বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর ।
বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর |
বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : সামাজিক অসমতা একটি সার্বজনীন প্রত্যয়। পৃথিবীর শুরু থেকেই প্রতিটি সমাজে সামাজিক অসমতা বিদ্যমান ছিল, এখনও আছে এবং পৃথিবীতে যতদিন মানব সমাজের অস্তিত্ব থাকবে ততোদিন সামাজিক অসমতাও বিদ্যমান থাকবে ।
→ বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার প্রকৃতি : নিম্নে বাংলাদেশের সামাজিক অসমতার প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. দারিদ্র্য ও সামাজিক অসমতা : দারিদ্র্য বাংলাদেশের জন্য অভিশাপস্বরূপ। এদেশের অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। দেশের এই দৈন্যদশা হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি। যুগ যুগ ধরে এ ভূ-খণ্ড বিদেশি শক্তির শাসন-শোষণ এবং কর্তৃত্বাধীনে ছিল ফলে এখানকার সমাজ উন্নয়ন ও পরিবর্তনে কেউ মনোনিবেশ করেনি। উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর একটা অংশ পাচার হয়ে গেছে। ফলে দেশে সৃষ্টি হয়েছে দারিদ্র্য।
২. লিঙ্গ, বয়স ও সামাজিক অসমতা : বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। আর বাকি অর্ধেকের মধ্যে প্রায় অর্ধেক বৃদ্ধ ও শিশু। আমাদের দেশের এই বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা সামাজিক অসমতার প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে সৃষ্টি করেছে সামাজিক অসমতার।
যে পরিবারে মোট সদস্যদের মধ্যে কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা কম সে পরিবার সমাজের নীচু স্তরে অবস্থান করে আবার যে পরিবারে নারী সদস্য সংখ্যা বেশি সে পরিবারটিও সমাজের নীচু স্তরে অবস্থান করে।
৩. ক্ষমতা ও সামাজিক অসমতা : ক্ষমতা আমাদের দেশের সামাজিক অসমতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান তাঁর এক গবেষণা প্রবন্ধে দেখিয়েছেন যে, বাংলাদেশের ক্ষমতার ভিত্তিতে তিনটি শ্রেণি রয়েছে।
যথা- শাসক বা ক্ষমতাবান শ্রেণি, শাসিত বা সাধারণ জনগণ এবং শাসক ও শাসিতের মধ্যে তৃতীয় একটি শ্রেণি যারা টাউট নামে পরিচিত। এই টাউটদের সম্পত্তি ও খ্যাতি অপরিহার্য নয়। এরা অনায়াসেই সমাজের সাধারণ . মানুষের চেয়ে সামাজিক সুযোগ-সুবিধা বেশি ভোগ করে থাকে ।
৪ . মর্যাদা ও সামাজিক অসমতা : আমাদের দেশের সামাজিক অসমতায় মর্যাদা গোষ্ঠী বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের দেশের অনেক লোক রয়েছে যাদের পূর্ব পুরুষরা নামী- দামী বংশের ছিল কিন্তু এখন সম্পত্তি ও প্রতিপত্তি পূর্বের মতো না থাকলেও সে সমাজের সুযোগ-সুবিধা পূর্বের মতোই ভোগ করে যাচ্ছে। এতে সমাজের মধ্যে দিন দিন অসমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫. সামাজিক ভূমিকা ও সামাজিক অসমতা : সামাজিক অসমতাই সামাজিক ভূমিকাকে বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক গতিশীলতাও সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক নিম্ন মর্যাদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও মেধা, দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে সমাজের বিশেষ অবস্থায় নিতে সক্ষম হয়েছে।
যার পক্ষে বিশেষ অবস্থায় উপনীত হওয়া সক্ষম হচ্ছে, সে সমাজের অপরাপর সদস্যদের থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে ।
৫. সামাজিক ভূমিকা ও সামাজিক অসমতা : সামাজিকঅসমতাই সামাজিক ভূমিকাকে বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক গতিশীলতাও সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক নিম্ন মর্যাদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও মেধা, দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে সমাজের বিশেষ অবস্থায় নিতে সক্ষম হয়েছে।
যার পক্ষে বিশেষ অবস্থায় উপনীত হওয়া সক্ষম হচ্ছে, সে সমাজের অপরাপর সদস্যদের থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।
৬. শিক্ষা, পেশা, আয় ও সামাজিক অসমতা : আমাদের দেশের শিক্ষার হার বৃদ্ধির সাথে সাথে পেশাগত শ্রেণির বিকাশ হচ্ছে। নানাবিধ পেশাগত শ্রেণির আয়ের তারতম্য সামাজিক অসমতা সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার পেশাগত বিভাজন সৃষ্টি করে দক্ষ-অদক্ষ জনগোষ্ঠীর সৃষ্টি করে থাকে ।
দক্ষ জনগোষ্ঠী সমাজে বিশেষ স্থান দখল করে নিচ্ছে এবং অদক্ষ জনগোষ্ঠীর চেয়ে বেশি অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে। ফলে সমাজে মানুষে মানুষে বৈষম্য দেখা যায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পূর্ব-থেকেই বিভিন্নভাবে মানুষে মানুষে বৈষম্যে বিদ্যমান ছিল । দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বিভিন্ন বৈদেশিক শক্তির শাসন ও শোষণই সামাজিক অসমতা সৃষ্টির জন্য বিশেষভাবে দায়ী ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাংলাদেশে সামাজিক অসমতার ধরন আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।