শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি ।
শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি |
শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি
শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্য লিখ
শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি
উত্তর : ভূমিকা : বস্তুত প্রতিটি সমাজই বিবর্তন প্রক্রিয়ায় অন্যান্য সমাজ হতে স্বতন্ত্র। শিল্প সমাজের স্বাতন্ত্র আরও একটু বেশি বলেই মনে হয়। এ স্বাতন্ত্র্যের মূলে কিছু বৈশিষ্ট্য কাজ করছে, সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রের ব্যবহার : শিল্প সমাজের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একটি আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্র নির্ভর। এ সমাজের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে প্রযুক্তি ও যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে।
উৎপাদন, যোগাযোগ, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, দৈনন্দিন জীবনযাপন প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও যন্ত্রের অনিবার্য ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। তাই অনেকে শিল্প সমাজকে প্রযুক্তি বা যান্ত্রিক সমাজ বলে অভিহিত করেন।
২. জ্ঞানবিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার : শিল্প সমাজে শিক্ষাকে গণমানুষের জন্য সহজ এবং উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। প্রতিটি বিষয়ে সুবিন্যস্ত জ্ঞান চর্চার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র, সমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা বা গবেষণার ফলশ্রুতি। শিল্প সমাজে যৌক্তিক জ্ঞানের প্রতিষ্ঠা গটেছে জ্ঞানের চর্চার জন্য । বস্তুতপক্ষে বৈশিষ্ট্যগত কারণেই শিল্প সমাজে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চারও প্রসার ঘটে চলেছে।
৩. দক্ষ মানব সম্পদ : শিল্প সমাজের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মানব সম্পদ। শিল্পোৎপাদনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দক্ষ- বিশেষজ্ঞ মানব সম্পদ কাজ করে। শিক্ষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়।
দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিকাশে ভূমিকা রাখে। শিল্প সমাজে দক্ষতার গুরুত্ব অপরিসীম। দক্ষ মানব সম্পদ ব্যতীত এ সমাজের অগ্রগতি অসম্ভব।
কৃষি, শিল্প, সেবা (ডাক্তারি, ওকালতি), প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড, হিসাব সংরক্ষণ, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দক্ষ মানব সম্পদ সক্রিয়। তাই দক্ষতা ব্যতীত শিল্প সমাজ অকল্পনীয়।
৪. কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণ : শিল্প সমাজে জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি বৃদ্ধি পায় কাজের সুযোগ। কৃষি সমাজে স্বল্প পরিসরে কৃষি কর্মক্ষেত্রে সীমিত সংখ্যক মানুষ কর্মে নিয়োজিত থাকার সুযোগ পেত।
কিন্তু শিল্প সমাজে কাজের ক্ষেত্র দিগন্ত বিস্তৃত। কৃষি ছাড়াও এ সমাজে শিল্প উৎপাদন, সেবা প্রদান, শিক্ষা, ব্যবসায়, প্রশাসনিক, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ কাজ করার সুযোগ পায়।
এসময় দক্ষ মানব সম্পদ বিস্তৃত কর্মক্ষেত্রে নিজেদেরকে নিয়োজিত করার সুযোগ পায়। যোগাযোগ ও পরিবহণ, মানুষের নিত্যনতুন চাহিদা ইত্যাদি উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাকে গতিশীল করার সাথে সাথে কর্মসংস্থানেরও পরিলক্ষিত হয়।
৫. স্বাধীন শ্রমের ব্যবহার : দাস যুগে শ্রমিক বা তাদের শ্রম কোনটিই স্বাধীন ছিল না। কিন্তু সামন্তযুগে শ্রমিক স্বাধীন হলেও তাদের শ্রম ছিল পরাধীন বা নিয়ন্ত্রিত। শিল্প সমাজে শ্রমিক এবং শ্রম উভয়ই স্বাধীনতা লাভ করে।
যে কেউ তাদের শ্রম স্বাধীনভাবে বিনিয়োগ বা বিক্রয় করতে পারতো। এ স্বাধীনতার ফলেই কৃষি থেকে বিপুল সংখ্যাক মানুষ শিল্প উৎপাদনে সম্পৃক্ত হয়। অসংখ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শ্রমিকরা দলে দলে তাদের শ্রম বিনিয়োগ করতে থাকে।
ইচ্ছা করলে এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হওয়ার সুযোগ ছিল/আছে। বিশেষ কারণে অবকাশ বা অবসর যাপনও এখানে অনুমোদিত। তাই বলা যেতে পারে বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকেই শিল্প সমাজে স্বাধীন শ্রমের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।