১৫টি প্রতিদান কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর | প্রতিদান কবিতার লাইনের ব্যাখ্যা
১৫টি প্রতিদান কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর (PDF) ডাউনলোড |
১৫টি প্রতিদান কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর |
প্রশ্ন-১. নিজের ঘর ভাঙার প্রতিদান দিতে কবি অন্যের ঘর বেঁধে দিয়েছেন কেন ব্যাখ্যা কর?
উত্তর: কবি প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না বলে তিনি নিজের ঘর যে ভেঙে দিয়েছে তার জন্যই ঘর বেঁধে দেন ।
প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা কখনোই চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না। কেউ কবির ক্ষতির কারণ হলে তারও ক্ষতি করতে হবে, কবি তা বিশ্বাস করেন না।
কবি মানুষের প্রতি দায়িত্বশীল এবং ক্ষমাশীল। তিনি মনে করেন ভালোবাসাই মানুষকে আলোর পথ দেখায়। তাই কেউ কবির ঘর ভেঙে দিলেও কবি সেই অনিষ্টকারীর জন্য ঘর তৈরি করতে চেয়েছেন ।
প্রশ্ন-২. আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? / কবিকে যে পর করেছে তাকে আপন করার জন্য কেঁদে বেড়ান কেন উত্তর
উত্তর: আলোচ্য চরণের মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন কাছের-দূরের সব মানুষের প্রতিই তিনি সমান ভালোবাসা অনুভব করেন।
যে কবিকে পর করে দিয়েছে তাকেই আপন করতে কবির প্রাণ কাঁদে। কবি সকলকে আপনজন মনে করেন। তিনি কাউকে শত্রু ভাবতে পারেন না। তাই যারা করিকে ভুল বুঝে পর করে দেয়, কবি তাদের জন্যই কেঁদে বেড়ান। কারণ তারা তাঁকে পর ভাবলেও কবি তা ভাবেন না। 'পরম মমতায় তাদের আপন করতে চান ।
প্রশ্ন-৩. যে মোরে করিল পথের বিবাগী ব্যাখ্যা কর পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি ব্যাখ্যা কর?
উত্তর: ‘যে মোরে করিল পথের বিবাগী— পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি’— পক্তির মধ্য দিয়ে কবি পরার্থপরতার দিকটি তুলে ধরেছেন।
কবি বিশ্বাস করেন প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধের মনোভাব বর্জন করে পরার্থপরতার মধ্যেই প্রকৃত সুখ ও জীবনের সার্থকতা লাভ করা সম্ভব। তাই যে কবিকে পথের বিবাগী করেছে কবি তার জন্যই পথে পথে ঘোরেন। অর্থাৎ অনিষ্টকারীর মঙ্গল কামনায় কবি নিজেকে নিবেদন করেন। অপকারীর উপকার করার মাধ্যমে তার মাঝে ইতিবাচক পরিবর্তন আনাই কবির লক্ষ্য ।
প্রশ্ন-৪. দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে মোর ব্যাখ্যা কর?
উত্তর: ‘প্রতিদান' কবিতায় কবি দীঘল রজনী তার জন্যই জেগে কাটাতে চেয়েছেন যে কবিকে ঘুমাতে দেয়নি।
কবি অনিষ্টকারীকে আপন ভেবে কাছে টেনে নিতে চান। কারণ প্রতিশোধ নয় ভালোবাসার মধ্যেই রয়েছে মানবতার প্রকৃত সমাধান। তাই যে কবির ঘুম কেড়ে নিয়ে তাঁকে অশান্তিতে রেখেছে তার জন্যই কবি নির্ঘুম রাত কাটাতে চান । তার মঙ্গল চিন্তাই করিকে ঘুমাতে দেয় না।
প্রশ্ন-৫. যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বান আমি দেই তারে বুক ভরা গান এখানে বিষে ভরা বান কি অর্থ জ্ঞাপন করেছে
উত্তর: কবি প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধে বিশ্বাস করেন না বলেই তিনি বিষে-ভরা বাণের পরিবর্তে বুক ভরা গান দিয়েছেন
কবি ব্যক্তিস্বার্থকে গুরুত্ব না দিয়ে সমষ্টির স্বার্থের কথা ভাবেন। তিনি মনে করেন হিংসা-বিদ্বেষ দিয়ে সাময়িক লাভ হলেও চূড়ান্ত বিচারে তা মানবসমাজের ক্ষতিই করে। ভালোবাসাপূর্ণ, ক্ষমাশীল মানুষই পৃথিবীকে সুন্দর করতে পারে । তাই কবি বিষে-ভরা বাণের পরিবর্তে বুক ভরা গান দিয়েছেন।
প্রশ্ন-৬. কবি কাঁটার বিনিময়ে ফুল দান করতে চান কেন ব্যাখ্যা কর?
