স্পেনের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্পেনের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য সমূহ লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্পেনের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য সমূহ লিখ ।
স্পেনের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লিখ |
স্পেনের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য সমূহ লিখ
স্পেনের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লিখ
উত্তর : ভূমিকা: স্পেনের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ছিল অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। যে কোনো দেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, ভূ-প্রকৃতি, আবহাওয়া, জলবায়ু প্রভৃতি দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার উপর প্রভাব বিস্তার করে। এ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সপ্তম শতাব্দীতে মুসলিম শাসনের অনুকূলে কাজ করে।
→ স্পেনের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ : বৈচিত্র্যময় স্পেনের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো :
১. অবস্থান : স্পেন ইউরোপের দক্ষিণ পশ্চিম আইবেরীয় উপদ্বীপে অবস্থিত। আইবেরীয় উপদ্বীপের মোট আয়তনের ১১ ভাগ নিয়ে গঠিত স্পেন এবং ইতালি ও গ্রিস থেকে আকারে বড়। উত্তর- পূর্ব দিক ছাড়া স্পেনের তিনদিক সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত।
পূর্ব দিকে আছে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে আছে আফ্রিকাকে বিচ্ছিন্নকারী জিব্রাল্টার প্রণালি, পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর এবং স্পেনের সাথে ফ্রান্সের ভূখণ্ডের যে সংযোগ রক্ষা করেছে তা হলো পিরেনিজ পর্বতমালা ।
২. আয়তন : স্পেন একটি বড় দেশ। এর মোট আয়তন ১,৯৪,৯০০ বর্গ মাইল বা ৫,০৪,৭৮২ বর্গ কিলোমিটার ।
৩. রাজধানী : গথ ও রোমীয় শাসনামলে অর্থাৎ মুসলিম শাসনামলের পূর্বে স্পেনের রাজধানী ছিল টলেডো। মুসলিম শাসনামলে রাজধানী হয় সেভিল এবং পরে হয় কর্ডোভা। মুসলিম আমলে রাজধানী কর্ডোভা । বর্তমানে স্পেনের রাজধানীর নাম মাদ্রিদ ।
৪. ভূ-প্রকৃতি : ভূ-প্রকৃতি অনুসারে স্পেনকে মোটামুটিভাবে ৪ ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন: (ক) উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের উপকূল; (খ) স্পেনের মধ্যবর্তী অঞ্চল; (গ) আইবেরীয় উপদ্বীপের গিরিপথ এবং (ঘ) নদ নদী যা ছিল নৌ-বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত সহায়ক ।
৪. মেসেতা : উপদ্বীপটির বেশি অংশ মেসেতা বলে পরিচিত। এটি পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে ক্রমান্বয়ে ঢালু। এটি উপকূল হতে বিচ্ছিন্ন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর গড় উচ্চতা প্রায় ২০০০ ফুট। মেসেতার পর্বতগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ক্যান্টাব্রিয়ান পর্বতশ্রেণি ।
৫. জলবায়ু : সাধারণত স্পেনে তিন ধরনের জলবায়ু অনুভূত হয়। যেমন- (ক) আটলান্টিক ও ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু, (খ) মালভূমি ও গোয়াডাল কুইভার উপত্যকার মহাসাগরীয় জলবায়ু এবং (গ) পাহাড়ি জলবায়ু।
৬. আবহাওয়া : গ্রীষ্মের সময় গরম ও উষ্ণতা থাকলেও শীতের মৌসুমে বৃষ্টিপাত হয়। শরৎকালে আবহাওয়া আর্দ্র থাকে। দক্ষিণ ও পূর্বে নাতিশীতোষ্ণ“আবহাওয়া বিদ্যমান। উত্তরাঞ্চলে বেশি শীত। অনুভূত হয়। গ্যালিসিয়া ও ক্যান্ট্রাব্রিয়ায় অত্যধিক বৃষ্টিপাত হয় ।
৭. পাহাড়পর্বত : স্পেনের বিভিন্ন স্থানে অনেক উঁচুনিচু পর্বতমালা একে অসমতল করে রেখেছে। উত্তরপূর্ব ও পূর্বে আইবেরীয় পর্বতমালা, দক্ষিণে সিয়েরা সারেনা পার্বত্য শ্রেণি আর পশ্চিমে গ্যালিশিয়ার উচ্চ মালভূমি। উপদ্বীপটি পীরেনীজ পর্বতমালা থেকে গোয়াডাল কুইভার নদী পর্যন্ত চমৎকারভাবে ঢালু হয়ে গিয়াছে ।
৮. নদ-নদী ও সমুদ্র বন্দর : স্পেনের বৈচিত্র্যপূর্ণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের আর এক সাক্ষী এর নদ-নদীসমূহ। স্পেনের প্রধান ৪টি নদীর মধ্যে রয়েছে— টেগাছ, ডুরো, গোয়াডিয়ানা ও গোয়াডাল কুইভার। স্পেনে অনেক সমুদ্রবন্দর ছিল এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— তারাগোছা, ফাস্টটেলনা, ভ্যালেন্সিয়া, আরমেনিয়া, মালাগা ও আলজিরাস ইত্যাদি।
৯. যোগাযোগ ব্যবস্থা : কোনো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্ভর করে সে দেশের ভৌগোলিক অবস্থার উপর। নদ-নদী দ্বারা বেষ্টিত থাকায় নদী পথে নৌকা, জাহাজ পাল তুলে যাতায়াত করতো। পাহাড় পর্বত বেষ্টিত থাকায় স্থল পথের যোগাযোগ অনেকটা দূরহ ছিল ।
১০. প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা : স্পেনে প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল । ডিউরো, তাগুস এবং সুয়াদিয়ানা এ তিন নদীর পথে পানি নিষ্কাশিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পতিত হতো ।
১১. জনসংখ্যা : স্পেনে বিভিন্ন জাতি, ধর্মের, বর্ণের ও গোত্রের লোক এসে বসবাস করতো। এর প্রধান কারণ ছিল স্পেন ছিল দুটি মহাদেশের সংযোগস্থল ।
তাই প্রাচীনকাল থেকেই স্পেনে বিভিন্ন দেশ ও জাতি স্পেন দখল করে অথবা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য স্পেনে আগমন করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতো। ফলে স্পেনে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্পেনের এই বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যের জন্য স্পেনে সমাগত নানা গোষ্ঠীর জনগণের স্বাতন্ত্র্যতার জন্য স্পেনে জাতিগত বিভেদ, চারিত্রিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
স্পেনের ভৌগোলিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে বহু দেশ স্পেন জয়ের পরিকল্পনা করে। মুসলমানরাও - স্পেন জয়ের পরিকল্পনা আরও পূর্বে করেছিল। অবশেষে ৭১১ খ্রিস্টাব্দে তা বিজিত হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্পেনের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্পেনের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লিখ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।