১৩টি তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর
১৩টি তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর |
১৩টি তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. ‘তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির উদাসীনতার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির উদাসীনতার কারণ হলো তাঁর স্বামী ও কাব্য সাধনার প্রেরণা পুরুষের আকস্মিক মৃত্যু।
প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির মন জুড়ে বিরাজ করছে শীতের রিক্ততা ও বিষণ্ণ রূপ । কবি শীত ঋতুকে ভুলতে পারছেন না। তাঁর এ ভুলতে না পারার কারণ প্রিয় স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিক মৃত্যু।
স্বামীর অকাল প্রয়াণে কবির হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত। আর এ কারণেই প্রকৃতিতে বসন্তের আগমন সত্ত্বেও কবি উদাসীন।
প্রশ্ন-২. কবি বসন্তের আগমনের কোনো সন্ধান রাখেননি কেন?
উত্তর: প্রিয়জনের আকস্মিক বিদায়ের কারণে উদাসীন কবি বসন্তের আগমনের কোনো সন্ধান রাখেননি
প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির মন জুড়ে আছে শীতের রিক্ততা। কবির মন দুঃখ ভারাক্রান্ত তাই শীতের করুণ বিদায়কে কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। এ জন্য বসন্তের আগমন কবির মনে কোনো সাড়া জাগাতে পারছে না। বসন্তের সৌন্দর্য কবির কাছে অর্থহীন মনে হয়েছে বলেই কবি বসন্তের কোনো সন্ধান রাখেননি।
প্রশ্ন-৩. ফাগুন মাসের প্রতি কবি কেন বিমুখ?
উত্তর: ব্যক্তিগত জীবনের শোকাচ্ছন্নতায় কবিমন রিক্ত বলেই কবি ফাগুন- মাসের প্রতি বিমুখ ।
ফাগুন হলো ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী মাস। এ মাসে প্রকৃতি নব সাজে সজ্জিত হয়ে কবির কাব্য রচনার সহায়ক হয় ।
কিন্তু কবি সুফিয়া কামালের স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিক মৃত্যুর ফলে কবি ফাগুনের আগমন সম্পর্কে উদাসীন হয়ে পড়েন। ব্যক্তিগত জীবনের শোকাচ্ছন্নতার অনুভূতি কবিমনে যেন শীতের রিক্ত হাহাকার ধরে রাখে । এ কারণেই কবি ফাগুন মাসের প্রতি বিমুখ।
প্রশ্ন-৪. ‘কোথা তব নব পুষ্পসাজ!’— উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে আনমনা কবির বসন্তের প্রতি ঔদাসীন্যের দিকটিই উন্মোচিত হয়েছে ।
বসন্তের আগমনে সমগ্র প্রকৃতি যেন নবরূপ লাভ করে । বাহারি ফুল আর পাতায় সজ্জিত হয় বৃক্ষরাজি। স্বভাবতই কবিরাও বসন্ত-বন্দনায় মগ্ন হন। কিন্তু প্রিয়জনের বিয়োগব্যথায় কাতর কবির পক্ষে বসন্তকে বরণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
বাহারি ফুলে সুসজ্জিত হওয়ার পরিবর্তে কবিমন শীতের রিক্ততাকেই অবলম্বন করেছে, যা আলোচ্য পক্তিটিতে কবি- ভক্তের প্রশ্নের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে।
প্রশ্ন-৫. ‘সে ভুলেনি তো, এসেছে তা ফাগুনে স্মরিয়া’— উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ব্যক্তি মানুষের সুখ-দুঃখ প্রকৃতির সহজাত নিয়মে ব্যত্যয় ঘটাতে পারে না— প্রশ্নোক্ত পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে এ কথাই প্রকাশ পেয়েছে।
প্রকৃতি তার আপন নিয়মে সদা পরিবর্তনশীল। মানুষের সুখ-দুঃখ প্রকৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে না। আর তাই প্রিয়জনের শোকে মুহ্যমান কবি বসন্তবরণের জন্য প্রস্তুত না হলেও ফাল্গুন মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রকৃতিতে বসন্তের আগমন ঘটেছে। প্রশ্নোক্ত পক্তিটির মধ্য দিয়ে এ বিষয়টিই মূর্ত হয়ে উঠেছে।
প্রশ্ন-৬. 'বসন্তের প্রতি কেন এই তীব্র বিমুখতা?'— কবি-ভক্তের এমন প্রশ্নের কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রিয়জনের শোকে মুহ্যমান কবির নির্মোহ মনোভাব প্রত্যক্ষ করেই কবি-ভক্ত প্রশ্নোক্ত পঙক্তিটির অবতারণা করেছেন ।