উত্তর: কবি অনিষ্টকারীর উপকার করতে চান বলে কাঁটার বিনিময়ে ফুল দান করেন।
কবি বিশ্বাস করেন, অনিষ্টকারীকে কেবল ক্ষমা করেই নয়, বরং প্রতিদান হিসেবে তার উপকার করার মাধ্যমে পৃথিবীকে সুন্দর করা সম্ভব।
কেউ ক্ষতি করেছে বলে প্রতিশোধের বশবর্তী হয়ে তারও ক্ষতি করতে হবে কবি তা মানতে নারাজ। তাই কবিকে কেউ কাঁটা দিলে কবি তাকে প্রতিদানে ফুল উপহার দেন। অর্থাৎ কেউ তাঁর অনিষ্ট করলে বিনিময়ে তার মঙ্গল সাধন করেন ।
প্রশ্ন-৭. মোর বুকে যেবা কবর বেঁধেছে আমি তার বুক ভরি রঙিন ফুলের সোহাগ জড়ানো ফুল মালঞ্চ ধরি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যে কবির বুকে কবর বেঁধেছে অর্থাৎ প্রচণ্ড কষ্ট দিয়েছে কবি তাকেই ভালোবাসার মালঞ্চ উপহার দিয়েছেন।
কবি বিশ্বাস করেন প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ নয় বরং ভালোবাসাই জীবনের আদর্শ হওয়া উচিত। তাই কবিকে কেউ দুঃখকষ্ট দিলে তিনি ক্ষমা করে তাকে ভালোবাসা উপহার দিয়েছেন। এই চিন্তা থেকেই কবি কবরের বিনিময়ে মাল উপহার দিয়েছেন ।
প্রশ্ন-৮. কবি ফুল মালঞ্চ দিয়ে কার বুক ভরেছেন কেন?
উত্তর: সহনশীলতা ও প্রীতিতে বিশ্বাসী বলে যে কবির বুকে ব্যথার কবর বেঁধেছে, কবি তারই বুক ফুল মালঞে ভরিয়ে দিতে চান।
যে কবিকে আঘাত করে, কবি তাকেই বুকে টেনে নেন। কবি বিশ্বাস করেন, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা কখনো প্রকৃত শান্তি এনে দিতে পারে না।
সহনশীলতা, ক্ষমা এবং ভালোবাসাই চূড়ান্ত সমাধান। তাই কবির বুকে যে কবর রচনা করে, কবি তার বুক রঙিন ফুলের সোহাগ-জড়ানো ফুল মালঞ্চে ভরিয়ে দেন। অর্থাৎ কবি অনিষ্টকারীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ না নিয়ে বরং তার উপকারে ব্রতী হন।
প্রশ্ন-৯. কবি কেন আঘাত পেয়েও অন্যের উপকার করেন?
উত্তর: কবি সুন্দর ও নিরাপদ পৃথিবীর প্রত্যাশা করেন বলে তিনি আঘাত পেয়েও অন্যের উপকার করেন।
কবি বিশ্বাস করেন, প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ কখনো চিরন্তন শান্তি বয়ে আনতে পারে না। সমাজ-সংসারে বিদ্যমান বিভেদ-হিংসা-হানাহানি দ্বারা আক্রান্ত হলেও কবি প্রীতিময় পরিবেশের আকাঙ্ক্ষা করেন। তাই কবি আঘাত পেয়েও অন্যের উপকার করেন।
প্রশ্ন-১০. কত ঠাঁই হতে কত কী যে আনি সাজাই নিরন্তর ব্যাখ্যা কর?
