স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী
লিচু বাগানে ঘুরতে গিয়ে রনির মনে প্রশ্ন জাগে কীভাবে ফুল থেকে ফল ও বীজ হয়। সে তার শিক্ষককে প্রশ্ন করলে, শিক্ষক বললেন, ফুলের গর্ভাশয়ে ডিম্বক নামক ক্ষুদ্র অঙ্গ থাকে। নিষেকের ফলেই ডিম্বক বীজে আর গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয়। প্রজননে নিষেকের জন্য পুংজনন কোষ, স্ত্রী জনন কোষ সৃষ্টি হয়। নিষেকের জন্য পরাগায়নের ভূমিকাও অনেক তাই ফল ও বীজ উৎপাদনে নিষেকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
ক. যুক্তগর্ভপত্রী কাকে বলে?
খ. স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী?
গ. উদ্দীপকে জীবের যে প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্ভিদের ফল ও বীজ উৎপাদনে এবং মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় নিষেকের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. যখন কতগুলো গর্ভপত্র নিয়ে একটি স্ত্রীস্তবক গঠিত হয় এবং এরা সম্পূর্ণভাবে পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে তখন তাকে যুক্তগর্ভপত্রী বলে।
খ. স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা নিচে দেওয়া হলো-
সুবিধা :
i. স্ব-পরাগায়নে পরাগরেণুর অপচয় কম হয়, বাহকের উপর নির্ভর করতে হয় না, প্রজাতির গুণাগুণ অক্ষুন্ন থাকে।
ii. পর-পরাগায়নের ফলে নতুন প্রকরণ সৃষ্টি হয়, বীজ অধিক জীবনীশক্তি সম্পন্ন হয়।
অসুবিধা:
i. স্ব-পরাগায়নের ফলে নতুন প্রকরণ সৃষ্টি হয় না, নতুন গাছের অভিযোজন ক্ষমতা কমে যায় এবং অচিরে প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে।
ii. পর-পরাগায়নে পরাগরেণুর অপচয় বেশি হয়, এতে প্রজাতির বিশুদ্ধতা নষ্ট হতে পারে।
গ. উদ্দীপকে জীবের প্রজনন প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে এ প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দেয়া হলো-
প্রজনন হচ্ছে এমন একটি শারীরতত্ত্বীয় কার্যক্রম, যার মাধ্যমে জীব তার প্রতিরূপ সৃষ্টি করে ভবিষ্যৎ বংশধর রেখে যায়। যে প্রক্রিয়ায় কোনো জীব তার বংশধর সৃষ্টি করে, তাকেই প্রজনন বলে। প্ৰজনন প্ৰধানত দুই ধরনের, যৌন এবং অযৌন। সাধারণত নিম্নশ্রেণির জীবে যৌন প্ৰজনন হয় না,
তবে কোনো কোনো নিম্নশ্রেণির জীব যৌন উপায়েও প্রজনন ঘটায়। উচ্চশ্রেণির অধিকাংশ উদ্ভিদ এবং উচ্চশ্রেণির সকল প্রাণী যৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশধর সৃষ্টি করে। যৌন জননে দুটি বিপরীতধর্মী জননকোষ পরস্পরের সাথে মিলিত হয়। এক্ষেত্রে একটিকে পুং জননকোষ বা শুক্রাণু, অন্যটিকে স্ত্রী জননকোষ বা ডিম্বাণু বলে।
জননকোষ সৃষ্টির পূর্বশর্ত হলো, জনন মাতৃকোষকে অবশ্যই মিয়োসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হতে হয়। এই বিভাজনের ফলে ক্রোমোসোম সংখ্যা জনন মাতৃকোষের অর্ধেক হয়ে যায় কাজেই যখন পুং ও স্ত্রী জননকোষ দুটি মিলিত হয়ে জাইগোট সৃষ্টি করে, তাতে ক্রোমোসোমের সংখ্যা আবার জনন মাতৃকোষের সমান হয়ে যায়।
পরে এই জাইগোটটি মাইটোটিক কোষ বিভাজনের মাধ্যমে বারবার বিভাজিত হয়ে একটি নতুন জীবদেহ সৃষ্টি করে
ঘ. উদ্ভিদের ফল ও বীজ উৎপাদনে এবং মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় নিষেকের তাৎপর্য অপরিসীম। নিচে নিষেকের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা হলো- জীবে যৌন জননের জন্য নিষেক অপরিহার্য। এটি একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। যৌন জননে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে নিষেক বলে।
সপুষ্পক উদ্ভিদে পরাগায়নের পর নিষেক ঘটে থাকে। নিষেকের পর নিষিক্ত ডিম্বাণু তথা ডিম্বক এবং গর্ভাশয়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ঘটে। নিষেকের পর দ্রুত বৃদ্ধি, বিকাশ এবং পরিবর্তনের ফলে ডিম্বক বীজে পরিণত হয়। নিষেক ছাড়া সাধারণত ডিম্বক বীজে পরিণত হয় না।
ডিম্বকের অভ্যন্তরে নিষিক্ত ডিম্বাণু ভ্রূণে এবং ডিম্বকত্বক বীজত্বকে পরিণত হয় । অন্যদিকে নিষেকের পর গর্ভাশয়ে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন ধরনের হরমোনের ক্রিয়ার ফলে গর্ভাশয় পরিবর্তিত হয়ে ফলে পরিণত হয়। নিষেক না ঘটলে গর্ভাশয় পরিবর্তিত হয়ে ফলে রূপান্তরিত হতে পারে না।
অন্যদিকে, মানুষের যৌন জননের সময় ডিম্বাণুর সাথে শুক্রাণুর মিলনের মাধ্যমে নিষেক সম্পন্ন হয়। নিষেকের ফলে সৃষ্ট জাইগোট থেকে বার বার কোষ বিভাজনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ভ্রূণ এবং ভ্রূণ থেকে পরবর্তীতে শিশু সন্তানের জন্ম হয়। এই শিশু সন্তানই মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষা করে
সুতরাং, উদ্ভিদের ফল ও বীজ এবং মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় নিষেক ক্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়নের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।
thank you sir