শীতকালীন প্রকৃতি যেমন তার সজীবতা হারিয়ে রুক্ষমূর্তি ধারণ করেছে, তেমনি আপনজনের শোকে মুহ্যমান কবির চেতনাও যেন প্রিয়জনের চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিষণ্নতার রূপ পরিগ্রহ করেছে। অকালে অপ্রাপ্তি নিয়ে স্বজনের চলে যাওয়ার বিষয়টিকে তিনি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।
তাই সময়ের আবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটলেও তা কবিমনে সাড়া জাগাতে পারেনি। বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেই কবি-ভক্ত আলোচ্য পঙক্তিটির মাধ্যমে প্রিয় কবির প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন।
প্রশ্ন-৭. “কুহেলি উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: আলোচ্য পঙ্ক্তিটিতে কবি শীতকে কুয়াশার চাদর পরিহিত মাঘের সন্ন্যাসীরূপে কল্পনা করেছেন ।
শীত প্রকৃতিকে দেয় রিক্ততার রূপ। আলোচ্য কবিতাটিতে শীতের এ নিঃস্ব ও রিক্ত রূপকে বসন্তের বিপরীতে স্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতি বসন্তের আগমনে পুষ্পসাজে সাজলেও বিরহকাতর কবির মন জুড়ে রয়েছে শীতের রিক্ততার ছবি।
শীত যেন রিক্ত সন্ন্যাসীর মতোই কুয়াশার চাদর গায়ে পত্রপুষ্পহীন দিগন্তের পথে চলে গেছে। প্রশ্নোক্ত পক্তিটিতে সর্বগ্রাসী শীতের এ নিষ্প্রাণ রূপটিকেই তুলে ধরা হয়েছে।
প্রশ্ন-৮, কবি শীতকে সন্ন্যাসীর রূপকে তুলে ধরেছেন কেন?
উত্তর: প্রকৃতিতে বসন্ত আসার আগে শীত সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো কুয়াশার চাদর গায়ে জড়িয়ে বিদায় নেয় বলে কবি শীতকে মাঘের সন্ন্যাসীর রূপকে তুলে ধরেছেন।
কবি শীতকে সন্ন্যাসীরূপে কল্পনা করেছেন। প্রকৃতিতে বসন্ত আসার আগে শীত সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো কুয়াশার চাদর গায়ে জড়িয়ে বিদায় নিয়েছে।
সবকিছু ত্যাগ করে মিলিয়ে গেছে বহুদূর। প্রকৃতিকে বসন্ত নতুনরূপে সাজিয়ে দিলেও শীতের রিক্ততা কবি-ভুলে যেতে পারছেন না— এ কারণেই কবি শীতকে মাঘের সন্ন্যাসীর রূপকে মূর্ত করে তুলেছেন ।
প্রশ্ন-৯. ‘পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
আলোচ্য কবিতাটিতে নিঃসঙ্গ ও নিষ্প্রাণ প্রকৃতি এবং কবির চেতনা যেন একাত্ম হয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে শীতকালীন প্রকৃতি যেমন তার সজীবতা হারিয়ে রুক্ষমূর্তি ধারণ করেছে, তেমনি শোকে মুহ্যমান কবির চেতনাও যেন প্রিয়জনের চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিষণ্নতার রূপ পরিগ্রহ করেছে।
আর তাই অকালে অপ্রাপ্তি নিয়ে স্বজনের চলে যাওয়ার এ বিষয়টিকে তিনি ‘পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে' বলে অভিহিত করেছেন ।
প্রশ্ন-১০. প্রিয়জন হারানোর বেদনা কীভাবে মানুষের মনে ছায়াপাত করে ‘তাহারেই পড়ে মনে' কবিতা অবলম্বনে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রিয়জন হারানোর বেদনা মানুষকে তিলে তিলে কষ্ট দেয় । কবি সুফিয়া কামাল ‘তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় তার ব্যক্তিজীবনের এক মর্মান্তিক বেদনার স্মৃতিকেই তুলে ধরেছেন। কবি ও কবি-ভক্তের সংলাপে কবির নিরাসক্ত উদাস ভাবটি সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবি শীতের রিক্ততা ভুলতে পারেননি। কারণ তাঁর মনোজগতে প্রিয়জন হারানোর বেদনা গভীর হয়ে বারবার উঁকি দিচ্ছে। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা তাই কবিকে করে তুলেছে জীবনবিমুখ, নিরাসক্ত এক বিষণ্ণ মানুষ হিসেবে
প্রশ্ন-১১. কবিতায় কবির ব্যক্তিজীবন কীভাবে ধরা পড়েছে?
