৮টি গুরুত্বপূর্ণ বই পড়া গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন গুলো পড়ে নিন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বই পড়া গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বই পড়া গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন
গুরুত্বপূর্ণ বই পড়া গল্পের অনুধাবন |
অনুধাবন স্তরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর-বই পড়া
প্রশ্ন ১। মনোরাজ্যের দান গ্রহণ সাপেক্ষ কেন?
উত্তর: মনোরাজ্যের দান গ্রহণ সাপেক্ষ, কারণ শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না, শিক্ষা নিজে অর্জন করতে হয়।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক শিক্ষাদাতা শিক্ষক বা গুরু এবং শিক্ষাগ্রহীতা ছাত্র বা শিষ্যের দায়িত্ববোধের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না, শিক্ষা অর্জন করতে হয়।
বিদ্যাদাতার ভূমিকা অপেক্ষা বিদ্যাগ্রহীতার ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়। তাঁর সার্থকতা ছাত্রকে শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম করায়।
শিক্ষক ছাত্রকে যে শিক্ষাদান করেন তা যদি ছাত্রের কৌতূহল উদ্রেক না করে, তার বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত না করে, তার মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে না পারে তাহলে সেই শিক্ষা ব্যর্থ।
কারণ যিনি যথার্থ গুরু তিনি শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে মুক্ত ও ব্যক্ত করে তোলেন।
সেই শক্তিবলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তোলে। এক্ষেত্রে নিজের অভিমত বিদ্যা ছাত্রকে তথা গ্রহীতাকে নিজে অর্জন করতে হয়। তাই বলা হয়েছে— মনোরাজ্যের দান গ্রহণ সাপেক্ষ।
প্রশ্ন ২। ‘যে জাতি যত নিরানন্দ সে জাতি তত নির্জীব।'- কেন?
উত্তর : জাতিকে সজীব ও স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে হলে মনের আনন্দময় বিকাশ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তাই মনের আনন্দ হ্রাস পেলে জাতির জীবনীশক্তিও স্থবির হয়ে পড়ে ।
জাতির প্রাণের বিকাশ নাগরিকদের আনন্দময় মানসিক বিকাশের ওপর নির্ভর করে। ভারহীন চিত্ত ও সবল মন বড় বড় স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত।
আনন্দ ছাড়া মনের সে স্বাধীনতা ও সজীবতা মরে যায়। ফলে স্বপ্ন দেখার বদলে নৈরাশ্য ও হতাশা দানা বাঁধে। ক্রমান্বয়ে তা জাতিকেও স্থবিরতায় পর্যবসিত করে। নিরানন্দ জাতি তাই নির্জীব, নিষ্প্রাণ ।
প্রশ্ন ৩। ‘ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়' উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়'- কারণ স্বাস্থ্য অর্জন করতে হয়, আর রোগ ছড়িয়ে যায়।
ডেমোক্রেসির গুরুরা চেয়েছিলেন সবাইকে সমান করতে। ইংরেজি সভ্যতার পাশাপাশি থেকে আমরা তার ভালো গুণগুলোকে আয়ত্ত না করে ধারণ করেছি খারাপ গুণগুলোকে।
ডেমোক্রেসির দোষগুলো আমরা আত্মসাৎ করেছি অবলীলায়। সাহিত্যচর্চার বিষয়টি এক্ষেত্রে অর্জিত হয়নি।
রোগ যেমন সংক্রামক তা ছড়িয়ে যায়, কিন্তু স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিজ প্রচেষ্টায় অর্জন করতে হয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই লেখক প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।
প্রশ্ন ৪। বিদ্যা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরির গুরুত্ব কী?
