রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কেন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কেন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কেন
স্যার রক্তের প্রকারভেদ ও গ্রুপ আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, 'রক্তদান একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা'।
ক. রক্ত কী?
খ. রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কেন?
গ. স্যারের আলোচনাটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. স্যারের উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. রক্ত হলো এক প্রকার অস্বচ্ছ, মৃদু ক্ষারীয় এবং লবণাক্ত তরল যোজক কলা।
খ. আঘাত, দুর্ঘটনা, শল্য চিকিৎসা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলে রোগীর দেহে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে ।
জরুরি ভিত্তিতে এই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য রোগীর দেহে অন্য ব্যক্তির রক্ত দিতে হয়।
এক্ষেত্রে রোগী এবং দাতার রক্তের গ্রুপ ও প্রকৃতি না জানা থাকলে রক্তকণিকা জমাট বাঁধা, বিশ্লিষ্ট হওয়া, জন্ডিসের প্রাদুর্ভাব ও প্রস্রাবের সাথে হিমোগ্লোবিন নির্গত হওয়া ইত্যাদি নানা জটিলতায় রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে। তাই রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন ।
গ. উদ্দীপক অনুসারে স্যারের আলোচনাটি ছিলো রক্তের প্রকারভেদ ও রক্তের গ্রুপ সম্পর্কিত।
রক্ত হচ্ছে ঈষৎ ক্ষারীয়, তরল যোজক কলা যা সাধারণত রক্তরস ও রক্তকণিকা নামক দুটি অংশে বিভক্ত। রক্তের হলুদ বর্ণের তরল অংশ হলো রক্তরস এবং রক্তকোষগুলো হলো রক্তকণিকা। রক্তকণিকা মূলত তিন প্রকারের হয়ে থাকে।
যেমন— লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং অণুচক্রিকা । শ্বেত রক্তকণিকা আবার দুই ধরনের, যথা— অদানাদার কণিকা এবং দানাদার কণিকা।
অদানাদার শ্বেত রক্তকণিকাগুলো হলো লিম্ফোসাইট ও মনোসাইট এবং দানাদার শ্বেত রক্তকণিকাগুলো হলো নিউট্রোফিল, ইউসিনোফিল ও বেসোফিল। এছাড়া রক্তে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মানুষের রক্তকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা যায়, একে রক্তগ্রুপ বলে।
বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০১ সালে মানুষের রক্তকে A, B, O এবং AB এই চারটি গ্রুপে বিভক্ত করেন। 'গ্রুপ-A' শ্রেণির রক্তে A অ্যান্টিজেন ও b অ্যান্টিবডি থাকে। অপরপক্ষে, 'গ্রুপ-B' শ্রেণির রক্তে B অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি থাকে।
আবার, 'গ্রুপ-AB' শ্রেণির রক্তে A ও B উভয় অ্যান্টিজেন থাকে কিন্তু কোনো 'অ্যান্টিবডি থাকে না এবং 'গ্রুপ O' শ্রেণির রক্তে কোনো অ্যান্টিজেন থাকে না, কিন্তু a ও b উভয় অ্যান্টিবডি থাকে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত স্যারের উক্তিটি হলো- 'রক্তদান একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা' । নিচে তা মূল্যায়ন করা হলো-
আকস্মিক দুর্ঘটনা, শল্য চিকিৎসা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে অত্যাধিক রক্তক্ষরণ হলে দেহে রক্তের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য ঐ ব্যক্তির দেহে রক্ত সংযোজন করতে হয়। জরুরি ভিত্তিতে এই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য রোগীর দেহে অন্য মানুষের রক্ত দিতে হয়।
তবে কোনো অবস্থাতেই রোগীর রক্তের গ্রুপ ও প্রকৃতি পরীক্ষা না করে রোগীর দেহে অন্য কোনো ব্যক্তির রক্ত প্রবেশ করানো উচিত নয়।
ব্যতিক্রম হলে নানা জটিলতা হয়ে রোগী মারা যেতে পারে। এ সকল কারণে জরুরি ও মুমূর্ষু রোগীকে রক্তদান করে তার জীবন বাঁচানো সত্যিই মহৎ কাজ। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে রক্তদানে রক্ত দাতার কোন ক্ষতি হয় না।
একজন সুস্থ মানুষের দেহে প্রতি সেকেন্ডে ২০ লক্ষ লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হয়। এছাড়া দেখা গেছে একজন সুস্থ ব্যক্তি চার মাস অন্তর রক্তদান করলে দাতার দেহে সামান্যতম কোনো অসুবিধা সৃষ্টি হয় না।
আবার যেহেতু রক্তের কোন বিকল্প নেই এবং জরুরি অবস্থায় অনেক মুমূর্ষু রোগীর প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়, তাই এমন অবস্থায় রক্তদান করে তাদের জীবন বাঁচানো যেমন মহৎ কাজ, তেমনি এটি আমাদের সকলের জন্য একটি সামাজিক দায়বদ্ধতাও বটে । তাই বলা যায়, ‘রক্তদান একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা'- উক্তিটি যথার্থ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কেন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম রক্তের গ্রুপ জানা প্রয়োজন কেন যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।