উত্তর: কবির প্রিয়তম স্বামীর মৃত্যুশোক প্রকাশের দিক থেকে কবিতাটিতে তাঁর ব্যক্তিজীবনের ছায়াপাত ঘটেছে।
'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় বিরহকাতর কবির মনোযাতনা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিক মৃত্যু কবিকে ভারাক্রান্ত ও উদাসীন করে তোলে । আলোচ্য কবিতাটিতে তাঁর ব্যক্তিজীবনের এই দুঃসহ অনুভূতিই রূপায়িত হয়েছে ।
প্রশ্ন-১০. . প্রিয়জন হারানোর বেদনা কীভাবে মানুষের মনে ছায়াপাত করে ‘তাহারেই পড়ে মনে' কবিতা অবলম্বনে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রিয়জন হারানোর বেদনা মানুষকে তিলে তিলে কষ্ট দেয় । কবি সুফিয়া কামাল ‘তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় তার ব্যক্তিজীবনের এক মর্মান্তিক বেদনার স্মৃতিকেই তুলে ধরেছেন। কবি ও কবি-ভক্তের সংলাপে কবির নিরাসক্ত উদাস ভাবটি সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবি শীতের রিক্ততা ভুলতে পারেননি। কারণ তাঁর মনোজগতে প্রিয়জন হারানোর বেদনা গভীর হয়ে বারবার উঁকি দিচ্ছে। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা তাই কবিকে করে তুলেছে জীবনবিমুখ, নিরাসক্ত এক বিষণ্ণ মানুষ হিসেবে।
প্রশ্ন-১১. কবিতায় কবির ব্যক্তিজীবন কীভাবে ধরা পড়েছে?
উত্তর: কবির প্রিয়তম স্বামীর মৃত্যুশোক প্রকাশের দিক থেকে কবিতাটিতে তাঁর ব্যক্তিজীবনের ছায়াপাত ঘটেছে ।
'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় বিরহকাতর কবির মনোযাতনা প্রকাশিত- হয়েছে। তাঁর সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিক মৃত্যু কবিকে ভারাক্রান্ত ও উদাসীন করে তোলে। আলোচ্য কবিতাটিতে তাঁর ব্যক্তিজীবনের এই দুঃসহ অনুভূতিই রূপায়িত হয়েছে।
প্রশ্ন-১২, ‘তাহারেই পড়ে মনে' কবিতাটিকে নাটকীয় গুণসম্পন্ন কবিতা বলা হয় কেন?
উত্তর: গঠনরীতির দিক থেকে 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতাটি সংলাপনির্ভর হওয়ায় কবিতাটিকে নাটকীয় গুণসম্পন্ন কবিতা বলা হয় ।
'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতাটিতে মূলত কবি ও কবি-ভক্তের মাঝে সংলাপের মধ্য দিয়ে নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এ নাটকীয়তাই কবিতাটির লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।
উল্লিখিত চরিত্র দুটির কথোপকথনের মাধ্যমে কবিতাটির বিষয়বস্তুর বিস্তৃতি ও ক্রমবিকাশ ঘটেছে। এর মধ্য দিয়ে কবি হৃদয়ের নিগূঢ় ভাব এখানে নাটকীয়ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এজন্য কবিতাটিকে নাটকীয় গুণসম্পন্ন বলা হয় ।
প্রশ্ন-১৩. বসন্তের আগমন সত্ত্বেও কবির নীরব ভূমিকা পালনের কারণ কী?
উত্তর: প্রিয়জন হারানোর বিষাদময় স্মৃতি ভুলতে না পারার কারণে বসন্তের আগমন সত্ত্বেও কবি নীরব ভূমিকা পালন করেছেন ।
প্রকৃতিতে বসন্তের আগমন ঘটলেও কবির মনোজগৎ জুড়ে বিরাজ করছে শীতের রিক্ততা ও বিষণ্নতার ছবি। প্রিয়জনের করুণ বিদায় কবিমনে যে বেদনার ছায়াপাত রেখে গেছে, তা তিনি কিছুতেই ভুলতে পারেন না।
আর তাই বসন্ত প্রকৃতির মনোহর রূপও কবিমনে সাড়া জাগাতে পারে না। মূলত প্রিয়জন হারানোর বেদনায় মোহ্যমান কবি স্বাভাবিকভাবেই নিরাসক্ত, নিরাবেগ ও নীরব হয়ে পড়েন ।
No comment