মূল্যায়ন করা হয় না। পুরুষ কর্তাই সবসময় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নারীর উপর চাপিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে নারীর মতামতের তোয়াক্কা করা হয় না।
৪. দুর্বল হিসেবে গণ্য : নারী-পুরুষ সমাজে সমানভাবে অবস্থানের কথা থাকলেও সৃষ্টিগত কারণে শারীরিক গঠনের দোহাই দিয়ে সমাজে নারীর অবস্থানকে দুর্বল হিসেবে গণ্য করা হয়। বলা হয় নারী পুরুষের তুলনায় দৈহিকভাবে দুর্বল, কম মেধা সম্পন্ন ইত্যাদি।
নারী ও পুরুষের মধ্যে শারীরিক কিছু ভিন্নতা আছে, কিন্তু তাদের মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই। উভয়েই মানুষ, একই স্রষ্টার সৃষ্টি, একই মায়ের সন্তান, একই পিতার সন্তান । আমাদের সমাজ ছোটকাল থেকেই নারীদের মানসিকভাবে দুর্বল করে রাখে।
৫. ধর্মের অপব্যাখ্যার শিকার : প্রকৃত ধর্ম ও প্রকৃত ইসলাম নারীকে সমাজের সর্বোচ্চ আসনে আসীন করেছে। কিন্তু কিছু ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী নারীকে তাদের মনগড়া ফতোয়ার শিকার বানিয়েছে। সমাজে প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি এই কাঠ মোল্লাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে এসেছে । ফলে এই পুরুষ শাসিত সমাজের ধর্মীয় অপব্যাখ্যার করুণ শিকার হতে হয় নারীকে।
৬. শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের অনগ্রসরতা : আমরা যদি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখতে পাই যে, পুরুষ শাসিত সেই শিক্ষা ব্যবস্থার নারীদের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ নেই বললেই চলে। পরবর্তীতে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মতো নারী জাগরণের অগ্রপথিকের আবির্ভাবের দরুন এদেশে নারীদের শিক্ষা ব্যবস্থায় অংশীদার কথা হয়।
বর্তমানে নারীদের বাধ্যতামূলক অবৈজ্ঞানিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে নারী অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।
৭. সমাজের উন্নয়নে নারীর অংশীদারিত্ব : বর্তমানে নারীরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে দেশে-বিদেশে অনেক অবদান রাখছে। পুরুষদের সাথে সাথে নারীরাও সমাজের উন্নয়নের অবদান রাখছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্র কর্তৃক এর স্বীকৃতিও পাচ্ছে। কিন্তু সমাজের সর্বস্তরে নারীর অবস্থান এখনও সুসংহত হয়নি ।
উপসংহার : উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশের সমাজে নারীর অবস্থান পূর্বের চাইতে অনেকটা সুসংহত । বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন একজন নারী।
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নকে সুসংহত করা হয়েছে। সমাজের উন্নয়ন নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক অবস্থা আলোকপাত কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।