উত্তর : বিদ্যা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরির গুরুত্ব হলো— লাইব্রেরিতে মানুষ নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই পড়ে যথার্থ বিদ্যা লাভ করতে পারে।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চায় এবং প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরির গুরুত্বের কথা বলেছেন। তিনি লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল হিসেবে অভিহিত করেছেন।
কারণ মানুষ লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ে মনের অসুস্থতা দূর করতে পারে লাইব্রেরিতে গিয়ে খুব সহজেই নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই নির্বাচন, করে পড়া যায়।
এতে মনের বিকাশ সাধিত হয়। সেই সঙ্গে আনন্দ লাভের মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। এ জন্য বিদ্যা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ৫। সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : 'সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত' বলতে বোঝানো হয়েছে, যে-শিক্ষা নিজে স্বচ্ছন্দচিত্তে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে অর্জন করে ।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে ভিতর থেকে মানুষ করে তোলা । যে মানুষ স্কুল-কলেজের শিক্ষাই শুধু নয়, স্বীয় অনুসন্ধিৎসা ও আগ্রহে জ্ঞানের নানা বিষয়ে অবগাহন করেছেন তিনি সুশিক্ষিত।
এই শিক্ষা নিজে নিজে অর্জন করতে হয়। শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। শিক্ষক কেবল শিক্ষার্থীকে পথ দেখাতে পারেন, কৌতূহল বাড়াতে পারেন, বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করতে পারেন; মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিয়ে তাদের জ্ঞান পিপাসাকে বাড়িয়ে তুলতে পারেন।
শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ মনুষ্যত্ব অর্জন করে সমাজের কল্যাণ সাধন করে থাকেন। এ কারণেই সুশিক্ষিত লোককেই লেখক স্বশিক্ষিত বলেছেন ।
প্রশ্ন ৬। গুরুকে উত্তরসাধক বলা হয় কেন?
উত্তর : শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন বলে গুরুকে উত্তরসাধক বলা হয়।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক বই পড়া এবং সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে জীবনকে আলোকিত করার কথা বলেছেন। লাইব্রেরির গুরুত্ব তুলেধরে লেখক প্রকৃত শিক্ষা বিকাশে গুরু-শিষ্যের দায়িত্ব ও সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন।
তাঁর মতে শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদানে নয়, ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে তার বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করেন। ছাত্রকে মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিয়ে তার জ্ঞানপিপাসাকে জ্বলন্ত করতে শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
একজন যথার্থ গুরু তার শিষ্যের অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে মুক্ত এবং ব্যক্ত করে তোলেন। সেই শক্তিবলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তোলে।
গুরু শিষ্যের আত্মাকে এভাবে উদবোধন করেন বলে গুরুকে উত্তরসাধক বলা হয়। কারণ শিষ্যকে নিজের অভিমত বিদ্যা নিজে অর্জন করে বিদ্যার সাধনা করতে হয়।
প্রশ্ন ৭। শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না কেন ?
উত্তর : শিক্ষার ন্যায় অন্তর্লোকের মনোরাজ্যের অর্জন গ্রহণসাপেক্ষ "বিধায় শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না ।
সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত। শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। যিনি যথার্থ গুরু তিনি শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত প্রচ্ছন্ন শক্তিগুলো ব্যক্ত করে তোলেন।
সেই শক্তির বলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তোলে, নিজের অভিমত বিদ্যা নিজে অর্জন করে। বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়। গুরু উত্তরসাধক মাত্র।
প্রশ্ন ৮। 'সাহিত্যের মধ্যে আমাদের জাত মানুষ হবে'- বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে জাতিকে যথার্থ মানুষ হওয়া প্রসঙ্গে লেখক প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।
শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলো সাহিত্যচর্চা। আর বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায় নেই। ধর্মের চর্চা মন্দিরে হয়, মন্দিরের বাইরেও হয়। দর্শনের চর্চা গুহায় হয়, বিজ্ঞানের চর্চা হয় জাদুঘরে।
কিন্তু সাহিত্যের চর্চার জন্য প্রয়োজন লাইব্রেরি। কেননা সাহিত্যচর্চা কারখানাতে হয় না; চিড়িয়াখানাতেও হয় না।
এজন্য আমাদের এ কথা মানতেই হবে 'সাহিত্যের মধ্যে আমাদের জাত মানুষ হবে' অর্থাৎ জাতির সর্ববিধ উন্নতি সাধন হবে। লেখক এ বিষয়টি বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বই পড়া গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বই পড়া গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।