আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও
আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
স্পেনের মুসলমানদের ইতিহাস, |
আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও
উত্তর : ভূমিকা : খলিফা তৃতীয় আব্দুর রহমানের অবিস্মরণীয় কীর্তি ছিল আল জাহিরা প্রাসাদ। তার মৃত্যুর পরও তার উত্তরাধিকারীগণ এই প্রাসাদে বসে সকল শাসনকার্য পরিচালনা করেন । আল জাহিরা প্রাসাদের সৌন্দর্য, আড়ম্বরতা ও জাকজমকতা বিশ্বের দরবারে তাকে অতুলনীয় করে তুলেছিল।
তৃতীয় আব্দুর রহমান তার প্রিয়তমা স্ত্রীর নামানুসারে এর নাম রাখে আল জাহিরা। বর্তমান বিশ্বে এটা একট দর্শনীয় স্থাপত্যকীর্তি হিসেবে বিবেচিত।
→ আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা : কর্ডোভার প্রধান প্রাণকেন্দ্র ছিল মদিনা তুজ্জোহরা । বাগদাদ, কনস্টান্টিনোপল বা আইলা চ্যাপেলের রাজদরবার অপেক্ষা প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের দূতেরা আল জাহিরা প্রাসাদে খলিফার জৌলুশ ও জাঁকজমকপূর্ণ দরবারে সাদর অভ্যর্থনা পেতেন । নিম্নে এই জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা প্রদান করা হলো:
১. নামকরণ ও নির্মাণকাল : খলিফা তৃতীয় আব্দুর রহমান = তার প্রিয়তমা স্ত্রী জাহিরা বেগমের নামে একটি অনিন্দ্যসুন্দর ও অতুলনীয় প্রাসাদ নির্মাণ করেন। তাই এর নামকরণ হয় মদিনাতুজ জাহিরা ।
৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে নভেম্বর মাসে কর্ডোভার তিন মাইল উত্তর পশ্চিমে সিয়েরা মোরেনার পাদদেশে খলিফা এই নগরীর ভিত্তি স্থাপন করেন। যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যসামগ্রীর এক-পঞ্চমাংশ এবং খ্রিস্টান ইহুদিদের নিকট থেকে প্রাপ্ত জিজিয়া এবং কোষাগার হতে অর্থ বরাদ্দ করে এই বিশালাকার প্রাসাদটি নির্মিত হয়।
দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে অবিশ্রামভাবে শত শত কারিগর, রা প্রকৌশলী ও শ্রমিক কাজ করে এই প্রাসাদের নির্মাণ কাজ সমাধা করেন। কিন্তু খলিফা তৃতীয় আব্দুর রহমান আজ জাহিরা প্রাসাদের নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারেননি। তার সুযোগ্য পুত্র দ্বিতীয় হাকাম এই অসমাপ্ত কাজটি সম্পন্ন করেন।
২. নির্মাণ সামগ্রী : পি. কে. হিট্টি বলেন, যে Cordoba la Vieja ছি নামে বর্তমানে পরিচিত এই প্রাসাদটি রোম, কনস্টান্টিনোপল এবং খি কার্থেজ থেকে সংগৃহীত পাথরের স্তম্ভ দিয়ে নির্মিত হয়।
কথিত তি আছে যে, প্রাসাদের ফটকে রানি জাহিরা বেগমের একটি স্ফটিক মূর্তি স্থাপিত হয়। তিনি আরো বলেন, খলিফা তৃতীয় আব্দুর রহমান কনস্টান্টিনোপল থেকে বাইজান্টইন আমলে নির্মিত একটি মার্বেলের ফোয়ারা নিয়ে এসে তার প্রাসাদে স্থাপন করেন।
এম. এ. কাদের প্রাসাদের অলঙ্করণ প্রসঙ্গে বলেন, “ছাদ স্বর্ণ ও রৌপ্য টালি, প্রাচীর ও গম্বুজ কথঞ্চিৎ স্বচ্ছ প্রস্তর এবং স্তম্ভরাজি পার্বত্য স্ফটিক ও মূল্যবান মর্মর প্রস্তরে নির্মিত হয়। স্তম্ভের অগ্রভাগ মণিমুক্তা খচিত এবং সুগন্ধি কাষ্ঠ নির্মিত দরজাগুলো গজ দত্ত, আবলুস কাষ্ঠ, স্বর্ণ ও বহুমূল্য রত্নে ভূষিত ছিল।”
৩. প্রাসাদের বিবরণ : জাহিরা প্রাসাদটিতে তিনটি পৃথক অংশ ছিল । পাহাড়ের ঢালু অংশে খলিফা তার পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করতেন। শহরের নিম্নাংশে চারশত ঘরে দেহরক্ষী, খোজা ও বালক ভৃত্যরা বসবাস করতো।
এই অংশের পশ্চিমে সুস্বাদু ফলের বাগান ছিল। এছাড়া কৃত্রিম হ্রদ, জলাশয় ও চৌবাচ্চা নির্মাণ করা হয়। চৌবাচ্চায় সোনালি রঙের মাছ বিচরণ করতো।
জাহিরা প্রাসাদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল উদ্যান। প্রকৌশলীদের চেষ্টায় এখানে জল সেচের ব্যবস্থা ছিল এবং প্রস্রবণে বিভিন্ন ভাস্কর্য শোভা পেতো। সিরীয়দের দ্বারা নির্মিত প্রস্রবণের মাঝে সোনার তৈরি ও মণিমুক্তা খচিত বারটি পশু পক্ষী ছিল।
এ সকল পশুপক্ষীর মুখ থেকে অনর্গল পানি বের হতো। জাহিরা প্রাসাদের দেওয়ালের দৈর্ঘ্য ছিল ২,৭০০ ও প্রস্থ ছিল ১,৭০০ হাত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নিঃসন্দেহে জাহিরা নগর ও প্রাসাদ শুধুমাত্র কর্ডোভারই নয় সমগ্র স্পেনের গর্ব ছিল । তৃতীয় আব্দুর রহমানের অবিস্মরণীয় স্থাপত্যকীর্তির নিদর্শন আজও স্পেনে দেখা যায়।
সর্বজাতির সমঝদার পর্যটকদের মতে, সুন্দর ও সুরম্য পরিবেশ, রাজকীয় আড়ম্বর ও জাঁকজমক এবং স্থাপত্য কৌশল ও অলঙ্করণের দিক থেকে আল জাহিরা প্রাসাদ ছিল নিঃসন্দেহে অতুলনীয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আল জাহিরা প্রাসাদ সম্পর্কে যা জান লিখ | আল জাহিরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।
সুন্দর বর্ণনা