স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ ।
স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ |
স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
- অথবা, প্রথম হাকামের শাসনামলে সংঘটিত ফকিহ বিদ্রোহ সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : আমির হিশামের উদার ধর্মীয় নীতির কারণে ফকিহদের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। হাকামের ঔদ্ধত্যপনার জন্য ফকিহরা নওমুসলিমদের সাথে নিয়ে তার বিরুদ্ধে এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।
এ আন্দোলন স্পেনের রাজনৈতিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শেষে আমির হাকাম কঠোরতা ও নিষ্ঠুরতার আশ্রয় নিয়ে সকল আন্দোলন দমন করে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন ।
ফকিহ বিদ্রোহ : আমির হিশাম ছিলেন ধর্মপরায়ণ শাসক । তিনি স্পেনে মালিকী ধর্মমতকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তখন থেকে স্পেনে ধর্মবেত্তাদের প্রভাব বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। আমির হিশামের ইন্তেকালের পর তার পুত্র হাকাম সিংহাসনে আরোহণ করেন। আমির হাকাম ছিলেন পিতার বিপরীত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। তিনি ছিলেন মদ্যপ ও বিশৃঙ্খল।
একারণে ধর্মবেত্তারা তাকে বরদাস্ত করতে পারতেন না। অধিকন্তু হাকাম ফকিহগনের রাজনৈতিক প্রভাব ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে। ফলে ফকিহগণ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যে আন্দোলন পরিচালনা করে তা ফকিহ বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
→ ফকিহ বিদ্রোহের কারণ :
(ক) আমির হাকাম ছিলেন উগ্র চরিত্রের। তিনি সবসময় সাজসজ্জা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন এবং প্রকাশ্যে মদ্য পান করতেন । (খ) হাকাম ফকিহদের সকল সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতা হ্রাস করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে ধর্মগুরুদের অংশ গ্রহণ করা উচিত নয় ।
(গ) সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত হয়ে ফকিহগণ ধর্ম প্রচারের মঞ্চ হতে প্রকাশ্যে আমিরকে বিধর্মী বলে নিন্দা ও ভর্ৎসনা করতে লাগলেন।
(ঘ) ফকিহদের আন্দোলনে সমর্থন দেয় নব দীক্ষিত মুসলমানগণ -ও অভিজাতবর্গ। ফকিহদের আন্দোলনের ঢেউ রাজদরবারে গিয়ে “পৗঁছলে এক শ্রেণির অমাত্যবর্গ তাদের এ আন্দোলনে সমর্থন দেয়। ফলে ফকিহ আন্দোলন আরও শক্তিশালী রূপ নেয় ।
→ গৃহীত পদক্ষেপ : ফকিহ, নওমুসলিমগণ ও আমাত্যবর্গ ষড়যন্ত্র করে যখন আমিরকে পদচ্যুত করে মুহাম্মদ বিন কাশিমকে ক্ষমতায়ন করতে চায় তখন তা ফাস হয়ে যায়। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে ফকিহ ও নওমুসলিমগণ উত্তেজিত হয়ে একযোগে আমিরের প্রাসাদ আক্রমণ করেন । বিক্ষুব্ধ ফকিহ ও নওমুসলিমগণ আমিরকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে বদ্ধপরিকর হয়।
আমির কৌশলে তার দেহরক্ষী বাহিনী দ্বারা এ আক্রমণ পতিহত করেন। তার সেনাবাহিনীকে দুইভাগে ভাগ করা হয়। একদল বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে অন্যদল বিদ্রোহী যুদ্ধরত ব্যক্তিদের আবাসিক এলাকা ‘আররাবেল দেল সুর’ এ অগ্নি সংযোগ করে।
বিদ্রোহীরা পরিবার পরিজনদের রক্ষার্থে তাদের বাসভবনের দিকে দৌড়াতে থাকে । ফলে উভয় দিক থেকে তারা রাজকীয় বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়ে চরমভাবে বিপর্যস্ত হয় ও পরাজিত হয়। দাঙ্গাকারী লোয়াজ রাজকীয় অশ্বারোহী বাহিনীর নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের ফলে পিছু হটে।
হাকামের সৈন্যরা ঘরে ঘরে ঢুকে বাসিন্দাদের হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। শহরতলির জনসাধারণের উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। মাটির দিকে মাথা ঝুলিয়ে দিয়ে এদের নেতাদের হত্যা করা হয়।
এ অভিযানে প্রভাবশালী কয়েকজন ধর্মবেত্তাসহ প্রচুর মুয়াল্লাদুন বা নওমুসলিম হতাহত হয়। কর্ডোভার ছয়জন বিশেষ প্রতিপত্তিশালী সম্ভ্রান্ত বংশীয় নেতাসহ প্রায় ৭২ জন ফিকাহ শাস্ত্রবিদ ও অভিজাত ব্যক্তি নিহত হয়েছিল । ইয়াহিয়া বিন ইয়াহিয়া এবং ইসাবিন দিনার টলেডোতে আত্মগোপন করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ফকিহগণের সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার, রাজনৈতিক প্রভাব ক্ষুণ্ন ও সর্বোপরি হাকামের ঔদ্ধত্য আচরণ হাকামের বিরুদ্ধে তাদের বিষিয়ে তোলে। হাকামের সাথে ফকিহদের সম্পর্কের অবনতির পরিণতিই হলো এই আন্দোলন।
হাকামের কঠোর, নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে অনেক ফকিহ হত্যা করেন এবং ধ্বংস প্রাপ্ত হয় তাদের ঘরবাড়ি এবং শেষ পরিণতি হয় তাদের উচ্ছেদ ও নির্বাসন। অবশ্য শেষ জীবনে হাকাম ধর্মবেত্তাদের প্রতি কিছুটা সদয় হন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্পেনের ফকিহ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।