উত্তর: যে কবিকে নিষ্ঠুর বাণী দিয়েছে কবি তার মুখখানি সাজিয়ে দিতে চেয়েছেন।
কবি বিশ্বাস করেন কারো ক্ষতি করা নয়, উপকার করাই মানুষের প্রকৃত ধর্ম। তাই কেউ নিষ্ঠুর বাণী শোনালে কবি তার মুখ সাজিয়ে দিতে চেয়েছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ নয়, ভালবাসাই জীবনের আদর্শ।
প্রশ্ন-১১. প্রতিদান কবিতায় অনিষ্টকারীর উপকার করার কথা বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: ভালোবাসাপূর্ণ সুন্দর পৃথিবী নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা থেকেই ‘প্রতিদান’ কবিতার অনিষ্টকারীর উপকার করতে বলা হয়েছে।
‘প্রতিদান' কবিতায় ক্ষুদ্র স্বার্থকে পরিহার করে বৃহৎ স্বার্থের কথা ভাবা হয়েছে। তাছাড়া সমাজে বিদ্যমান হানাহানি-মারামারির পথ পরিহার করে ভালোবাসা, ক্ষমা, উদারতার পথ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
কবি মনে করেন, ভালোবাসাপূর্ণ মানুষই পৃথিবীকে সুন্দর করতে পারে। সেক্ষেত্রে অনিষ্টকারীকে ক্ষমা করে দিয়ে তার দিকে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে ।
প্রশ্ন-১২. কবি কেন ক্ষুদ্র স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার কথা বলেছেন?
উত্তর: ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সুখ ও সার্থকতা নিহিত বলে কবি ক্ষুদ্র স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার কথা বলেছেন ।
বিভেদ, বিদ্বেষ, হিংসা, হানাহানি কখনো মঙ্গল নিয়ে আসে না। প্রীতিময় পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অন্যের প্রতি সদয় হতে হবে।
যে মানুষ শুধু নিজের স্বার্থের কথা ভাবে, সে কখনো প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ করে সমষ্টির জন্য কাজ করাই মানবধর্ম। তাই কবি জীবনকে অর্থবহ করতেই ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার কথা বলেছেন ।
প্রশ্ন-১৩. কবি কিভাবে সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ করতে চেয়েছেন ব্যাখ্যা কর?
উত্তর; কবি ক্ষুদ্র স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার মাধ্যমে সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ করতে চেয়েছেন।
কবি নিজের স্বার্থকে ত্যাগ করে, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে মানবকল্যাণে নিয়োজিত হতে বলেছেন । কবি বিশ্বাস করেন, বিভেদ-হিংসা-হানাহানি নয়, ভালোবাসাই পারে প্রীতিময় পরিবেশ সৃষ্টি করতে। তাই অনিষ্টকারীকে ক্ষমা করে তার কল্যাণের কথা ভাবতে হবে। তবেই সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ সম্ভব।
প্রশ্ন-১৪. প্রতিদান কবিতায় কবি মানবজাতির মূল আদর্শকে তুলে ধরেছেন কিভাবে?
উত্তর: ‘প্রতিদান' কবিতায় কবি ক্ষুদ্র স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরের স্বার্থে কাজ করতে বলেছেন, যা মানবজাতির মূল আদর্শকে তুলে ধরে।
আলোচ্য কবিতায় কবি সমাজে বিদ্যমান বিভেদ-হিংসা-হানাহানিকে দূরে ঠেলে প্রীতিময় পরিবেশ সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। কবি বিশ্বাস করেন, ভালোবাসাপূর্ণ মানুষই পারে পৃথিবীকে সুন্দর করতে। এজন্য অনিষ্টকারীকেও আপন করে নিতে হবে ।
প্রশ্ন-১৫. জীবনের প্রকৃত সার্থকতা কীসে বলে কবি মনে করেন বুঝিয়ে লেখো
উত্তর: কবি মনে করেন, জীবনের প্রকৃত সার্থকতা পরার্থপরতায় ।
মানুষের জীবনের প্রকৃত সুখ ও সার্থকতা তার সৎকর্মের ওপর নির্ভর করে । সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সেবার মন্ত্র দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
অন্যের বিপদের দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানো, সাহায্য করাই মানুষের পরমধর্ম। পৃথিবীর মহান মনীষীদের জীবন পর্যালোচনা করলে এই সত্যই প্রতীয়মান হয়। তাই কবিও মনে করেন, জীবনের প্রকৃত সার্থকতা পরার্থপরতায়।
কবিকে যে পর করেছে তাকে আপন করার জন্য কেঁদে বেড়ান কেন,এর উওর টা বলবেন প্লীজ
দ্বিতীয় প্রশ্নটি হলো আপনার এই প্রশ্ন টি। কাইন্ডলি একটু মিলিয়ে নিবেন।
কবি কেন অনিষ্ট কারীর জন্য দীঘল রজনী জেগে তাকেন এর উওর কোনটা হবে
It was really helpful